বুধবার, ৬ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা
ইতিহাস

ঈসা খাঁ

ঈসা খাঁ

ঈসা খাঁ (১৫২৯-১৫৯৯ খ্রিস্টাব্দ) সরাইলের জমিদার, ভাটি অঞ্চলের শাসক এবং বারো ভূঁঁইয়ার নেতা। ঈসা খাঁর জন্ম ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে।

তার পিতামহ বাইশ রাজপুত সম্প্রদায়ভুক্ত ভাগীরথী প্রথমে অযোধ্যা থেকে বাংলায় আসেন এবং বাংলার সুলতান গিয়াসউদ্দিন মাহমুদের অধীন দেওয়ান হিসেবে চাকরি গ্রহণ করেন। তার মৃত্যুর পর পুত্র কালিদাস গজদানী পিতার দেওয়ান পদ লাভ করেন। পরে কালিদাস ইসলাম গ্রহণ করে সোলায়মান খান নাম ধারণ করেন। সোলায়মান সুলতানের কন্যা সৈয়দা মোমেনা খাতুনকে বিয়ে করেন এবং সরাইলের জমিদারি লাভ করেন। এই সরাইলেই সোলায়মানের পুত্র ঈসা খাঁ (খান) জন্মগ্রহণ করেন।

সুলতান গিয়াসউদ্দিন মাহমুদের মৃত্যুর পর জামাতা সোলায়মান খান নিজেকে  বৈধ উত্তরাধিকারী দাবি করে নতুন প্রতিষ্ঠিত আফগান শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। এ সময় তিনি প্রায় স্বাধীনভাবেই ভাটি অঞ্চলের শাসনকার্য পরিচালনা করেন এবং তার রাজ্য শাসনের কেন্দ্রবিন্দু ছিল সরাইল।

১৫৪৫ খ্রিস্টাব্দে শেরশাহের মৃত্যুর পর তার পুত্র ইসলাম শাহ দিল্লির সিংহাসনে আরোহণ করে বাংলাকে একটি একক প্রশাসনিক শৃঙ্খলার মধ্যে আনার পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। কিন্তু সোলায়মান খান ইসলাম শাহের ব্যবস্থা মেনে নিতে অস্বীকার করলে ইসলাম শাহ তাজ খান ও দরিয়া খান নামে দুজন সেনাপতিকে তার বিরুদ্ধে প্রেরণ করেন। সোলায়মান খান তাদের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি পরাজিত ও নিহত হন এবং তার দুই পুত্র ঈসা ও ইসমাইলকে বন্দী করে ইরানি বণিকদের কাছে দাসরূপে বিক্রি করে দেওয়া হয়।

১৫৬৩ খ্রিস্টাব্দে তাজ খান কররানি বাংলা ও বিহারের শাসন ক্ষমতা গ্রহণ করলে ঈসা খার চাচা কুতুব খান তার অনুগ্রহভাজন হন এবং দরবারি কাজে নিযুক্তি লাভ করেন। এই সময়ে তিনি তার ভ্রাতুষ্পুত্রদ্বয়ের (ঈসা ও ইসমাইল) খোঁজ পেয়ে অর্থের বিনিময়ে ইরানি বণিকের কাছ থেকে তাদের মুক্ত করে আনেন।

ঈসা খাঁ দেশে ফিরে এসে চাচা কুতুব খানের প্রচেষ্টায় তার পিতার সরাইলস্থ জমিদারি লাভ করেন। ১৫৬৫ সালে তাজ খান কররানির মৃত্যুর পর ঈসা খাঁ আফগান শাসকদের মোগল আক্রমণ মোকাবিলায় সর্বাত্মক সহযোগিতা দেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর