বুধবার, ১৩ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

ডাকসু নির্বাচন

নতুন নেতৃত্বকে অভিনন্দন

একসময় দেশের মিনি পার্লামেন্ট হিসেবে ভাবা হতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ তথা ডাকসুকে। দীর্ঘ ২৮ বছর ১০ মাস পর অলিখিত নিষেধাজ্ঞার অচলায়তন ভেঙে গত সোমবার অনুষ্ঠিত হয়েছে ডাকসু ও হল ছাত্র সংসদগুলোর নির্বাচন। এ নির্বাচনে সরকার সমর্থক ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ ডাকসুর ২৫টি পদের ২৩টিতে জয়ী হয়েছে। ১৮টি হল সংসদের বেশির ভাগ হলেও জয়ী হয়েছে তারা। তবে ডাকসুর সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ পদ সহসভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন কোটাবিরোধেী আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী অরাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নুরুল হক নুর। ডাকসু ও হল সংসদে ছাত্রলীগ বাদে যারা জয়ী হয়েছেন তারা সবাই কোটাবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী অথবা স্বতন্ত্র প্রার্থী। প্রায় ২৯ বছর পর ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় অর্ধলাখ শিক্ষার্থীর সরব অংশগ্রহণে। এর মাধ্যমে ডাকসু নির্বাচনের অচলায়তন ভাঙার সাফল্য অর্জিত হয়েছে। যে কোনো নির্বাচনে হার-জিত থাকে, ডাকসু নির্বাচনেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের নেতৃত্ব বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে যাদের তারা তাদের সুখ-দুঃখের সময় পাশে পেয়েছেন তাদেরই বেছে নিয়েছেন। দীর্ঘ ১০ বছর যাবৎ ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের অপ্রতিরোধ্য অবস্থান থাকায় স্বভাবতই শিক্ষার্থীদের সমর্থন পাওয়ার ক্ষেত্রে তারা ছিল সুবিধাজনক অবস্থানে। তবে কোটাবিরোধী আন্দোলন শিক্ষার্থীদের মনোজগতে যে প্রভাব বিস্তার করেছিল তার প্রতিফলন ঘটেছে সহসভাপতি পদে তাদের প্রার্থীর জয়লাভে। ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে ছাত্রলীগের বাইরে যারা জিতেছেন তাদের প্রায় সবাই শিক্ষার্থীদের দাবি-দাওয়া নিয়ে সংঘটিত বিভিন্ন আন্দোলনে সরব ভূমিকা রেখেছেন। ডাকসু নির্বাচনে বেশকিছু প্রীতিকর ও অগ্রহণযোগ্য কর্মকাণ্ডের অবতারণা ঘটলেও এ নির্বাচনে নির্বাচনহীনতার যে অচলায়তনের ইতি ঘটেছে আমরা তাকে স্বাগত জানাই। ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে যারা জয়ী হয়েছেন তাদের প্রতি আমাদের অভিনন্দন। আমরা আশা করব,

যারা জয়ী হতে পারেননি তারা শিক্ষার্থীদের রায় মেনে নেবেন। ছাত্ররাজনীতিতে লেজুড়বৃত্তির গণ্ডি ভেঙে স্বাধীন সত্তায় আত্মপ্রকাশের ধারা সৃষ্টির জন্য সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিও আমাদের অভিনন্দন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর