সোমবার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

কবরের আজাব খুবই ভয়াবহ

মুহম্মাদ ওমর ফারুক

কবরের আজাব খুবই ভয়াবহ

কবরের আজাব হওয়ার কারণ হচ্ছে দুনিয়ার জীবনে কবিরা গুনাহ বা বড় বড় পাপ কাজে লিপ্ত থাকা। এ গুনাহর জন্য তওবা না করে নিজেকে সংশোধন না করেই মৃত্যুবরণ করা। হাদিসে বিশেষ দুটি কারণ উল্লেখ করা আছে, যে দুটি পাপকে মানুষ ছোট মনে করে কিন্তু অনেককেই এ দুটি পাপ কাজের কারণে আজাব দেওয়া হবে। ১. চোগলখুরি করা, অর্থাৎ একজনের গিবত আরেকজনের কাছে বলে মানুষের মাঝে ঝগড়া-বিবাদ ও হিংসা-বিদ্বেষ সৃষ্টি করা। ২. পেশাবের অপবিত্রতা থেকে সাবধান না থাকা। একদা রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদিনা বা মক্কার কোনো একটি বাগানের পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন। তথায় তিনি দুজন এমন মানুষের আওয়াজ শুনতে পেলেন যাদের কবরে শাস্তি দেওয়া হচ্ছিল। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন : তাদের আজাব দেওয়া হচ্ছে অথচ বড় কোনো অপরাধের কারণে আজাব দেওয়া হচ্ছে না। অতঃপর তিনি বললেন : তাদের একজন পেশাব করার সময় আড়াল করত না। আর দ্বিতীয় ব্যক্তি একজনের কথা অন্যজনের কাছে লাগাত। (বোখারি : কিতাবুল ওযু অধ্যায়)।

কাতাদা (র.) বলেন : আমাদের বলা হয়েছে কবরের আজাবের এক তৃতীয়াংশ হবে গিবতের কারণে, এক তৃতীয়াংশ পেশাব থেকে সাবধান না থাকার কারণে এবং এক তৃতীয়াংশ চুগলখোরির কারণে। যেহেতু গিবতকারী এবং চুগলখোর মিথ্যা কথাও বলে থাকে তাই সে মিথ্যাবাদীর শাস্তিও ভোগ করবে।

প্রথমত, কবরের আজাব থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাওয়া ও দোয়া করা : কবরের আজাব, জাহান্নামের আজাব, দুনিয়ার ফেতনা ও মৃত্যুর সময়ের ফেতনা ও দাজ্জালের ফেতনা থেকে নিরাপদ থাকার জন্য রসুলুল্লাহ (সা.) এগুলো থেকে বাঁচার জন্য ফরজ, নফল বা সুন্নত, যে কোনো সালাতে তাশাহুদ ও দরুদের পরে সালাম ফেরানোর আগে এ দোয়া পড়তে বলেছেন। আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন আজাবিল কাবরি ওয়া মিন আজাবি জাহান্নাম, ওয়ামিন ফিতনাতিল মাহইয়া, ওয়াল মামাতি, ওয়ামিন সাররি ফিতনাতিল মাসীহিদ-দাজ্জাল। অর্থ, হে আল্লাহ! তুমি আমাকে কবরের আজাব থেকে রক্ষা কর, আমাকে জাহান্নামের আজাব এবং দুনিয়ার ফেতনা ও মৃত্যুর ফেতনা এবং দাজ্জালের ফেতনা থেকে রক্ষা কর। (বোখারি ২১০২, মুসলিম ১/৪১২, হিসনুল মুসলিম, পৃষ্ঠা- ৯০)।

দ্বিতীয়ত, পাপ থেকে বিরত থাকা। কবিরা গুনাহ অর্থাৎ বড় বড় পাপকাজ, যেসব পাপের কারণে কোরআন ও সহিহ হাদিসে কঠিন শাস্তির ভয় দেখানো হয়েছে, সেগুলো বর্জন করা ও আল্লাহর বেঁধে দেওয়া ফরজ ও ওয়াজিব হুকুম পালনে যত্নবান হওয়া। (৩. সূরা মুলক)।

প্রতিদিন সূরা মুলক তেলাওয়াত করলে আশা করা যায় আল্লাহর রহমতে কবরের আজাব ও কেয়ামতের দিন শাস্তি থেকে নিরাপদ থাকা যাবে। এ সূরা প্রত্যেক দিন রাতের বেলা তেলাওয়াত করলে কেয়ামতের দিন তা শাফায়াত করে জান্নাতে নিয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।

রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন : কোরআনে এমন একটা সূরা আছে যার মধ্যে ৩০টা আয়াত রয়েছে যেটা একজন ব্যক্তির জন্য সুপারিশ করবে এবং তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে। আর সেটা হলো তাবারাকাল্লাজি বিয়াদিহিল মুলক। (সূরা মুলক)।

লেখক : ইসলামী গবেষক।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর