বৃহস্পতিবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

জনশক্তি রপ্তানিতে স্থবিরতা

গতি আনতে উচ্চ পর্যায়ের উদ্যোগ নিন

বিদেশে জনশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে বিদায়ী ২০১৮ সাল একটি হতাশাজনক বছর হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বিদায়ী বছরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৫ লাখ কম কর্মীকে বিদেশে পাঠানো সম্ভব হয়েছে। বিশেষ করে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে সৃষ্ট জটিলতা ও মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমবাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি হওয়ায় জনশক্তি রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হয়েছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে ১২ লাখ কর্মী পাঠানোর লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও কর্মী গেছেন সাড়ে ৭ লাখের মতো। এই সময়ে মালয়েশিয়া ও সৌদি আরব ছাড়া বাকি দেশগুলোয় খুব একটা কর্মী যাননি। গত বছরের শেষ দিকে বন্ধ হয়ে যায় মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। ফলে ২০১৮ সালে তিন বছরের মধ্যে সবচেয়ে কমসংখ্যক কর্মী বিদেশে চাকরি নিয়ে গেছেন। আগের বছর ২০১৭ সালে রেকর্ডসংখ্যক ১০ লাখ ৮ হাজার কর্মী বিভিন্ন দেশে চাকরি পান। আর ২০১৮ সালে বিদেশে চাকরি পেয়েছেন মাত্র ৭ লাখ ৩৪ হাজার ১৮১ জন। সৌদি আরব তাদের দেশে অদক্ষ কর্মী নিয়োগ কমিয়ে দিয়েছে। এ ছাড়া মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে কর্মী নিয়োগ দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। মালয়েশিয়া হঠাৎ করে গত বছরের মাঝামাঝি কর্মী নিয়োগ বন্ধ করে দেয়। এ ছাড়া গত বছর নভেম্বরে সৌদি আরব সরকার প্রবাসীদের জন্য ১২ ধরনের চাকরি বন্ধ ঘোষণা করায় সে দেশের শ্রমবাজার বাংলাদেশিদের জন্য সংকুচিত হয়ে পড়েছে। অর্থনৈতিক মন্দার কারণে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো অদক্ষ শ্রমিক আমদানি প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে। বাংলাদেশ থেকে যারা সৌদি আরবসহ ধারেকাছের দেশগুলোয় কাজ নিয়ে যান, তাদের সিংহভাগ অদক্ষ শ্রমিক। মালয়েশিয়ার মাহাথির সরকার শ্রমিক আমদানি প্রক্রিয়া শতভাগ স্বচ্ছ করতে নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবনের চেষ্টা চালাচ্ছে। ফলে আগের পদ্ধতিতে শ্রমিক নেওয়া প্রায় বন্ধ। জনশক্তি রপ্তানিতে ভাটা সৃষ্টি হওয়ায় তা দেশের রেমিট্যান্স আয়ের ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ জনশক্তি রপ্তানিতে স্থবিরতার পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্য থেকে মেয়াদ শেষে বিপুলসংখ্যক শ্রমিক দেশে ফিরে আসছেন। এ সংকটের অবসানে সরকারকে শ্রমবাজার-সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে উচ্চপর্যায়ে যোগাযোগ বৃদ্ধির উদ্যোগ নিতে হবে।

সর্বশেষ খবর