সোমবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

দুর্নীতির রাজা ভূমি অফিস

জবাবদিহিতার উদ্যোগ প্রশংসাজনক

মাছের রাজা ইলিশ আর দুর্নীতির রাজা ভূমি অফিস। ভূমি অফিস সম্পর্কে যাদের ন্যূনতম ধারণা রয়েছে তারা এ অভিধার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করবেন বলে মনে হয় না। জমি অধিগ্রহণকে কেন্দ্র করে দুর্নীতি এতটাই সর্বগ্রাসী হয়ে উঠেছে যে, এটিকে মানুষ দেখে অভিশাপ হিসেবে। অধিগ্রহণকৃত জমির ন্যায্য ক্ষতিপূরণ দানে সরকারের কার্পণ্য না থাকলেও সে অর্থের মোটা অংশ যায় আরব্য উপন্যাসের ‘থিপ অব বাগদাদ’ জাতীয় জীবদের পকেটে। বর্তমান সরকারের আমলে ভূমি অধিগ্রহণ বেড়েছে স্পুটনিক গতিতে। সরকারের উন্নয়ন মহাযজ্ঞের সঙ্গে ভূমি অধিগ্রহণের সম্পর্ক নিবিড় হলেও ক্ষতিপূরণের টাকা পাওয়া নিয়ে দুর্নীতির শেষ নেই। বছরের পর বছর ঘুরেও অধিগ্রহণের টাকা হাতে পান না জমির মালিকরা। ভূমি অফিসকেন্দ্রিক দুর্নীতি, জালিয়াতি ও স্বেচ্ছাচারিতার কারণে জমির প্রকৃত মালিকরা দিনের পর দিন হয়রানির শিকার হন। অধিগ্রহণের কারণে সর্বস্ব হারানোর ঘটনাও কম নয়। বর্তমান সরকারের গত দুই আমলে দেশব্যাপী অবকাঠামোগত উন্নয়নের ওপর ভর করে ভূমি অধিগ্রহণ দুর্নীতির বিষবৃক্ষ বিকশিত হয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে ভূমি খাতে ব্যাপক সংস্কারের তাগিদ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। উন্নয়ন বিশেষজ্ঞদের মতে, সুষ্ঠুভাবে জমি অধিগ্রহণ সঠিক সময়ে প্রকল্প বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। অধিগ্রহণ নিয়ে জটিলতা ও ক্ষতিপূরণের অর্থ নিয়ে দুর্নীতির কারণে অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের বাস্তবায়ন বছরের পর বছর আটকে থাকছে। আশার কথা, নতুন ভূমিমন্ত্রী ভূমিসংক্রান্ত অফিসগুলোতে থিপ অব বাগদাদের যে আছর চলছে তার অবসান ঘটাতে নিজের সদিচ্ছার কথা প্রকাশ করেছেন। তিনি ইতিমধ্যে ভূমি অফিস কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির হিসাব ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা আশা করব শুধু হিসাব নেওয়া নয়, অর্জিত সম্পদ কীভাবে অর্জিত হলো সে বিষয়টিও জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে।  অধিগ্রহণ শুধু নয়, প্রতিটি ক্ষেত্রে ভূমি অফিস যাতে জনবান্ধব প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয় সে ব্যাপারেও উদ্যোগ  নেওয়া হবে- আমরা এমনটিই দেখতে চাই।

 

সর্বশেষ খবর