শুক্রবার, ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

ব্যাংক ঋণ লোপাট

ব্যাংকিং খাতে জবাবদিহি নিশ্চিত করুন

ব্যাংক ঋণ নিয়ে চলছে এলোমেলো করে দে মা লুটেপুটে খাই ঘটনা। ব্যাংকগুলো তাদের কাছে গচ্ছিত গ্রাহকদের অর্থ ব্যবসায়ী বা ঋণ হিসেবে দেয়। এই ঋণের সুদ বা লভ্যাংশই তাদের আয়ের প্রধান উৎস। ব্যাংকে অর্থ সঞ্চয় করার জন্য গ্রাহকদের যে লভ্যাংশ দেওয়া হয় তারও উৎস ব্যাংক ঋণ থেকে পাওয়া সুদ বা লভ্যাংশ। কিন্তু ব্যাংকের অসৎ কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ভুয়া দলিল ও কাগজপত্র মর্টগেজ রেখে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার সুবাদে দেশের বেশির ভাগ ব্যাংকই এখন অস্তিত্বের সংকটে ভুগছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী গত চার দশকে ব্যাংকিং খাত থেকে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা লোপাট করা হয়েছে। এর মধ্যে সিংহভাগই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের। বেসরকারি ব্যাংকেও ভুয়া দলিল ও কাগজপত্র রেখে ঋণ দেওয়ার ঘটনা ঘটছে। এসব ঘটনা জানাজানি হওয়ায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ও শিল্পোদ্যোক্তাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে অবিশ্বাস। লেনদেনের সম্পর্কে ধরছে ফাটল। ফলে প্রকৃত উদ্যোক্তারা বিপাকে পড়েছেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এসব ঘটনার জের ধরে প্রকৃত ঋণগ্রহীতা বা উদ্যোক্তাদেরও সন্দেহের তালিকায় রাখছে ব্যাংকগুলো। বাংলাদেশ ব্যাংকের দুর্বল মনিটরিংয়ের কারণেই ব্যাংক ঋণ লোপাটের ঘটনা ঘটেছে। এ ধরনের প্রতারণা ঠেকাতে না পারলে দেশের ব্যাংকিং খাতে বিপর্যয় অনিবার্য হয়ে উঠবে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ব্যাংক কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ভুয়া কাগজপত্র দাখিল করে ব্যাংক ঋণ নিয়ে আত্মসাতের সুযোগ পায় প্রতারকরা। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সরকারের কর্তাব্যক্তিদের সুপারিশ বা তদবিরে ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বন্ধকী সম্পত্তি অতিমূল্যায়িত করে, ভুয়া এলসি খুলে কিংবা জাল সঞ্চয়পত্র ও এফডিআর বন্ধক রেখেও টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়। ব্যাংক ঋণের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়ে যাওয়ায় প্রকৃত ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের ব্যাংক ঋণ পেতে অসুবিধা হচ্ছে। দেশে শিল্প স্থাপন ও ব্যবসা পরিচালনায় দেখা দিচ্ছে স্থবিরতা; যার অবসানে এখনই লুটেরা চক্রের বিরুদ্ধে সরকারকে কঠোর হতে হবে। নিতে হবে সর্বাত্মক ব্যবস্থা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর