শুক্রবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

বিমান বিসংবাদ

লিজের হোতাদের দায় নির্ধারণ করুন

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে মিসরের ইজিপ্ট এয়ার থেকে লিজে আনা দুটি উড়োজাহাজ। ২০১৪ সালে পাঁচ বছরের জন্য লিজে আনা দুটি বোয়িং ৭৭৭-২০০ ইআর উড়োজাহাজের জন্য প্রতি মাসে ১০ কোটি টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। এ লোকসানের পাশাপাশি বিমান ভুগছে বৈমানিক সংকটে। বিমানের স্বার্থে নয়, ব্যক্তিস্বার্থ উদ্ধারে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে বারবার পরিবর্তন আনা হয়েছে এমন অভিযোগও উঠেছে। ২০১৪ সালে বিমান যখন ইজিপ্ট এয়ারের দুটি উড়োজাহাজ লিজ নেয় তখনই এর উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। কিন্তু সব সমালোচনা পাশ কাটিয়ে বিমানের মহাক্ষমতাশালী কর্তাব্যক্তিরা লিজ চুক্তিতে আবদ্ধ হন বোধগম্য কারণে। এমন চুক্তি তারা করেন যার শর্ত ছিল উড়োজাহাজ দুটি যাত্রী পরিবহন করুক আর না করুক, উড়োজাহাজপ্রতি মাসে ৫ লাখ ৮৫ হাজার ডলার বা ৪ কোটি ৭০ লাখ ১৬ হাজার টাকা ভাড়া দিতে হবে। বহন করতে হবে সব ধরনের রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়। পাঁচ বছর আগে চুক্তি বাতিল করতে পারবে না বিমান। বিমানবহরে যুক্ত হওয়ার এক বছর পরই লিজে আনা বোয়িং ৭৭৭-২০০ উড়োজাহাজের একটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। পরে ইজিপ্ট এয়ার থেকে প্রতি মাসে প্রায় ৮ লাখ টাকায় ভাড়ার ইঞ্জিন নিয়ে সচল করা হয় উড়োজাহাজটি। নষ্ট ইঞ্জিনটি মেরামতের জন্য পাঠানো হয় লন্ডনভিত্তিক ইউনাইটেড এয়ারলাইনসে। সেই ইঞ্জিন মেরামত করে ফেরত আনার আগেই তিন বছরের মাথায় আবারও নষ্ট হয় ইঞ্জিন। লিজ নেওয়ার সময় যে অবস্থায় উড়োজাহাজ দুটি নেওয়া হয়েছিল সে অবস্থায় ফেরত দেওয়ার শর্ত থাকায় বিমান পড়েছে বিপাকে। এ বিষয়ে গত ২৯ আগস্ট পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের জন্য বিমান আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করে। লক্ষ্য একটাই যেভাবেই হোক লিজের আপদ থেকে রক্ষা পাওয়া। বিমানের এ সিদ্ধান্তটি অভিনন্দনযোগ্য। কিন্তু যাদের কারণে বিমান একটি বাজে চুক্তিতে জড়িয়ে পড়েছিল তাদের দায় নির্ধারণেরও উদ্যোগ নেওয়া দরকার। জাতীয় পতাকাবাহী এ প্রতিষ্ঠানটি যথেচ্ছতার উদাহরণ বলে বিবেচিত হবে তা কাম্য হওয়া উচিত নয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর