মঙ্গলবার, ৫ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

দয়াময় প্রভু ওবায়দুল কাদেরকে সুস্থতা দান করুন

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম

দয়াময় প্রভু ওবায়দুল কাদেরকে সুস্থতা দান করুন

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আকস্মিক গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় আমরা গভীর মর্মাহত। এমন অভাবনীয় ঘটনা খুব একটা ঘটে না। এমন কর্মচঞ্চল মানুষ হঠাৎই মৃত্যুর পথযাত্রী হতে পারেন ভাবতেও কষ্ট হয়। আমরা সবাই আল্লাহর দরবারে তার আশু সুস্থতা কামনা করছি।

গত সপ্তাহে শরীর খারাপ থাকায় লেখা হয়নি। তার আগের সপ্তাহে লেখা দেওয়ার পরও ছাপা হয়নি। তাই পাঠকরা বেশ চিন্তিত। পত্রিকা অফিস লেখা নিয়ে পাঠকদের মতামত পায় কিনা জানি না। কিন্তু লেখা না পেলেই বহু মানুষ ফোন করে। এ ক্ষেত্রে তার ব্যতিক্রম হয়নি। কী লিখি কখনোসখনো তেমন উৎসাহ পাই না আবার কখনো খুব ভালো লাগে। নিমতলীর দুর্ঘটনার দশকপূর্তির কাছাকাছি চকবাজারে শত মানবসন্তান পুড়ে ছাই। কিন্তু এসবের কেন যেন কোনো প্রতিকার নেই, কারও মধ্যে কোনো আকার-বিকার নেই। ৫-১০ বছর আগেও ভাবিনি দেশ এমন লাগামহীন হবে। কারও কোনো জবাবদিহি থাকবে না, সবকিছু গা সওয়া হয়ে যাবে, এসবই ছিল ভাবনার অতীত; যা কল্পনায় আসেনি তা-ই প্রতিনিয়ত ঘটছে। এসব যদি সুখকর হতো তাহলে আনন্দের সীমা থাকত না। কিন্তু অভাবনীয় যা ঘটে বা ঘটছে সবই অপ্রীতিকর দুঃসংবাদ। অথচ তার পরও রাষ্ট্র সাফল্যের ঢেঁকুর তুলছে। একেবারেই সাফল্য নেই তা কে বলতে গেছে? কিন্তু আমরা তো শুধু এ ধরনের সাফল্য চাই না, মান-মর্যাদা, জীবনের নিরাপত্তা, স্বস্তিও চাই। বড় বড় দুর্ঘটনা ঘটে, ঘটার পরপরই ফলাও করে খবর বের হয়। ২-৪-১০ দিন খবরের পাতায় ঝলমল করে। তারপর মুছে গেলেই সব শেষ। এভাবে আর কতকাল? লোকজন বলছে চকবাজারের ট্র্যাজেডি থেকে দেশবাসীর দৃষ্টি সরাতে বাংলাদেশ বিমানের ময়ূরপঙ্খী ছিনতাই নাটক। যে যাই বলুন এখন আর মানুষের মুখ আটকে রাখা যায় না, আগে যেত। কিন্তু মুখ ছুুটলে প্রলয় হতো। এখন সবসময় মুখ ছোটে বা ফোটে। কিন্তু তেমন গুরুত্ব পায় না। ময়ূরপঙ্খীর ছিনতাই নিয়ে কী বলি, এখন আকাশপথে ভ্রমণ খুব একটা সহজ নয়। শুধু মানুষের নয়, যন্ত্রের চোখ ফাঁকি দিয়ে কোনো হাওয়াই জাহাজে ওঠা সে এক দুঃসাধ্য ব্যাপার। লোকজন মেটাল ডিটেক্টর নিয়ে দেখাদেখি করে, মেশিনে স্ক্যানিং বা এক্স-রে হয়। আমি নিজেই দেখেছি হ্যান্ডব্যাগে নেইল কাটারও নিতে দেয় না। পানির বোতলে পর্যন্ত আপত্তি। এসবের পর কী করে সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে ময়ূরপঙ্খী ছিনতাইয়ের চেষ্টা হয়? এসব কি সম্মানের নাকি অসম্মানের? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সেদিন মযূরপঙ্খীর কলাকুশলী পাইলটদের জাতীয় বীরের খেতাব দিয়েছেন। হ্যাঁ, ভালো কাজ করলে অবশ্যই বাহ্বা দিতে হবে। কিন্তু যেনতেন কারণে যাকে তাকে শাবাশি দিলে অপদার্থ নাদানদের সাহস বাড়ে। প্রকৃত সাহসী বা গুণীরা হতাশ হয়। ময়ূরপঙ্খীর ককপিটের লোকজনেরা তেমন কী সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন? বরং ভিতরের ক্রুরা ঠিকঠাক কাজ করেছেন। পাইলট বিমানবন্দরে খবর পাঠিয়ে যথাযথ অবতরণ করেছেন। কেবিন ক্রুরা জরুরি দরজা খুলে দিলে প্যাসেঞ্জাররা বিমানের ডানার ওপর বেরিয়ে আসেন। শাবাশি যদি দিতেই হয় কেবিন ক্রু সাগর ছিনতাইয়ের চেষ্টারত পলাশের সঙ্গে নাকি ধস্তাধস্তি করেছেন তাহলে তো তাকেই দিতে হয়। আরও দু-এক জন ক্রু গিয়ে তো তাকে চেপে ধরতে পারতেন? তা যাই হোক, একসময় সব যাত্রী পাইলটসহ কেবিন ক্রুরা নিরাপদে বাইরে বেরিয়ে আসেন। বিমানে শুধু থেকে যায় ছিনতাইয়ের চেষ্টারত পলাশ। আবার কেউ বলছেন, বিমানে সাগরও ছিলেন। ছিনতাইয়ের চেষ্টারত পলাশকে আহত অবস্থায় বিমান থেকে বের করা হয়েছিল। বেরোবার পর সে নিহত হলো কেন বা কীভাবে? শুনলাম মামলা দেওয়ার সময় আলামত হিসেবে খেলনা পিস্তল জমা দেওয়া হয়েছে। আমরা যদি একটা খেলনা পিস্তলকেই নিয়ন্ত্রণ করতে না পারি যেদিন সত্যিকার ছিনতাই হবে সেদিন কী হবে? আর নাটক করতে গিয়েই যদি বাংলাদেশের নাগরিক একজন আল্লাহর বান্দার জীবন দিতে হয় তাহলে একদিন না একদিন আমাদের কাউকে না কাউকে আল্লাহর দরবারে জবাব দিতে হবে। লোকটা কেমন ছিল, কয়টা বিয়ে করেছে, নামাজ পড়ত কি পড়ত না, টুপি মাথায় দিত কি দিত না, বাউণ্ডুলে না সুবোধ ছিল এসবের ছিনতাইয়ের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। ছিনতাইয়ের চেষ্টা সেটা সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়। সময় থাকতে অবশ্যই যাদের উচিত তাদের তলিয়ে দেখতে বলব।

বর্তমান রাজনীতি নিয়ে তেমন কিছু লিখতে ইচ্ছা করে না। আর কিছু লিখলে পত্রিকাওয়ালাদের অসুবিধা হয়। আমার লেখার দায়িত্ব আমার হলেও কর্তৃপক্ষ অনেক বেশি সমঝদার তাই ভালো লাগে না। কদিন যাবৎ ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী মোকাব্বির আর সুলতান মোহাম্মদ মনসুরের সংসদে যাওয়া নিয়ে কথাবার্তা শুনছি। বুঝতে পারি না তারা কী ভাবছেন। তবে দেশের মানুষের অমতে সংসদে গেলে, শপথ নিলে মানুষ ক্ষুব্ধ হতে পারে। শুনছি ৭ মার্চ জনাবেরা শপথ নেবেন। জনগণের অনিচ্ছায় তাদের এ শপথ একসময় এমন হবে যে দেশের নিকৃষ্টতম ব্যক্তিদের মধ্যে তারা হবেন প্রধান। যাক, বড় নেতা, বড় সেবক তাই তাদের বড় চিন্তা। পরের ধনে পোদ্দারি সবসময় চলে না। বাংলাদেশের মানুষ সম্পর্কে এসব নেতাদের কতটা ধারণা আছে জানি না। অনেক সময় খোঁচালেও কিছু বলে না। কিন্তু কোনো কোনো সময় কানের কাছ দিয়ে মাছি গেলে ফুঁসে ওঠে প্রলয় ঘটায়। ’৬৬-’৬৯ পর্যন্ত কম লোক শহীদ হয়নি। নাখালপাড়ায় মনু মিয়াসহ মতিউর রহমান আরও অনেক শহীদ হয়েছে আমরা জাগতে পারিনি। কিন্তু আসাদ নিহত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশ ফুঁসে ওঠে। তারপর আইয়ুব খান ১০ দিনও টিকতে পারেননি। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের বিরুদ্ধে কত আন্দোলন হয়েছে কত লোক শহীদ হয়েছে মনে হয়েছে কিছুই হবে না। কিন্তু ডা. মিলনের মৃত্যু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের তখতে তাউস মুহূর্তে উল্টে দিয়েছিল। তাই বাঙালির চরিত্র বড় বিচিত্র। কখন কী হয় বা হবে একমুহূর্ত আগেও বোঝা যায় না। তাই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের যারা এ অগ্রহণযোগ্য নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য দিতে চাইবে তারা মানুষের কাছে খুব বেশি গ্রহণীয় হবেন না। যখন নিন্দার তুফান ছুটবে তখন কোথাও দাঁড়ানোর জায়গাটা পাবেন না। তাই সাধু সাবধান!

জানি না আমাদের পরিণতি কী। যেহেতু সারা জীবন একেবারে সাধারণ মানুষের কাছে থেকেছি, সাধারণভাবে জীবন চালিয়েছি। তাই অবশ্যই বলতে ইচ্ছা করে দয়া করে কেউ জাতিকে দিশাহারা নিরুৎসাহী করবেন না। ’৬৯-’৭০-’৭১-এ একেবারে হতদরিদ্র নিঃসম্বলেরও যে আত্মমর্যাদা ছিল এখন বিপুল সম্পদের মালিকদের তার কানাকড়িও নেই। একটা জাতিকে আশান্বিত করা উৎসাহিত করা বা করতে পারা মুক্তির কাছাকাছি নিয়ে যাওয়ার মতো ব্যাপার। আর প্রচুর সম্পদশালী ধনবান জাতিকেও হতাশ করা মৃত্যুর শামিল। তাই সময় থাকতে সাবধান হওয়া উচিত। কারণ দেশের কারও কোথাও তেমন উৎসাহ নেই, তেমন স্বতঃস্ফূর্ততা কাজ করছে না। সরকারি-বেসরকারি সব মানুষই কেমন যেন স্তব্ধ বোবা হয়ে আছে। বাস্তবকে স্বীকার করার মতো বা স্বীকার করতে পারার মতো জ্ঞানী খুব বেশি মানুষ হয় না। এই সেদিন ঢাকা উত্তর সিটি নির্বাচন হলো। কজন তাতে যোগ দিয়েছে, কজন ভোট দিয়েছে? যতই যুক্তি দেওয়া হোক বাস্তব সত্য তা নয়। একটা ছেলে মেয়ের যখন বিয়ে হয় বিয়ের আগে কত উৎসাহ নিয়ে সামর্থ্যমতো কত কেনাকাটা করে। বিয়ের দিন ছেলে সাজুক বা না সাজুক মেয়ে কত সাজে এবং সেই সাজের কথা সারা জীবন মনে রাখে। যত কিছুই হোক বিয়ের দিনের স্মৃতি কেউ ভোলে না। ঠিক তেমনি যে জাতির জন্মই হয়েছে গণতন্ত্রের জন্য, গণতন্ত্র অর্জনে বা নিরাপদ করতে যে জাতি শেষ পর্যন্ত রক্ত দিয়েছে যুদ্ধ করেছে সেই জাতি যদি গণতন্ত্র সম্পর্কে ভোট সম্পর্কে সর্বোপরি রাষ্ট্র পরিচালনা সম্পর্কে নিরুৎসাহী হয়ে পড়ে তাহলে সেটা লাভের চাইতে ক্ষতিই বেশি হবে। তাই একটা জাতি যাতে নিরুৎসাহী হয়ে একেবারে ধ্বংস হয়ে না যায় সেদিকে সবারই লক্ষ্য রাখা উচিত। রাষ্ট্র পরিচালনায় প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ জনগণের যদি সত্যিকার ভূমিকা না থাকে তাহলে যে যাই বলুন সাধারণ মানুষকে উৎসাহী করা যাবে না। উৎসাহী মানুষের কাজ আর নিরুৎসাহী মানুষের কাজে আকাশ-পাতাল ব্যবধান। তাই রাষ্ট্র পরিচালনায় মানুষের সম্পৃক্ততা নিয়ে রাষ্ট্রনায়কদের উদাসীন থাকা ভালো কথা নয়। বড় বড় বক্তৃতায় আমরা মুখে যতই ফেনা তুলি রাষ্ট্র পরিচালনায় কোথাও জনগণের প্রকৃত অংশীদারত্ব নেই। যাক ওসব নিয়ে যত কম বলা যায় ততই ভালো। প্রতিদিন আগুন জ¦লছে বস্তি পুড়ছে মানুষ মরছে সর্বস্বান্ত হচ্ছে। কিন্তু কোথাও কোনো প্রতিকার নেই। হাজার হাজার কোটি টাকা রাস্তাঘাট উন্নয়নে খরচ হচ্ছে। কিন্তু মানুষ স্বস্তিতে চলাচল করতে পারছে না। ঘর থেকে বেরিয়ে কখন নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছবে কেউ বলতে পারবে না। রাস্তায় বেরোলেই অনিশ্চয়তা।

বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলক স্বাধীনতার বীর সেনানী আ স ম আবদুর রব পতাকা দিবসে প্রায়ই দাওয়াত করেন। মাসখানেক আগে এবারও করেছিলেন। কথা দিয়েছিলাম অবশ্য অবশ্যই তার অনুষ্ঠানে যাব। সেইভাবে ২ মার্চ তার অনুষ্ঠানে হাজির হওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। ২৮ ফেব্রুয়ারি আমার সহকারীর সঙ্গে রব সাহেবের সহকারীর পতাকা দিবসের অনুষ্ঠান নিয়ে কথা হয়। কিন্তু ২ তারিখের অনুষ্ঠান যে ১ তারিখে করা হয়েছে ঘুণাক্ষরেও জানতে পারিনি। আমি ছিলাম টাঙ্গাইলে। খাবার থালা সামনে নিয়ে কেবলই বসেছি। হঠাৎ আ স ম আবদুর রবের ফোন, ‘কাদির, মিটিংয়ে আসছ তো?’ হ্যাঁ, আগামীকালের মিটিংয়ে অবশ্যই যাব। ‘বল কী, মিটিং তো আগামীকাল নয়, মিটিং আজকে ৩টায়।’ বিস্মিত হয়েছিলাম। তাড়াহুড়া করে খাবার খেয়ে ২টা ৩০ মিনিটে টাঙ্গাইল থেকে গাড়ি হাঁকিয়ে ছিলাম। রাস্তা তেমন কঠিন ছিল না। টাঙ্গাইল থেকে শ্যামলী পর্যন্ত ২ ঘণ্টায় এসেছিলাম। সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল বা প্রধানমন্ত্রীর ভবন যখন পার হই তখন ৪টা ৩৫ মিনিট। ভাবছিলাম আর কতই বা সময় লাগবে, আধা ঘণ্টা, ৪০ মিনিট কিংবা ১ ঘণ্টা। মানিক মিয়া এভিনিউ আসতেই শুক্রবার ছিল বলে সায়েন্স ল্যাবরেটরি-নিউমার্কেটের রাস্তা ধরেছিলাম। হায়রে কপাল! রাসেল স্কয়ার পার হওয়ার পর সে যে যানজট। টাঙ্গাইল থেকে ১০০ কিলোমিটার এসেছিলাম ২ ঘণ্টায় আর রাসেল স্কয়ার থেকে প্রেস ক্লাব ৫-৬ কিলোমিটার পার হতে লেগেছে ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিট। প্রেস ক্লাবে গিয়ে দেখি অনুষ্ঠান শেষ। উদ্যোক্তারা ছাড়া প্রায় সবাই চলে গেছেন। দীর্ঘদিন রাজনীতির সঙ্গে জড়িত কত সভা-সমাবেশে গেছি। কেন যেন আল্লাহর অশেষ দয়ায় এ পর্যন্ত কোনো সভা-সমাবেশ নষ্ট হয়নি। সভা-সমাবেশে যেতে গিয়ে পাইনি আমার জীবনে বিরল ঘটনা। প্রবল বৃষ্টি-ঝড়-তুফানেও সভায় গিয়ে দেখেছি আমার সময় কোনো ঝড়-তুফান নেই, আকাশ ঝরঝরে। জীবনে এই প্রথম একটি ঐতিহাসিক ঘটনার সঙ্গে জড়িত হতে পারলাম না। বাংলাদেশ আছে, কিন্তু স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন নিয়ে সরকারি কোনো আগ্রহ নেই। মুক্তিযুদ্ধের ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় ২ মার্চ পতাকা উত্তোলন এবং ৩ মার্চ স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ। ৩ মার্চ ছাত্রনেতা শাজাহান সিরাজের কণ্ঠে স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ নীরবে নিভৃতে চলে গেল কোনো খবর হলো না। এ যে কতটা অমার্জনীয় অপরাধ কেউ ভেবে দেখছে না। ভাবিকালে এসবের জন্য আমাদের বড় রকমের জবাবদিহি করতে হবে। উদ্যোক্তা ২০-২৫ জন যারা ছিলেন তাদের মধ্যে তানিয়া ভাবীও ছিলেন। তার সঙ্গে দেখা করে কথা বলে চলে আসছিলাম। তানিয়া ভাবী হঠাৎই আমার মুজিবকোটের বুক পকেটে একটা গোলাপ গুঁজে দিয়েছিলেন। মনে হয় গত ২০-২৫ বছর আমার কোটের পকেটে কেউ গোলাপ গুঁজে দেয়নি। বড় ভালো লেগেছে তার মহানুভবতা, তার এ শ্রদ্ধা ভালোবাসা। ৭টার দিকে প্রেস ক্লাব থেকে বাড়ি ফিরতে গাড়িতে উঠেছিলাম। তখন আ স ম আবদুর রবের ফোন, ‘কাদির, তুমি কষ্ট করে এসেছিলে খুব খুশি হয়েছি।’ আমি বলেছিলাম, কষ্ট আর কী। শেষ পর্যন্ত মিটিং পেলাম না তাই কিছুটা খারাপ লাগছে। যানজটে যে দেশের কতটা ক্ষতি হচ্ছে তা আমরা ভালোভাবে চিন্তা করে দেখছি না।

রাস্তাঘাটের কারণে পরিকল্পনা করে কেউ কোনো কাজ করতে পারছে না। কত যে কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে সেই সঙ্গে জ¦ালানি, রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ির জন্য পরিবেশ দূষণ। তা ছাড়া অনিয়ন্ত্রিত গাড়িতে জীবনহানি তো লেগেই আছে। দুর্ঘটনার কারণে কত সোনার সংসার মুহূর্তে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে সেদিকে কারও কোনো খেয়াল নেই। আদৌ কি আমরা আমাদের গা-ছাড়া স্বভাব ছেড়ে দায়িত্বশীল হব, কবে কখন হব নাকি আদৌ হব না। অথচ আমাদের দায়িত্বশীল হওয়া অন্যের প্রতি সহানুভূতিশীল দেশপ্রেমী হওয়া বড় বেশি প্রয়োজন। দেশপ্রেমহীন ভালোবাসাহীন দায়িত্ববিমুখ জাতি কোনো গর্বের নয়। বরং খুবই লজ্জা ও অপমানের।

লেখক : রাজনীতিক।

www.ksjleague.com

সর্বশেষ খবর