রবিবার, ২০ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা
ইতিহাস

অসামান্য ব্যক্তিত্ব

মুহাম্মদ বিন তুঘলক সমসাময়িক কালের একজন অসামান্য পুরুষ ছিলেন। তিনি ছিলেন বিজ্ঞ, সাহসী ও উদ্যমী। সিংহাসনে আরোহণের সামান্য পরই তিনি কতকগুলো পরিকল্পনা গ্রহণ করেন এবং সাহসিকতার সঙ্গে সেগুলো বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেন। সিংহাসনে আরোহণের পর থেকে ১৩৩৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি যেসব পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন দুর্ভাগ্যবশত তার কোনোটাই সাফল্যমণ্ডিত হয়নি। এ ব্যর্থতার পরিণতি হিসেবে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তাকে বিভিন্ন বিদ্রোহ ও গোলযোগের মোকাবিলা করতে হয়েছিল। জিয়াউদ্দিন বারানির বর্ণনায় সুলতানের পাঁচটি পরিকল্পনার কথা বর্ণিত হয়েছে যথা- দোয়াবে কর বৃদ্ধি, দেবগিরিতে রাজধানী স্থাপন, তামার নোটের প্রচলন, খোরাসান ও করাচির অভিযান। কিন্তু এই বিজ্ঞ ইতিহাসবিদের বর্ণনা ধারাবাহিকভাবে লিখিত হয়নি। যে ঘটনা তার কল্পনাকে বেশি উদ্দীপ্ত করেছে তার কথাই তিনি প্রথমে বলেছেন। দোয়াবের রাজস্ব বৃদ্ধি তার কল্পনায় প্রথম স্থান অধিকার করলেও তিনি এ কথা বলতে চাননি যে, এটিই প্রথমে সংঘটিত হয়েছিল। সব পরিকল্পনার মধ্যে সর্বাপেক্ষা বিপজ্জনক কুফল দেখা দেয় দোয়াবে কর বৃদ্ধিতে। তাই তিনি একে প্রথমে স্থান দিয়েছেন। মুহাম্মদ বিন তুঘলক অভিজ্ঞ ও অসাধারণ প্রতিভাবান ব্যক্তি ছিলেন। তার পিতার শাসনকালে বরঙ্গল অভিযানে নিযুক্ত থাকার সময় তিনি দাক্ষিণাত্য সমস্যার গুরুত্ব সম্পূর্ণরূপে উপলব্ধি করেছিলেন। সাম্রাজ্যের সব অঞ্চলের মধ্যে দাক্ষিণাত্য ছিল সর্বাপেক্ষা দুর্বল ও বিপজ্জনক। এখানকার হিন্দু সামন্ত রাজারা মুসলিম শাসনের বিরুদ্ধে প্রায়ই বিদ্রোহ ঘোষণা করতেন। দূরত্বের জন্য দিল্লি থেকে দাক্ষিণাত্যে কার্যকরভাবে বিদ্রোহ দমন করা সম্ভব ছিল না। অথচ সাম্রাজ্যের নিরাপত্তার জন্য দাক্ষিণাত্যের বিরোধীদের দমন করা অপরিহার্য ছিল।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর