সোমবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিপণন

অপরাধীদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করুন

বিদেশ থেকে আসা মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে প্রকাশ্যেই বিক্রি হচ্ছে। এসব ওষুধ বিপণনের সঙ্গে জড়িত অসৎ ব্যবসায়ীরা বিদেশ থেকে ওষুধ আমদানি করে নিজেরাই মেয়াদ বাড়িয়ে লেবেল লাগায় ওষুধের প্যাকেটে। মূল্যও বাড়ানো হয় যথেচ্ছভাবে। স্বাস্থ্য অধিদফতর ও ওষুধ প্রশাসনেরও এ বিষয়টি অজানা নয়। তবে তারা সতর্ক বার্তা জারি করেই দায়িত্ব সারছে। আর যথারীতি প্রশাসনের সতর্ক বার্তাকে উপেক্ষা করছে অসৎ ব্যবসায়ীরা। ফলে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ব্যবহার করে অনেক রোগী আরোগ্যের বদলে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় পতিত হচ্ছে। জীবনহানির ঘটনাও ঘটছে কখনো কখনো। অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ব্যবহার চরম ঝুঁকির কাজ। এটি জীবন রক্ষার বদলে জীবননাশের হুমকি হয়েও দেখা দিতে পারে। বাংলাদেশ ছাড়া পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ব্যবহারের কথা কল্পনা করাও কঠিন। উন্নত দেশগুলোতে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বাজারজাত করলে কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হতে হয়। বাংলাদেশে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ সীমান্ত ও আকাশপথে পাচার হয়ে আসছে সংঘবদ্ধ চক্রের সহায়তায়। ওষুধ পাচারে বিমানবন্দরের একশ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীও জড়িত। মেয়াদোত্তীর্ণ নিষিদ্ধ ওষুধ প্রতি মাসে জব্দ করা হলেও তা কোথায় যায় ওষুধ প্রশাসন ও ওষুধ শিল্প সমিতি জানে না। উন্নত দেশগুলোতে ওষুধ মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার তিন মাস আগেই বাজার থেকে তুলে নেওয়া হয়। বাংলাদেশে তেমন দায়িত্বশীলতা অকল্পনীয় বিষয়। কোনো কোনো দেশীয় কোম্পানিও বিদেশ থেকে ওষুধ কিনে এনে মেয়াদ বাড়িয়ে দেয়। মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ব্যবসার সিন্ডিকেটের সঙ্গে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের একশ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারী অভিযান চালানোর আগেই তথ্য ফাঁস করে দেয়।  জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বাজারজাতকরণ এবং বেচাকেনার  ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারির উদ্যোগ নেওয়া দরকার।  এ ধরনের অপরাধে সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা থাকাও বাঞ্ছনীয়।

সর্বশেষ খবর