শনিবার, ১২ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

নবীজির দরুদ পড়ে রহমতের ছায়ায় থাকি

মাওলানা সেলিম হোসাইন আজাদী

নবীজির দরুদ পড়ে রহমতের ছায়ায় থাকি

এ বিশ্বচরাচর সৃষ্টি হয়েছে যাঁর জন্য তিনি আর কেউ নন। তিনি হলেন আমাদের একান্ত আপনজন আমাদের প্রেমের নবী প্রাণের স্পন্দন। মুহাম্মদ তার নাম। হাদিসে কুদসিতে আল্লাহ বলেন, ‘হে আমার প্রেমিক মুহাম্মদ! খুব ভালো করে শোনো, শুনিয়ে দিও দুনিয়ার মানুষকেও। যদি আমি তোমাকে সৃষ্টি না করতাম, তাহলে আমি কিছুই সৃষ্টি করতাম না।’ শুধু তাই নয়। আল কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘হে নবী! আমি তোমাকে সৃষ্টিকুলের জন্য রহমত করে পাঠিয়েছি।’ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  দুনিয়ায় যেমন আমাদের জন্য রহমত তেমন আখেরাতেও তিনি আমাদের জন্য রহমত। তাঁর রহমতের চাদরের নিচে আমরা জায়গা করে নিতে পারব যদি আমরা বেশি বেশি তাঁর ওপর দরুদ ও সালাম পেশ করতে পারি। সূরা আহজাবের ৫৬ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘ওহে তোমরা যারা ইমান এনেছ, জেনে রাখো! আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতারা নবীর ওপর দরুদ পড়েন। তোমরাও তাঁর ওপর দরুদ সালাম পড়।’ হাদিসে কুদসিতে আল্লাহ বলেন, ‘হে নবী! আপনার কোনো উম্মত যদি আপনার ওপর একবার দরুদ পড়ে, তাহলে আমি তার ওপর ১০টি রহমত নাজিল করি। তার মর্যাদা ১০ গুণ বাড়িয়ে দিই। তার ১০টি গোনাহ ক্ষমা করে দিই।’ সাহাবি হজরত আবদুর রহমান বিন আওফ (রা.) বলেন, একদিন আমি রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে একটি বাগানে ঢুকতে দেখি। তিনি বাগানের ভিতরে ঢুকে গেলেন। তারপর মাথা ঝুঁকিয়ে সিজদা করলেন। সে এক দীর্ঘ সিজদা। সময় বাড়তে থাকে কিন্তু রসুলের সিজদা শেষ হয় না। একসময় আমার মনে একটি ভয় দানা বাঁধে। আমার মনে হলো, সিজদার ভিতরেই হয়তো তিনি মারা গেছেন। আমি ভীষণ ভয় পেয়ে যাই। দীর্ঘ সময় পর তিনি মাথা তুললেন। তিনি আমার কাছে এসে বললেন, তোমাকে ভয়ার্ত দেখাচ্ছে কেন আবদুর রহমান? আমি বললাম, হে রসুলুল্লাহ! আপনার দীর্ঘ সিজদা দেখে আমি ভেবেছিলাম, হয়তো সিজদার মাঝেই আপনি মারা গেছেন। তাঁর মুখে তখনো হাসি লেগে ছিল। তিনি বললেন, তেমন কিছুই নয়। তুমি জেনে আনন্দিত হবে এই মাত্র আমার প্রভু আমাকে যা বলেছেন তা শুনে।  আমার প্রভু বলেছেন, কেউ যদি আমার ওপর দরুদ পাঠ করে তাহলে আল্লাহর পক্ষ থেকে তাকে রহমত-বরকত ও শান্তির ওয়াদা করা হয়েছে। এজন্যই আমি দীর্ঘ সিজদা করে আমার পরম প্রেমময় প্রভুর কৃতজ্ঞতা জানিয়েছি। মুসনাদে আহমাদ ও মুসতাদরাক আল হাকেম।

আসুন, আমরা সবসময় সব অবস্থায় রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর দরুদ ও সালাম পাঠ করি। দুনিয়া ও আখেরাতে শান্তি-কল্যাণ ও মুক্তি নিশ্চিত করি।

লেখক : বিশিষ্ট মুফাস্‌সিরে কোরআন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব। চেয়ারম্যান : বাংলাদেশ মুফাস্‌সির সোসাইটি।

              www.selimazadi.com

সর্বশেষ খবর