বুধবার, ৬ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

হাওররক্ষা বাঁধ

দুর্নীতির অবতারদের শায়েস্তা করুন

হাওররক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারকাজে দুর্নীতির আছর শুধু সরকারি অর্থের অপচয়ই ঘটাচ্ছে না ফসলহানির শঙ্কাও তৈরি করছে অনিবার্যভাবে। দেশের খাদ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রে হাওর এলাকার উৎপাদিত ফসল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এক বছর আগে ২০১৭ সালে দেশের হাওর-সংশ্লিষ্ট সাত জেলায় অকাল বর্ষণ, বন্যা ও পাহাড়ি ঢলে ব্যাপক ফসলহানি ঘটে; যার প্রতিক্রিয়ায় সারা দেশে চালের দাম বেড়ে যায়। বিপুল পরিমাণ চাল আমদানি করতে হয় বিদেশ থেকে। বাংলাদেশের বিপুল পরিমাণ চাল আমদানিতে বিশ্ববাজারে এ খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যায়। খাদ্যাভাবের মোকাবিলায় হাওর এলাকার লাখ লাখ কৃষককে সহায়তাও দেওয়া হয় সরকারের পক্ষ থেকে। সে বছর হাওর এলাকার ফসলহানির জন্য অকাল বর্ষণ যেমন দায়ী ছিল তেমন দায়ী ছিল যেনতেনভাবে নির্মাণ ও সংস্কারের কারণে বাঁধ ভেঙে যাওয়ার ঘটনা। আশা করা হয়েছিল, বিপর্যয়ের পুনরাবৃত্তি রোধে হাওর বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারে দুর্নীতি ও অসততার যে ‘ঐতিহ্য’ রয়েছে তা থেকে সরে আসা হবে। কিন্তু এসব কাজের সঙ্গে যারা সংশ্লিষ্ট তারা যে তাদের কুৎসিত চরিত্র পাল্টানোর কোনো চেষ্টা করেননি তার প্রমাণ গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারসংক্রান্ত সব কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা থাকলেও এ পর্যন্ত বেশির ভাগ প্রকল্পেরই কাজ শেষ হয়নি। সহযোগী দৈনিকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সোমবার পর্যন্ত সুনামগঞ্জে ৯০, নেত্রকোনায় ৯০ ও কিশোরগঞ্জ জেলায় ৭০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ দাবি করলেও কৃষক ও সংগঠকদের মতে কিশোরগঞ্জে কাজ হয়েছে ৫০ শতাংশের মতো। জেলার কোথাও কোথাও কাজ শুরু হয়েছে নির্ধারিত সময়ের দেড় মাস পরে। সুনামগঞ্জে কাজ এগিয়েছে ৬০ শতাংশের মতো। ওই দুই জেলায় প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি গঠন থেকে শুরু করে বাস্তবায়ন পর্যায়ে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। অন্যত্রও কাজের অগ্রগতি খুব একটা সুখকর নয়। বাঁধ নির্মাণেও উঠেছে শুভঙ্করের ফাঁকির অভিযোগ। ফলে এবারও বিপর্যয় নেমে আসবে কিনা সে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। এ সংশয়ের অবসানে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে নজর দেওয়া হবে- এমনটিই প্রত্যাশিত। দুর্নীতির অবতারদের শায়েস্তা করতে দুদক তৎপর হবে- আমরা এমনটিই দেখতে চাই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর