শনিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

বন্ধ হোক বাল্যবিয়ে

অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর হতে হবে

বাল্যবিয়ে আইনত নিষিদ্ধ এবং এটি একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। দেশের আইন অনুয়ায়ী বিয়ের ন্যূনতম বয়স বরের ক্ষেত্রে ২১ এবং কনের ১৮। এর চেয়ে কম বয়সে বিয়ে হলে তা বাল্যবিয়ে বলে বিবেচিত হয় এবং আইনের দৃষ্টিতে অপরাধের শামিল। তার পরও বাল্যবিয়ের লজ্জা জাতির ঘাড় থেকে কিছুতেই নামছে না। নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের অগ্রগতি চোখে পড়ার মতো। ২৮ বছর ধরে দেশের সরকারপ্রধান ও বিরোধী দলের শীর্ষে ঘুরেফিরে নারী নেত্রীদের অবস্থান সত্ত্বেও নিরাপত্তার কারণে গ্রামগঞ্জের বাবা-মায়েরা তাদের কন্যাসন্তানদের অল্প বয়সে বিয়ে দিতে বাধ্য হন। বাংলাদেশের সমাজে মোল্লাতন্ত্রের আধিপত্যও বাল্যবিয়ে নামের অভিশাপ জিইয়ে থাকার জন্য দায়ী। নিউইয়র্কভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন এইচআরডব্লিউ তাদের বৈশ্বিক প্রতিবেদনে বলেছে, বাল্যবিয়ের দিক থেকে বাংলাদেশ এখনো শীর্ষস্থানীয় দেশগুলোর একটি। বাল্যবিয়ে বন্ধে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের সদিচ্ছা সত্ত্বেও এ অভিশাপ থেকে কিছুতেই রেহাই পাওয়া যাচ্ছে না। দেশের এমন কোনো এলাকা নেই যেখানে ঘটছে না বাল্যবিয়ে। বাল্যবিয়ে রোধে যেমন আইনগত সুরক্ষা প্রয়োজন তেমন দরকার সামাজিক সচেতনতা। দেশে বাল্যবিয়ের বিরুদ্ধে আইন থাকা সত্ত্বেও তা আগ্রহ্য করা হচ্ছে ঢালাওভাবে। ২০১৭ সালে প্রণীত এ-সংক্রান্ত আইনে বিশেষ ব্যবস্থায় বাল্যবিয়ের সুযোগ রাখায় তা আইন ভঙ্গকারীদের উৎসাহ জোগাচ্ছে। বাল্যবিয়ে রোধে ১৮ বছরের নিচে নারীদের বিয়ের ঘটনাকে অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করার পাশাপাশি যেসব কারণে অভিভাবকরা তাদের কন্যাসন্তানকে অল্প বয়সে বিয়ে দিতে বাধ্য হন, সেগুলোর দিকেও দৃষ্টি দিতে হবে। ইভ টিজিং বা নারীকে উত্ত্যক্ত করার যে ভয়াবহ প্রবণতা সমাজে জিইয়ে আছে তার হাত থেকে কন্যাশিশুকে বাঁচাতে অভিভাবকরা জেনেশুনেই বাল্যবিয়ের বিষপানে তাদের কন্যাদের বাধ্য করেন। বাল্যবিয়ে রোধ করতে হলে বখাটেপনার বিরুদ্ধে সরকার ও সমাজকে কঠোর হতে হবে। এ ধরনের অপরাধ করে কেউ যাতে পার না পায় তা নিশ্চিত করতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর