শুক্রবার, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

বেপরোয়া চাঁদাবাজি

অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর হোন

চাঁদাবাজদের কাছে জিম্মি হয়ে আছে দেশের লাখ লাখ মানুষ। এ জিম্মিদশা থেকে দেশবাসীকে মুক্ত করার ক্ষেত্রে সরকারিভাবে প্রয়াসের অভাব নেই। তবে তার সুফল কাক্সিক্ষত মানে পৌঁছাচ্ছে না। র‌্যাব গঠনের আগে গ্রাম শহরের মানুষ ছিল চাঁদাবাজ নামের মানুষ শকুনদের যথেচ্ছতার শিকার। গত দুই যুগে এই যথেচ্ছতা কমলেও এ ক্ষেত্রে সাফল্য যে আহামরি নয় তা বাংলাদেশ প্রতিদিনের শীর্ষ প্রতিবেদনের দিকে দৃষ্টি দিলেই অনুভূত হবে। এতে বলা হয়েছে, রাজধানীসহ সারা দেশে দেড় শতাধিক খাতে দৈনিক প্রায় ৪০০ কোটি টাকার চাঁদাবাজি ঘটছে। এসব চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িয়ে আছে কয়েক হাজার অপরাধী। নেপথ্যের ইন্ধনদাতা হিসেবে রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একশ্রেণির দুর্নীতিবাজ সদস্য ও ক্ষমতাসীন দলের লোভী নেতা। মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত প্রায় সব ক্ষেত্রেই চলছে চাঁদাবাজির মহোৎসব। চাঁদার দাবি পূরণ না করলে সীমাহীন হয়রানিতে পড়তে হচ্ছে নিরুপায় মানুষকে। রাজধানীর ফুটপাথ থেকে শুরু করে বহুতল ভবন পর্যন্ত সর্বত্রই চলে বেপরোয়া চাঁদাবাজি। পরিবহন, ডিস, ইন্টারনেট প্রোভাইডার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি, কোচিং বাণিজ্যসহ অনিয়ম-দুর্নীতি টিকিয়ে রাখার কাজেও নিয়মিত চাঁদা দিতে হয়। নতুন বসতি গড়তে, বাড়ি নির্মাণে, দোকান বা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান চালু করতে, এমনকি অনেক এলাকায় বিয়েশাদি, সুন্নতে খতনা অনুষ্ঠান করতে হলেও আশপাশের চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটের হাতে চাহিদামাফিক টাকা-পয়সা তুলে দেওয়াটা রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। চাঁদাবাজি দমনে যাদের ভূমিকা থাকার কথা সেখানেও রয়েছে ঘোরতর সংকট। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা অসৎ সদস্যরা নিজেরাও যে চাঁদাবাজিতে যুক্ত এটি একটি ওপেন সিক্রেট। বিশেষ করে লোকজনকে মামলায় জড়ানোর ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অসৎ সদস্যদের জুড়ি নেই। তাদের কারণে সৎ ও নিবেদিতপ্রাণ সদস্যদেরও সুনাম বিঘ্নিত হচ্ছে। রাজধানীর যানজটের অন্যতম কারণ ট্রাফিক পুলিশের এক ক্ষুদ্র অংশের চাঁদাবাজি। চাঁদবাজদের হাত থেকে দেশের মানুষকে রক্ষায় সংশ্লিষ্টদের পরিচয় যাই হোক কঠোর হতে হবে। বিশেষ করে সরকারি দল এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নাম ব্যবহার করে যারা অপকর্মে যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আঘাত হানতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর