বৃহস্পতিবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

শপথ হোক বিকশিত গণতন্ত্র কায়েমের

শফী আহমেদ

শপথ হোক বিকশিত গণতন্ত্র কায়েমের

আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৩ সালে মধ্য ফেব্রুয়ারিতে স্বৈরাচারী সামরিক জান্তা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজের দুর্বার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ওইদিন শহীদ হয় জয়নাল, জাফর, মোজাম্মেল, কাঞ্চন, আইয়ুব দীপালি সাহাসহ আরও অনেক সাথী। স্বৈরাচারী এরশাদ সেদিন দমন-পীড়ন, গুলিবর্ষণ, লাঠিচার্জ, টিয়ারগ্যাস ইত্যাদির মাধ্যমে চেষ্টা করে স্বৈরাচারবিরোধী  আন্দোলনকে দমন করার জন্য। সেদিন থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারিকে ছাত্রসমাজ পালন করে স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস হিসেবে। বাংলাদেশের জন্মের পর থেকেই এ দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করার জন্য স্বাধীনতার পরাজিত শত্রুরা এবং আন্তর্জাতিক শক্তির সমন্বয়ে ষড়যন্ত্র এবং চক্রান্ত শুরু করে।

এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয় সপরিবারে, জেলখানায় ৩ নভেম্বর জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়। ৭ নভেম্বরের গণঅভ্যুত্থানকে প্রতিবিপ্লবের মাধ্যমে জিয়াউর রহমান সিপাহি জনতার গণঅভ্যুত্থান দমন করে কর্নেল তাহেরকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করে। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পর অনেকটা সাজানো সামরিক অভ্যুত্থানের নামে প্রায় তিন হাজার সেনা কর্মকর্তাকে ফাঁসি দিয়ে হত্যা করা হয়।

এভাবেই বাংলাদেশ চলছিল সামরিক শাসনের মধ্য দিয়ে, ঠিক একইভাবে ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে জিয়াউর রহমান খুন হন সামরিক বাহিনীর হাতেই এবং এর পরপরই চট্টগ্রামের জিওসি মুক্তিযোদ্ধা জেনারেল মঞ্জুরকে হত্যা করা হয় এবং এ মামলায় অনেক সামরিক কর্মকর্তাকে ফাঁসি দিয়ে হত্যা করা হয়। ষড়যন্ত্র এখানেই থেমে থাকেনি। সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষার নামে জিয়া সরকারের উত্তরাধিকার হিসেবে বিচারপতি সাত্তারের সরকার প্রতিষ্ঠিত হয় কিন্তু যে সরকার গঠিত হয়েছিল সে সরকারের ভিত ছিল নড়বড়ে ও নাজুক। মাস তিনেকের মতো সেই সরকার ছিল, কিন্তু তখন বাংলাদেশে একের পর এক নৈরাজ্যকর অবস্থার সৃষ্টি হয়, যা থেকে বোঝা যায় এবং দেশের মানুষ বুঝতে পারে যে আরেকটি সামরিক শাসন অত্যাসন্ন। এসব কিছুর পেছনে কলকাঠি নাড়াচ্ছিলেন এরশাদ।

এরশাদ নিজেকে ক্ষমতায় আনার জন্য, সামরিক শাসন জারির জন্য ও নিজেকে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করার জন্য এ চক্রান্তগুলোর পেছনে মদদ দিয়েছিল বলেই দেশবাসী মনে করে। ’৭৯-র জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে যে সংসদ গঠিত হয়েছিল সেখানে আওয়ামী লীগও খুব অল্প কয়েকটি আসন পেয়েছিল, তৎকালীন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল তাদের কয়েকটি আসন ছিল, ন্যাপ- কমিউনিস্ট পার্টি তাদেরও একটি করে আসন ছিল। স্বতন্ত্রও ছিল কয়েকটি আসন। এ তো ছিল মূলত ছকে সাজানো একটি পার্লামেন্ট নির্বাচন এবং সংসদ। সে সংসদও ছিল খুব নড়বড়ে অর্থাৎ মোটকথা বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গন ছিল একেবারেই দেউলিয়া। এ দেউলিয়া রাজনৈতিক অঙ্গনের সুযোগে এবং একটি ভঙ্গুর সরকারের আমলে আমলাতন্ত্র রাজনীতিতে শূন্যতা সৃষ্টি করে সামরিক বাহিনীকে সামনের দিকে অগ্রসর করে দেয়।

১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ এ দেউলিয়া অবস্থার মধ্যে রক্তপাতহীন একটি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জেনারেল এরশাদ ক্ষমতায় আসেন। এরশাদ ক্ষমতায় এসেই ছাত্রদের ওপর, রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের ওপর, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের ওপর দমননীতি চালাতে থাকে। ছাত্ররা ২৪ মার্চেই তাৎক্ষণিকভাবে কিছুটা প্রতিবাদ করলেও ২৬ মার্চ সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের সময় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাসহ তৎকালীন অন্য নেতৃবৃন্দকে সেখানে নির্যাতন করা হয়। ছাত্র নেতৃবৃন্দকেও নির্যাতন করা হয়। এমতাবস্থায় কয়েকজন ছাত্রনেতাকে গ্রেফতার করা হয়। ইতিপূর্বে শিবলী কাইয়ুমসহ আরও কয়েকজন ছাত্রনেতাকে সামরিক আইনে গ্রেফতার করে।

রাজনৈতিক অঙ্গন আস্তে আস্তে সামরিক শাসকের বিরুদ্ধে সচল হওয়ার চেষ্টা করে এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ছাত্র সংগঠনগুলো ও প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলো মিলে ১০ দলীয় ছাত্রঐক্য নামে একটি জোট গঠন করে এবং তিন দফা দাবি উত্থাপন করে। এর আগে বলে রাখি, এরশাদ ক্ষমতায় আসার পর কুখ্যাত মজিদ খানের শিক্ষানীতি নামে শিক্ষা সংকুচনের সাম্প্রদায়িক শিক্ষা ব্যবস্থার নীতিমালা বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করে। ছাত্রসমাজ-শিক্ষকসমাজ ও দেশবাসী মজিদ খানের শিক্ষানীতি প্রত্যাখ্যান করে। রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে তখন তেমন কোনো জোরালো দাবি না উঠলেও তৎকালীন ছাত্রসমাজ একটি ঐক্যবদ্ধ মোর্চার মধ্য দিয়ে তিনটি দাবির মাধ্যমে প্রতিরোধের ডাক দিয়েছিল। যে তিন দফা দাবির ভিত্তিতে প্রতিরোধের ডাক দেওয়া হয়েছিল সেগুলো ছিল-

১. মজিদ খানের গণবিরোধী শিক্ষানীতি বাতিল,

২. সব ছাত্র ও রাজবন্দীর নিঃশর্ত মুক্তিদান,

৩. সামরিক শাসন প্রত্যাহার করে গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা।

এ তিনটি দাবির ভিত্তিতে ছাত্রসমাজ সংগঠিত হতে থাকে, এর মধ্যে ৩ নভেম্বর জেলহত্যা দিবসে ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করার চেষ্টা করলে পুলিশি দমন-পীড়নের মুখে সেটা ভণ্ডুল হয়ে যায়। তারপর ৭ নভেম্বর জাসদ সমর্থিত ছাত্রলীগ একটি মিছিল বের করলে সেই মিছিলের সঙ্গে পুলিশের হাঙ্গামা হয় এবং সেই মিছিল পুরো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছড়িয়ে পড়ে। সেই মিছিলকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ সেদিন লাঠিচার্জ করে, গুলিবর্ষণ করে ও টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করে। টিয়ার গ্যাসের আঘাতে ও লাঠিচার্জের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষকসহ অসংখ্য ছাত্রছাত্রী আহত হয়। এ ঘটনা সারা দিন চলতে থাকে এবং সন্ধ্যার সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সামরিক সরকারের একটি সমঝোতা হয় যে, পুলিশ বিনা অনুমতিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আর কখনো প্রবেশ করবে না এ শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা শান্ত হয়।

তিন দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ ১১ জানুয়ারি ১৯৮৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় সমাবেশ ও সচিবালয় অভিমুখে মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল। কিন্তু ১১ জানুয়ারি সকালে হাজার হাজার ছাত্রছাত্রী যখন বটতলায় সমবেত হতে থাকে তখন কেন্দ্রীয় নেতারা আমরা যারা বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক নেতা ছিলাম তাদের (ঘরোয়াভাবে) ডেকে বললেন, অনিবার্য কারণবশত আজকের কর্মসূচি পালন করা যাবে না। যখন আমরা প্রশ্ন করলাম, কেন? কী সেই অনিবার্য কারণ? নেতারা একান্তে বললেন, দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন প্রস্তুত নয়। এরপর পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করা হলো ১৪ ফেব্রুয়ারি। সেই ১৪ ফেব্রুয়ারিতে বটতলায় সামরিক স্বৈরাচারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে ও জীবন বাজি রেখে সমবেত হয়েছিল হাজার হাজার ছাত্র-জনতা। সেখান থেকেই সচিবালয় অভিমুখে শুরু হয় শান্তিপূর্ণ মিছিল। সেই মিছিলের ওপর হামলা হয়। অকুতোভয় ছাত্রসমাজ কার্জন হলের সামনে পুলিশের ব্যারিকেডের মুখে পড়ে। কিন্তু জান্তার কী সাধ্য সেই দুর্বার আন্দোলন অপ্রতিরোধ্য মিছিলকে প্রতিহত করার! শুরু হয় টিয়ার গ্যাস, জলকামান, অবশেষে নির্বিচারে গুলি। মাটিতে লুটিয়ে পড়ে শহীদ হয় জয়নাল, জাফর, মোজাম্মেল, কাঞ্চন, আইয়ুব, দীপালি সাহাসহ আরও কিছু সাথী। সেই সাথীদের রক্তের ধারাবাহিকতায় আন্দোলন শুরু হয়।

তাদের রক্তের ধারাবাহিকতায় যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল নয় বছর সংগ্রামের পর ডা. মিলনের হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে ১৯৯০ সালের ৪ ডিসেম্বর এরশাদ পদত্যাগের ঘোষণা দেন ও অনানুষ্ঠানিকভাবে এরশাদের পতন হয়। আর আনুষ্ঠানিকভাবে ৬ ডিসেম্বর এরশাদ সাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন ও বাংলাদেশে সামরিক স্বৈরতন্ত্রের অবসান ঘটে। এরপর থেকেই গণতন্ত্রের অভিমুখে ফের যাত্রা শুরু হয়। যদিও এরপর কয়েকবার গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা ব্যাহত হয়েছে। ২০১৯ সালে স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস আমরা পালন করছি। এরশাদের পতনের পর ২৯ বছর পার হয়ে গেলেই আমরা পরিপূর্ণভাবে গণতান্ত্রিক সমাজ কাঠামো বিনির্মাণ করতে পারিনি। সেজন্য দেশে কিছুটা অস্থিরতাও কাজ করেছে। ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত নির্বাচনে আসেনি, তারা জ্বালাও-পোড়াওসহ সারা দেশে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। এর ঠিক পাঁচ বছর পর ২০১৮ সালে যে নির্বাচন হয়েছে সে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হয়েছে। সেই নির্বাচন নিয়েও বিএনপি এবং বিরোধী মোর্চার পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের কথাবার্তা আসছে। সেক্ষেত্রে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাই পারেন এ অস্থিরতাকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করে উন্নয়নের গতিধারাকে অব্যাহত রেখে যে গণতন্ত্রের জন্য দেশবাসী সংগ্রাম করেছিল, বঙ্গবন্ধুর ডাকে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল সেরকম পরিপূর্ণ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কায়েম করতে।

১৪ ফেব্রুয়ারি সারা দুনিয়ার মতো বাংলাদেশে পালিত হয় ভালোবাসা দিবস হিসেবে। স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস ও ভালোবাসা দিবস কোনো বিরোধপূর্ণ বিষয় নয়। কিন্তু ভালোবাসা দিবসের উচ্ছ্বলতায় স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবসের চেতনা যেন হারিয়ে না যায়। আজ আমরা যে ভালোবাসা দিবস পালন করছি এর পেছনে রয়েছে ইতিহাস। কিছু কিছু ক্ষেত্রে মতপার্থক্যও রয়েছে। প্রায় সাড়ে সতেরশ বছর আগে একজন রোমান ক্যাথলিক ধর্মযাজক সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের কথা।

২৭০ খ্রিস্টাব্দে তখনকার দিনে ইতালির রোম শাসন করতেন রাজা ক্লডিয়াস-২, তখন রাজ্যে চলছিল সুশাসনের অভাব, আইনের অপশাসন, অপশিক্ষা, স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি এবং কর বৃদ্ধি। এতে প্রজাকুল ফুঁসছিল। রাজা তার সুশাসন বজায় রাখার জন্য রাজদরবারে তরুণ-যুবকদের নিয়োগ দিলেন। আর যুবকদের দায়িত্বশীল ও সাহসী করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে তিনি যুবকদের বিয়ে নিষিদ্ধ করলেন। কারণ, রাজা বিশ্বাস করতেন বিয়ে মানুষকে দুর্বল ও কাপুরুষ করে। বিয়ে নিষিদ্ধ করায় পুরো রাজ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হলো। এ সময় সেন্ট ভ্যালেন্টাইন নামক জনৈক যাজক গোপনে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করলেন; তিনি পরিচিতি পেলেন ‘ভালোবাসার বন্ধু’ বা ‘Friend of Loversof Lovers’ নামে। কিন্তু তাকে রাজার নির্দেশ অমান্য করার কারণে রাষ্ট্রদ্রোহিতার দায়ে আটক করা হলো। জেলে থাকাকালীন ভ্যালেন্টাইনের পরিচয় হয় জেলরক্ষক আস্ট্রেরিয়াসের সঙ্গে। আস্ট্রেরিয়াস জানত ভ্যালেন্টাইনের আধ্যাত্মিক ক্ষমতা সম্পর্কে। তিনি তাকে অনুরোধ করেন তার অন্ধ মেয়ের দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিতে। ভ্যালেন্টাইন পরবর্তীতে মেয়েটির দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দেন।

এতে মেয়েটির সঙ্গে সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের অন্তরঙ্গ বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। রাজা তার এ আধ্যাত্মিকতার সংবাদ শুনে তাকে রাজদরবারে ডেকে পাঠান এবং তাকে রাজকার্যে সহযোগিতার জন্য বলেন। কিন্তু ভ্যালেন্টাইন বিয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা না তোলায় সহযোগিতায় অস্বীকৃতি জানান।

এতে রাজা ক্ষুব্ধ হয়ে তার মৃত্যুদ- ঘোষণা করেন। মৃত্যুদন্ডের ঠিক আগের মুহূর্তে ভ্যালেন্টাইন কারারক্ষীদের কাছে একটি কলম ও কাগজ চান। তিনি মেয়েটির কাছে একটি গোপন চিঠি লিখেন এবং শেষাংশে বিদায় সম্ভাষণে লেখা হয় ‘From your Valentine’, এটি ছিল এমন একটি শব্দ যা হৃদয়কে বিষাদগ্রাহ্য করে। অতঃপর ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২৭০ খ্রিস্টাব্দে ভ্যালেন্টাইনের মৃত্যুদ- কার্যকর করা হয়। সেই থেকে সারা বিশ্বে ‘বিশ্ব ভালোবাসা দিবস’ পালন করা হয়।

আজ বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। বসন্তের এই দিনে বাগানে ফুটেছে নানা রঙের কত শত ফুল। কত ফুল আজ শোভা পাচ্ছে রমণীর নোটন খোঁপায়। প্রিয় মানুষের সঙ্গে হাতে হাত রেখে চলতে চলতে আজ কত ফুল হবে অনুষঙ্গ। এ দিনে তোমরা বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে একটি ভালোবাসাময় পৃথিবী উপহার দাও। তার আগে স্বৈরাচার সরকারের হাতে নিহত শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে অন্তত একটি ফুল দিও শহীদদের চরণে।  আজ থেকে ৩৪ বছর আগে ১৪ ফেব্রুয়ারিতে যাদের নিঃশ্বাস স্বৈরাচারের বুলেটে বেয়নেটে দেহত্যাগ  করেছিল তাদের আত্মা শান্তি পাবে।

লেখক : ’৯০-এর গণআন্দোলনে সর্বদলীয় ছাত্রঐক্যের কেন্দ্রীয় নেতা, বর্তমানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতা।

সর্বশেষ খবর