রবিবার, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

জালিয়াত সালেককে ধরুন

সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের উদ্যোগ নিন

টাঙ্গাইলে নির্দোষ নিরীহ পাটকল শ্রমিক জাহালমকে তিন বছর জেলের ঘানি টানতে হয়েছে আবু সালেক নামের এক জালিয়াতের সঙ্গে তার চেহারার মিল থাকায়। দুদকের ডাকসাইটে তদন্ত কর্মকর্তারা আবু সালেকের বদলে হতদরিদ্র অশিক্ষিত এই সহজসরল মানুষটিকে শাস্তিদানের জন্য যেভাবে বেছে নিয়েছিলেন তা দুর্ভাগ্যজনক। আরও দুর্ভাগ্যজনক হলো, দুই ডজনের বেশি মামলায় যারা সরেজমিন তদন্ত করে জালিয়াত আবু সালেকের বদলে নির্দোষ জাহালমকে জেলের ঘানি টানতে বাধ্য করেছেন তাদের সবার শাস্তির বদলে পদোন্নতিও হয়েছে। সোনালী ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনার মূল হোতা আবু সালেক। ২০১০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ব্যাংকটির মিরপুর ক্যান্টনমেন্ট শাখা থেকে তোলা হয়েছিল এসব টাকা। দুদক সালেকের বিরুদ্ধে মামলা করে। কিন্তু ব্যাংকে হিসাব খোলার সময় সালেকের যে ছবি ব্যবহার করা হয়েছিল তার সঙ্গে চেহারার মিল থাকায় কোনো বাচবিচার না করেই ধরা হয় জাহালমকে। প্রায় তিন বছর জেলের ঘানি টানতে হয়েছে তাকে। এ ঘটনা প্রকাশিত হওয়ায় দেশময় সমালোচনার ঝড় ওঠে। জনমনে প্রশ্ন ওঠেÑ জালিয়াত সালেক কোথায়? তার হদিস পাওয়া না গেলেও বিপুল সম্পদের খোঁজ মিলেছে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায়। রাতারাতি কোটি টাকার সম্পদের মালিক বনে যাওয়া সালেক বোদায় হঠাৎ খুলে বসেন স্যামসাংয়ের শোরুম। ব্যাংক জালিয়াতির ঘটনাটি জানাজানি হলে আট মাস আগে সেটি বন্ধ করে দেন। বোদা পৌরসভার প্রামাণিকপাড়ায় প্রায় ২০ শতক জমির ওপর গড়েন এক তলা বিশাল বাড়ি। আগে সেখানে ভাড়াটিয়া থাকলেও এখন সেই বাড়ির গেটে ঝুলছে তালা। স্বজনদের দাবি, এক বছর ধরে তাদের সঙ্গে সালেকের যোগাযোগ নেই। তবে অনেকেরই ধারণা, যথাযথভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সালেক কোথায় সে হদিস মিলবে। দুদকের ভাবমূর্তির স্বার্থেই তারা প্রকৃত অপরাধীকে খুঁজে বের করার বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেবে- এমনটিই দেখতে চায় দেশের মানুষ। পাশাপাশি জালিয়াত সালেকের সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার আইনি উদ্যোগ নেওয়া হবে- এমনটিও প্রত্যাশিত। জাহালমকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যাপারে দুদক স্বউদ্যোগে ব্যবস্থা নিলে তা তাদের ভাবমূর্তির সংকট কাটাতে অবদান রাখবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর