বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

বন্ডেড সুবিধার অপব্যবহার

দোষীদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনুন

বন্ডেড ওয়্যার হাউস সুবিধার নামে চলছে ‘এলোমেলো করে দে মা লুটে পুটে খাই’ কারবার। বিদেশ থেকে রপ্তানির উদ্দেশ্যে আমদানিকৃত পণ্যের একাংশ চলে যাচ্ছে কালোবাজারে। কখনো কখনো শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমাদানিকৃত পণ্যের পুরো অথবা সিংহ ভাগ কালোবাজারে বিক্রি করে ভুয়া রপ্তানি দেখিয়ে বিশাল অঙ্কের রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া হয়। রপ্তানিমুখী শিল্পের জন্য শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি হওয়া পণ্যের অবৈধ বাণিজ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশীয় শিল্প খাত। বন্ড সুবিধার পণ্য কালোবাজারে বিক্রি এবং চোরাকারবারি ঠেকাতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারমানের নির্দেশনার আলোকে গত দেড় মাসে ২৬টি ঝটিকা অভিযান চালিয়েছে ঢাকা কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট। এসব অভিযানে ৪০টি প্রতিষ্ঠানের ৩০ কোটি টাকার অনিয়ম উদঘাটন করা হয়েছে। স্মর্তব্য, রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক ও নির্বাচিত স্থানীয় শিল্প খাতে যারা শুল্কমুক্ত সুবিধায় কাঁচামাল আমদানি করে পণ্য তৈরির পর তা রপ্তানি করেন, তাদের সরকার বন্ড সুবিধা দেয়। ২০০০ সাল থেকে এ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। নিয়মানুযায়ী রপ্তানির শর্তে শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি হওয়া পণ্যসামগ্রী খালাস হওয়ার কথা আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওয়্যারহাউসে। কিন্তু চোরাকারবারিতে জড়িত সংঘবদ্ধ ব্যবসায়ী চক্র সে পণ্য বিক্রি করছে কালোবাজারে। সম্প্রতি গভীর রাতে এক অভিযানে বটম গ্যালারি, ট্রাউজার ওয়ার্ল্ডসহ সাতটি প্রতিষ্ঠানের পণ্যবোঝাই ট্রাক কালোবাজারে পণ্য বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়ার সময় আটক করেছে ঢাকা কাস্টমস বন্ডের কর্মকর্তারা। বিদেশ থেকে বন্ড সুবিধায় পণ্য আমদানি করে তা রপ্তানির বদলে কালোবাজারে বিক্রি করায় একদিকে যেমন সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে অন্য দিকে একই ধরনের পণ্যে উৎপাদনকারী দেশীয় শিল্প-প্রতিষ্ঠানগুলো লোকশানের সম্মুখীন হচ্ছে। তাদের অসম প্রতিযোগিতার মুখে পড়তে হচ্ছে। দেশীয় অর্থনীতির স্বার্থে বন্ডেড ওয়্যার হাউস সুবিধায় আনা পণ্য কালোবাজারে বিক্রির মতো অপরাধ দমনে সরকারকে কঠোর হতে হবে। এ অপকর্মে দায়ী প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল শুধু নয়, তাদের জেল জরিমানাসহ কঠোর শাস্তির আওতায় আনার বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে।

সর্বশেষ খবর