সোমবার, ২১ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

ছাদ ধসে পড়ার ঘটনা

ঠিকাদার ও তত্ত্বাবধানকারীদের শাস্তি কাম্য

কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ভবনের ছাদ ঢালাইয়ের সময় তা ধসে পড়ার ঘটনা সরকারি নির্মাণ কাজের মান সম্পর্কে বড়মাপে প্রশ্ন সৃষ্টি করেছে। সরকারি যে কোনো ভবন মানসম্মতভাবে নির্মাণের জন্যই বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু লুটেপুটে খাই নীতির জন্য নির্মাণের পর সিংহভাগ ক্ষেত্রে তা মানহীনতার উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হয়। মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মতো প্রতিষ্ঠান যেখানে প্রতিদিন হাজার হাজার শিক্ষার্থী, রোগী এবং তাদের স্বজনদের পদচারণা করার কথা সেই ভবনের নির্মাণ কাজে কতটা নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহৃত হয়েছে নির্মাণের সময় ছাদ ধসে যাওয়া তারই প্রমাণ। এটিকে কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলার অবকাশ নেই। দেশে সরকারিভাবে যেসব স্কুল-কলেজ, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, হাসপাতালসহ সরকারি ভবন নির্মিত হয়েছে সেগুলোর দিকে তাকালেই প্রমাণিত হবে প্রায় প্রতিটি নির্মাণ কাজে রয়েছে শুভঙ্করের ফাঁকি। ভবন নির্মাণের বছর না ঘুরতেই ফাটল ধরা, পলেস্তারা খসে পড়া সরকারি নির্মাণ কাজের অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিটি সরকারি নির্মাণ কাজের তদারকিতে প্রকৌশলীসহ বিপুলসংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংশ্লিষ্টতা থাকলেও তাদের অনেকেরই লক্ষ্য থাকে পকেট ভরা। যে কারণে বেসরকারি নির্মাণ কাজের পাশাপাশি সরকারি প্রতিষ্ঠানের নির্মিত স্থাপনাকে দাঁড় করালে লজ্জাই শুধু পেতে হবে। কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নির্মাণ কাজের ত্রুটি নিয়ে সারা দেশে হৈচৈ পড়েছে নির্মাণের সময় ছাদ ধসে পড়ার কারণে। এটি না ঘটলে ঠিকাদার এবং নির্মাণ তত্ত্বাবধানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের লুটেপুটে খাই-এর বিষয়াবলি গোপনই থেকে যেত। ছাদ ধসের পর একাধিক তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নিজেদের কর্মতৎপরতার পরিচয় দিয়েছেন। তারা নির্মাণ কাজে অনিয়মের প্রমাণও নাকি পেয়েছেন। আমরা আশা করব শুধু ঠিকাদার নয়, যাদের তত্ত্বাবধানে দেশ ও জনগণকে ফাঁকি দেওয়ার অপকর্ম সংঘটিত হয়েছে তাদের সবাইকে শাস্তির আওতায় আনা হবে। পাশাপাশি দেশের প্রতিটি সরকারি নির্মাণ কাজের মান নিশ্চিত করতে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া যায় সে ব্যাপারেও সরকার উদ্যোগী হবে আমরা এমনটিই দেখতে চাই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর