বৃহস্পতিবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

সরকারি হাসপাতালের চালচিত্র

চিকিৎসা সুবিধা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিন

রাজধানীর সরকারি হাসপাতালগুলোতে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় চিকিৎসা প্রত্যাশীদের ভোগান্তি বাড়ছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদকরা তিনটি গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল পরিদর্শন করে পাঠকদের জন্য যে চিত্র তুলে ধরেছেন তা অপ্রত্যাশিতই শুধু নয়, দুর্ভাগ্যজনক। ক্যান্সার ইনস্টিটিউটের হাসপাতালের মেঝেতে রোগীদের থাকা নিষিদ্ধ করার পর মিলনায়তনের বারান্দা ও সামনের আঙিনায় খোলা আকাশের নিচে ঠাঁই গড়ে তুলেছেন ক্যান্সারে আক্রান্ত মুমূর্ষু রোগীরা। এদের অনেকেই মাসখানেক থেকে শুরু করে এক বছর ধরেও আছেন। প্রতিদিন প্রায় ৩০০ রোগীকে কেমোথেরাপি ও ৩৫০ থেকে ৪০০ জনের মতো রোগীকে রেডিওথেরাপি দেওয়া হয় এই হাসপাতাল থেকে। শয্যা সংকটের কারণে সব রোগীকে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। তাই হাঁটাচলা করতে পারেন এমন রোগীকে থেরাপি দেওয়ার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিকস হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্র বা পঙ্গু হাসপাতালের অবস্থাও তথৈবচ। প্রতি রাতেই রোগীদের কাতরাতে হয় নানা যন্ত্রণায়, হাসপাতালটিতে প্রতি রাতে কিছু সময় পরপর দুর্ঘটনার শিকার হাত-পা ভাঙা রোগী আসতে থাকেন। অথচ এদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য জরুরি বিভাগে রয়েছেন মাত্র দুজন চিকিৎসক, তিনজন নার্স ও একজন ওয়ার্ডবয়। এদের একজন নার্সকেই জরুরি বিভাগের টিকিট কাউন্টার, এক্স-রে কাউন্টারে বসতে হয় এবং আহত রোগীদের ব্যান্ডেজ করার কাজও করতে হয়। হৃদরোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতালেও ঠাঁই নাই ঠাঁই নাই অবস্থা। ৪১৪ শয্যার হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন প্রায় এক হাজার রোগী। প্রতিদিন সহস্রাধিক রোগী চিকিৎসার জন্য আসেন ওই হাসপাতালে। প্রতিদিন ২৫০ থেকে ৩০০ রোগীকে ভর্তি করা হলেও ওই সংখ্যক রোগী প্রতিদিন ছাড়পত্র পান না। মৃত্যু ঝুঁকি বেশি থাকায় কর্তৃপক্ষ শয্যা না থাকা সত্ত্বেও রোগী ভর্তি করতে বাধ্য হন। রাজধানীর সরকারি হাসপাতালগুলোতে শয্যার চেয়ে রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় চিকিৎসার ক্ষেত্রে সৃষ্টি হচ্ছে সংকট। রোগীর অনুপাতে চিকিৎসক ও নার্সের সংখ্যা কম হওয়ায় সুচিকিৎসার শর্ত লঙ্ঘিত হচ্ছে। এ অবস্থার অবসানে সরকারি হাসপাতালগুলোতে শয্যাসহ সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির দিকে নজর দিতে হবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে।

সর্বশেষ খবর