বুধবার, ১৩ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

কোরআন তিলাওয়াতকে গুরুত্ব দিতেন রসুল (সা.)

মুহম্মাদ ওমর ফারুক

কোরআন তিলাওয়াতকে গুরুত্ব দিতেন রসুল (সা.)

রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাহাবায়ে কিরামকে কোরআনে হাকিম খুব ভালো করে শিক্ষা দিতেন এবং কোরআন মুখস্থ করার ভিত্তিতেই তাদের পদমর্যাদা নির্ধারণ করতেন। কোনো লোক কোরআন মজিদ পাঠ করতে অপারগ হলে তিনি তাকে কোরআন মজিদ শোনার এবং বোঝার উপদেশ দিতেন, যাতে লোকটি আল কোরআনের আধ্যাত্মিক বরকত থেকে বঞ্চিত না হয়। হজরত আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণনা করেন, ‘রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদল লোককে কোথাও পাঠানোর সময় তাদের বললেন, তোমাদের যার যতটুকু কোরআন মজিদ মুখস্থ আছে, আমাকে শোনাও। তারা প্রত্যেকেই নিজ নিজ মুখস্থ অংশ শোনালেন। ওই দলে অল্পবয়স্ক এক তরুণ ছিলেন। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার কি সূরা বাকারাও মুখস্থ আছে? তরুণ বললেন, জি, মুখস্থ আছে। তখন তিনি বললেন, যাও তুমিই এই দলের নেতা।’ তিরমিজি ও অন্যান্য। আমাদের পূর্বপুরুষরা কোরআনুল কারিমের ফজিলত এবং তার তিলাওয়াতের উপকারিতা ও বরকত সম্পর্কে বেশ ওয়াকিবহাল ছিলেন। এ কারণেই তারা নিজেদের সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় আইন-কানুন কোরআনকে ভিত্তি করেই রচনা করেছিলেন এবং সরাসরি কোরআন থেকেই বিধান নিয়েছিলেন। কোরআনুল কারিমের তিলাওয়াতে তাদের অন্তর প্রশান্তি লাভ করত। এর শিক্ষা গ্রহণ ও দানের কাজে মশগুল থাকাই ছিল তাদের প্রতিদিনের ইবাদতের তালিকায় অন্যতম কাজ। এ কোরআন তাদের অন্তরের সুগভীর তলদেশ পর্যন্ত শিকড় গেড়েছিল এবং এর অর্থ তাদের আত্মার সঙ্গে গ্রোথিত হয়ে গিয়েছিল। ফলে আল্লাহ তাদের হাতে দুনিয়ার শাসন ক্ষমতা দান করেছিলেন। তা ছাড়া পরকালে তাদের জন্য প্রতিদান সওয়াব তো রয়েছেই। সেখানে রয়েছে তাদের জন্য সর্বোচ্চ মর্যাদার আসন। আমরা জেনে বুঝে কোরআনকে পেছনে ফেলে রেখেছি এবং কোরআন থেকে দূরে অবস্থান করছি। ফলে দুনিয়াও আমাদের হাত থেকে চলে গেছে এবং পরকালও আমাদের জন্য শূন্য! আমরা না পেলাম দুনিয়া, না পাব পরকাল।

হজরত আনাস (রা.) বর্ণনা করেন। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আমার সামনে আমার উম্মতের সওয়াব পেশ করা হয়েছে। এমনকি সেই খড়কুটোটিও বাদ দেওয়া হয়নি যা কোনো লোক মসজিদ থেকে বাইরে ফেলে দিয়েছে। এরপর আমার উম্মতের গুনাহও আমাকে দেখানো হলো। আমি তাতে এর চেয়ে বড় গুনাহ দেখতে পেলাম না যে, কোনো লোক কোরআনের কোনো সূরা বা আয়াত মুখস্থ করার পর তা ভুলে গেছে।’ তিরমিজি, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ। সুতরাং সমগ্র জিকির আজকার ও অজিফার তালিকায় কোরআন তিলাওয়াতকে প্রথম স্থান দেওয়ার জন্য আমি মুসলিম ভাইবোনদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আর এটা এভাবেই সম্ভব যে, প্রত্যেক ভাইবোন কোরআনুল কারিমের কিছু অংশের তিলাওয়াত নিজের প্রতিটি কর্মসূচির তালিকাভুক্ত করে নেবেন।

লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।

সর্বশেষ খবর