বৃহস্পতিবার, ৭ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

সিন্ডিকেট দৌরাত্ম্য

ওদের নখর ভাঙার উদ্যোগ নিন

রাজনীতি থেকে অফিস আদালত সর্বত্রই সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে। অপরাধ জগৎ নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে সিন্ডিকেটের হাতে। মাদক ও ভেজাল ব্যবসার ক্ষেত্রেও রয়েছে তাদের একক আধিপত্য। টেন্ডার বাণিজ্যের নিয়ন্ত্রণেও সিন্ডিকেটের কালো হাতের থাবা সদা দৃশ্যমান। রাজউক, তিতাস, সিটি করপোরেশনের মতো সেবা খাতগুলোও সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি। সরকারি অফিস-আদালতের সব ব্যবসাই নিয়ন্ত্রণ করে বিভিন্ন ধরনের গ্রুপ। এদের কাছে আদর্শ নয়, ব্যবসা-বাণিজ্যই বড়। ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণকারী কয়েকটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের কাছে অনেক সময় সরকারও অসহায় হয়ে পড়ে। প্রশ্নপত্র ফাঁসেও গড়ে উঠেছিল মহা শক্তিধর সিন্ডিকেট। সরকারকে নাকানি চুবানি খেতে হয়েছে তাদের হাতে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার সরকারি উদ্যোগ-আয়োজন সবকিছুই ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারসাজিতে ভণ্ডুুল হয়ে যায়। ব্যবসা ক্ষেত্রে আরেকটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণে একক ভূমিকা রাখছে। সিন্ডিকেট সংশ্লিষ্টদের দাপটের সামনে দেশি পণ্য ও উৎপাদিত সামগ্রী কোণঠাসা। এ সিন্ডিকেটের সঙ্গে দেশি বাজার নিয়ন্ত্রণকারী সিন্ডিকেট মিলে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি, বাজারমূল্য বৃদ্ধি ঘটাতেও দ্বিধা করে না। বিশেষত ভেজাল খাদ্য প্রস্তুত ও বাজারজাতে শক্তিশালী সিন্ডিকেটের প্রভাবের কাছে বিএসটিআইসহ ভেজাল প্রতিরোধকারীরা বড়ই অসহায়। দুর্জনদের সিন্ডিকেট দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে থাবা বিস্তার করায় অসহায় হয়ে পড়েছে আমজনতা। দেশে রাস্তাঘাট ও ভবন নির্মাণ কাজে দুর্নীতি ও উৎকোচের প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের আছর থাকায় নির্মাণ কাজের কোনো মান নিশ্চিত হয় না। সরকারি ভবন নির্মাণের ছয় মাস না যেতেই ফাটল ধরার ঘটনা ওপেন সিক্রেট। রাস্তা নির্মাণের তিন মাসের মধ্যেই চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়া নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশের রাজনীতি থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রে অশুভ সিন্ডিকেটের অস্তিত্ব দেশ থেকে সুনীতির বিসর্জন ঘটাচ্ছে। অস্তিত্বের স্বার্থেই সিন্ডিকেট নামের  প্রেতাত্মার বিরুদ্ধে দেশবাসীকে রুখে দাঁড়াতে হবে। এ চক্রের নখর ভাঙতে সরকারকে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ মনোভাব নিয়ে সক্রিয় হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর