রবিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

অভিশাপের নাম তামাক

কর ফাঁকি বন্ধে কঠোর হোন

তামাক এক জাতীয় অভিশাপের নাম। জনস্বাস্থ্যের জন্য এটি এক সাক্ষাৎ হুমকি। তামাক বাবদ যে অর্থ ব্যয় হয়, তা পুষ্টি খাতে ব্যয় করলে দেশের সার্বিক স্বাস্থ্য খাতের পরিস্থিতি পাল্টে যেত। তামাক বন্ধ করা গেলে ক্যান্সার ও ফুসফুসের নানা রোগ থেকে রক্ষা পেত বিপুলসংখ্যক মানুষ। তামাক ব্যবসায়ীরা এই ক্ষতিকর নেশাপণ্য বাজারজাত করে প্রতি বছর কয়েক কোটি মানুষের স্বাস্থ্যগত হুমকিই শুধু সৃষ্টি করছে না, কর ফাঁকি দিয়ে সরকারকে বিপুলভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। বিশ্বব্যাংকের এক গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, তামাকজাত পণ্যের অবৈধ বাণিজ্যে দেশে প্রতি বছর রাজস্ব ক্ষতি হয় ১০ কোটি মার্কিন ডলার বা ৮৩৮ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। তবে আশার কথা, বাংলাদেশে দিন দিন তামাকজাত পণ্য বিশেষ করে সিগারেট ও বিড়ি ব্যবহারকারীর সংখ্যা কমছে। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক দশক আগেও বাংলাদেশে তামাকজাত পণ্যের উৎপাদন ও ব্যবহার দুটিই বৃদ্ধি পেয়েছিল। ২০০৭ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর ২৭ শতাংশ হারে উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়ে। তবে ২০১২ সাল থেকে উৎপাদন ও ব্যবহার দুটিই কমতে থাকে। এখনো তা অব্যাহত আছে। এক দশক আগে যেখানে ১৫৬ বিলিয়ন শলাকা উৎপাদন হতো, এখন তা ১২৫ বিলিয়ন শলাকায় নেমে এসেছে। ২০০৯ সালে দেশে প্রাপ্তবয়স্ক ৪৩.৩ শতাংশ লোক ধূমপান করত। এখন তা কমে ৩৫.৩ শতাংশে নেমে এসেছে। অর্থাৎ নয় বছরে ধূমপায়ীর হার কমেছে ৮ শতাংশ। নারী-পুরুষ দুই ক্ষেত্রেই এ হার কমেছে। ধূমপান নিরুৎসাহিত করতে সরকার নানা ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করায় এ সুফল এসেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় ধূমপানবিরোধী আইন কঠোর হয়েছে। শিক্ষামূলক প্রচারও বেড়েছে। কঠোর হয়েছে শুল্ক ব্যবস্থাপনা। মানুষের মাঝেও সচেতনতা তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশে তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার হ্রাস পাওয়া অবশ্যই একটি ইতিবাচক ঘটনা। একে শূন্যের পর্যায়ে নিয়ে আসার চেষ্টা চালাতে হবে। তবে তামাকের ব্যবহার যত দিন থাকবে তত দিন উচ্চহারে কর ধার্য করার পাশাপাশি তামাক ব্যবসায়ীদেও কর ফাঁকি বন্ধেও নিতে হবে উদ্যোগ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর