সোমবার, ১৪ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

গার্মেন্ট অসন্তোষ

সমস্যা নিরসনের উদ্যোগ নিন

গার্মেন্ট শিল্পের অস্থিরতা দেশের অর্থনীতিই শুধু নয়- বড় মাপে শান্তিশৃঙ্খলার জন্যও হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। যে শিল্পের সঙ্গে ৪০ লাখেরও বেশি শ্রমিকের জীবন-জীবিকা জড়িত, সে শিল্পে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে লাগাতার বিক্ষোভের ঘটনায়। ইতিমধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে। কর্মসংস্থান ও রপ্তানির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে যে গার্মেন্ট শিল্প, সেখানে ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি সৃষ্টি হোক তা শ্রমিক কিংবা মালিক কারোরই কাম্য হওয়া উচিত নয়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি শ্রমিকদের জন্য যে নতুন মজুরি কাঠামো ঘোষণা করা হয়েছে, তাতে শুভঙ্করের ফাঁকি থাকায় অসন্তুষ্টি দানা বেঁধে উঠেছে। মালিকপক্ষ অবশ্য সপ্তাহব্যাপী অসন্তোষ থামাতে শ্রমিকদের অভিযোগগুলো সুরাহার আশ্বাস দিয়েছেন। শ্রম মন্ত্রণালয়ও এ বিষয়ে এগিয়ে এসেছে। শুভবুদ্ধি উদয়ের এ ঘটনা অবশ্যই অভিনন্দনযোগ্য। তবে গার্মেন্ট শিল্পের শান্তিশৃঙ্খলার স্বার্থেই সব পক্ষকে সুবুদ্ধি ও সুবিবেচনার গুণাবলি অর্জন করতে হবে। নতুন মজুরি কাঠামো নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে, তার কারণ এতে অদক্ষ শ্রমিকরা লাভবান হলেও কোনো কোনো ক্ষেত্রে দক্ষ শ্রমিকদের আয় কমেছে। শ্রমিকদের মূল বেতন না বাড়িয়ে বাসা ভাড়া ও অন্যান্য খাতে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির ফলে ওভারটাইমের ক্ষেত্রে তারা কার্যত ঠকছে। ইতিমধ্যে শ্রমিক বিক্ষোভের কারণে বিপুলসংখ্যক পোশাক কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। শ্রমিকদের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের কলকাঠিও নাড়ছে রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো কোনো মহল। বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের প্রতিদ্বন্দ্বী যারা তারাও যে ইন্ধন জোগাচ্ছে না তা বলার জো নেই। এ পরিস্থিতি অবশ্যই অনাকাক্সিক্ষত এবং আমাদের বিশ্বাস পোশাক শিল্পের বৃহত্তর স্বার্থেই শ্রমিকদের ন্যূনতম স্বার্থের ব্যাপারে সব পক্ষকে অবশ্যই উদার হতে হবে। ৪০ লাখেরও বেশি শ্রমিকের গার্মেন্ট খাতের অস্থিরতা সরকারের জন্যও অস্বস্তিকর। এ বিষয়টি মনে রেখে যেসব কারণে অসন্তোষ ঘটতে পারে তা এড়াতে সরকারকেও সতর্ক থাকতে হবে। আমরা আশা করব পোশাক শ্রমিকদের অসন্তোষ নিরসনে সরকারের পক্ষ থেকে যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তা সফল হবে। নিজেদের স্বার্থের কথা মনে রেখেই অসন্তোষ নিরসনে মালিক পক্ষের সদিচ্ছার প্রতিফলন ঘটবে এমনটিই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর