রবিবার, ২৭ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

জাতীয় ঐক্যের ডাক

প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান সময়োপযোগী

জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুনিয়ার সব দেশেই মতপার্থক্য যেমন মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে তেমন সাময়িকভাবে হলেও বাসা বাঁধার সুযোগ পায় বিভেদের উপাদান। পক্ষে-বিপক্ষের এ লড়াই চলে ব্যক্তি বা দলবিশেষকে জয়ী করার জন্য। নাগরিকদের পাল্লাপাল্লির লক্ষ্যও থাকে তাই। কিন্তু নির্বাচন শেষে পক্ষে-বিপক্ষের সবাইকে এক হতে হয় জাতি পুনর্গঠনের জন্য। ভুলে যেতে হয় নির্বাচনকালীন বিভেদ-বিসংবাদের কথা। নির্বাচনে যিনি জয়ী হন তাকে ভাবতে হয় তিনি দলবিশেষ নন, জনগণের সব অংশের প্রতিনিধি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে সংগত কারণেই বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছেন। বলেছেন, আমাদের ঐক্যের যোগসূত্র হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, অসাম্প্রদায়িকতা, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, সাম্য ও ন্যায়বিচার এবং উন্নয়ন ও অগ্রগতি। প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, সরকারের দৃষ্টিতে দলমতনির্বিশেষে দেশের সব নাগরিককে সমানভাবে দেখা হবে। বিজয়ী দল হিসেবে সরকার গঠন করলেও তারা সবার জন্য কাজ করবেন। জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বিরোধী দলের নির্বাচিত এমপিদের শপথ নিয়ে সংসদে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতীয় সংসদ হবে সব সিদ্ধান্ত গ্রহণের কেন্দ্রবিন্দু। একাদশ সংসদে বিরোধী দলের সদস্যসংখ্যা কম হলেও তারা সংখ্যা দিয়ে তাদের বিবেচনা করবেন না। সংখ্যা যত কমই হোক, সংসদে যে কোনো সদস্যের ন্যায্য ও যৌক্তিক প্রস্তাব, আলোচনা-সমালোচনার যথাযথ মূল্যায়ন করা হবে। দেশবাসীর উদ্দেশে নির্বাচনোত্তর বেতার ও টিভি ভাষণে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় ঐক্যের যে ডাক দিয়েছেন তা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। নির্বাচনে ব্যক্তি বা দলবিশেষের জয়-পরাজয় হয়, কিন্তু ১৬ কোটি মানুষের যে জাতির আমরা অংশ সে সত্তা অপরাজেয়। দেশের স্বার্থে নির্বাচনের সময় সৃষ্ট ভেদাভেদ ভুলে যেতে হবে। গণরায় মেনে নিয়ে সংসদে সরকার ও বিরোধী দল উভয় পক্ষকে জনগণের হয়ে কথা বলতে হবে। আকারে ক্ষুদ্র হলেও সংসদে বিরোধী দলকে যথাযথ মর্যাদা দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও সময়োপযোগী এবং প্রশংসার দাবিদার। আমরা চাই- কথা নয়, এটি কার্যক্ষেত্রেও অনুসৃত হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর