বৃহস্পতিবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

বুড়িগঙ্গাকে বাঁচাতে হবে

দখল-দূষণ রোধের উদ্যোগ ইতিবাচক

রাজধানী ঢাকা আর বুড়িগঙ্গা একে অন্যের অনুষঙ্গ হিসেবে বিবেচিত। চার শতাব্দী আগে ঢাকায় সুবে বাংলার রাজধানী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বুড়িগঙ্গা নামের প্রাণবন্ত নদীর বদন্যতায়। সেই মধ্যযুগে নদীপথ যাতায়াতের ক্ষেত্রে প্রাধান্য পেত। শায়েস্তা খানের আমলে ঢাকাকে যখন রাজধানী করা হয় তখন বুড়িগঙ্গা তীরের এই জনপদের নদীপথের যোগাযোগকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। কালের বিবর্তনে ঢাকা মুঘল আমলের সুবে বাংলা, ব্রিটিশ আমলের পূর্ববাংলা পাকিস্তান আমলের পূর্ব পাকিস্তান এবং একাত্তরের পর থেকে বাংলাভাষী জনগণের জাতিরাষ্ট্র বাংলাদেশের রাজধানী। ঢাকা আজ বিশ্বেও মেগা সিটিগুলোরও অন্যতম। বুড়িগঙ্গা রাজধানীর প্রধান নদীই শুধু নয়, মহানগরীর পৌনে দুই কোটি মানুষের ফুসফুসের ভূমিকা পালন করছে। দখল ও দূষণের নির্মম শিকার এই নদীকে বাঁচাতে নেওয়া হয়েছে মহাপরিকল্পনা। ২০ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে, ইকোপার্ক এবং বাগান করে নতুনভাবে ঢেলে সাজানো হচ্ছে বুড়িগঙ্গাকে। দখল-দূষণ স্থায়ীভাবে প্রতিরোধ করতে এমন ইতিবাচক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। বুড়িগঙ্গার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে এবং দখলদারদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে সরকার। নদীর জায়গা দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। উচ্ছেদ অভিযানে উদ্ধারকৃত এলাকা কিছু দিন না যেতেই আবার যাতে দখল না হয়ে যায় তা নিশ্চিত করতে বুড়িগঙ্গার উচ্ছেদকৃত এলাকায় ২০ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রণালয়। পুরো এলাকাকে দৃষ্টিনন্দন করতে ইকোপার্ক এবং বাগান গড়ে তোলা হবে। ওয়াকওয়েতে নদীর সীমানা নির্ধারণ হয়ে গেলে এ জায়গা দখল হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না। হাতিরঝিলের মতো পুরো এলাকা স্থাপত্য শৈলীর বৈচিত্র্যতা ও সবুজায়নে দৃষ্টিনন্দন করে তোলা হবে। এখানে বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে থাকছে ইকোপার্ক। বুড়িগঙ্গাকে দখলদারিত্বের কবল থেকে বাঁচাতে নদী পাড়ে ওয়াকওয়ে ও ইকোপার্ক তৈরির পরিকল্পনা একটি অভিনন্দনযোগ্য পদক্ষেপ। এ পরিকল্পনাকে এগিয়ে নিতে সরকারকে সংকল্পবদ্ধ ভূমিকা পালন করতে হবে।  পাশাপাশি নদী রক্ষায় দূষণ বন্ধেও নিতে হবে উদ্যোগ। বুড়িগঙ্গায় মানব বর্জ্য ও শিল্প বর্জ্য ফেলার কাণ্ডজ্ঞানহীনতা বন্ধে কড়া পদক্ষেপ  নেওয়া হবেÑআমরা এমনটিই দেখতে চাই।

সর্বশেষ খবর