শনিবার, ১২ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

ডাকসু নির্বাচনের উদ্যোগ

কোনো অজুহাতে যেন থেমে না যায়

দীর্ঘ ২৮ বছর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের উদ্যোগ নিঃসন্দেহে একটি আশাজাগানিয়া ঘটনা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ইতিমধ্যে ডাকসুর ২১ বছরের পুরনো গঠনতন্ত্র সংশোধনে কমিটি গঠন করেছে। ক্যাম্পাসে সক্রিয় ১৩টি ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে এ বিষয়ে কমিটির বৈঠকও হয়েছে। স্মর্তব্য, শুধু ডাকসু নয়, ২৮ বছর ধরে দেশের কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হচ্ছে না। একসময় মিনি পার্লামেন্ট হিসেবে পরিচিত ডাকসুর সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯০ সালের ৬ জুন। তার আগে সামরিক শাসকদের আমলেও ডাকসুসহ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র সংসদ নির্বাচনের নজির রয়েছে। ১৯৯০ সালে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশ সামরিকতন্ত্র থেকে গণতান্ত্রিক শাসনের নতুন সোপানে পা রাখলেও অদৃশ্য কারণে রুদ্ধ হয়ে যায় ছাত্র সংসদ নির্বাচন। যে ছাত্রসমাজ নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে তাদের গণতন্ত্রচর্চা ও প্রতিনিধি নির্বাচিত করার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয় গণতান্ত্রিক শাসনামলেই! ছাত্র সংসদ নির্বাচন না হওয়ায় জাতীয় ক্ষেত্রে যোগ্য নেতৃত্বের সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। রাজনীতির প্রতি দায়বদ্ধ নেতৃত্বের বদলে আর্থিক পেশিশক্তির অধিকারীরা রাজনৈতিক অঙ্গনে উড়ে এসে জুড়ে বসার সুযোগ পাচ্ছে। শিক্ষাঙ্গনে জ্ঞানার্জনের মূল ধারণাও উপেক্ষিত হচ্ছে দুর্ভাগ্যজনকভাবে। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ছাত্র-শিক্ষকের পারস্পরিক সহযোগিতায় পরিচালিত হওয়ার কথা থাকলেও তা চলছে ছাত্রদের প্রতিনিধিত্ব ছাড়াই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটে পাঁচজন ছাত্র প্রতিনিধি থাকার কথা থাকলেও ২৮ বছর ধরে সেখানে শূন্যতা বিরাজ করছে। ছাত্র সংসদ নির্বাচন না হওয়ায় ছাত্রনেতাদের মধ্যে দায়বোধের ব্যত্যয় ঘটছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ বা ডাকসু নির্বাচনের প্রস্তুতি নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক ঘটনা। তবে শুধু নির্বাচনের আয়োজন নয়, সব ছাত্র সংগঠনের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাসহ সে নির্বাচনে যাতে ছাত্রদের মতামত প্রতিফলিত হয়, সে বিষয়টিও নিশ্চিত করা দরকার।

ডাকসু নির্বাচন কোনো অজুহাতে থেমে থাকবে না-আমরা এমনটিই দেখতে চাই।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর