শুক্রবার, ১৫ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ

অব্যবস্থার অবসান কাম্য

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ উদ্বোধনকালে পড়াশোনার জন্য শিশুদের অতিরিক্ত চাপ না দিতে অভিভাবক, শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বলেছেন, প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে কোনোমতেই যেন কোমলমতি শিশুদের অতিরিক্ত চাপ দেওয়া না হয়। তা হলেই তারা নিজেদের ভিতরে একটা আলাদা শক্তি পাবে। তাদের শিক্ষার ভিতও শক্তভাবে তৈরি হবে। প্রধানমন্ত্রী লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে শিক্ষার্থীদের আরও বেশি সম্পৃক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষকে। বুধবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ-২০১৯ উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য তাৎপর্যের দাবিদার। আমাদের দেশে শিশুদের মহাজ্ঞানী ও মেধাবী বানানোর প্রবণতায় তাদের ওপর পড়াশোনার অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করা হয়, যা দুর্ভাগ্যজনক। এর ফলে পড়াশোনা বা জ্ঞান আহরণের প্রতি শিশুদের সহজাত আগ্রহ প্রকারান্তরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শিশুদের ওপর মানসিক অত্যাচার চালানো হয় কঠোর শৃঙ্খলা আরোপ করে। ফলে শিশুরা পড়াশোনাকে দেখে ভীতির চোখে। অথচ শিশুদের মনের ওপর চাপ সৃষ্টি না করে হাসি-খেলার পরিবেশেই শিক্ষার প্রতি তাদের আগ্রহ সৃষ্টি করা যায়। উন্নত দেশগুলোয় এ পদ্ধতিই অনুসরণ করা হয়। বাংলাদেশে প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে জাতীয় বাজেট থেকে বিপুল অর্থ ব্যয় করা হলেও সার্বিকভাবে অর্জন হতাশাজনক। প্রাথমিক শিক্ষকরা তুলনামূলকভাবে ভালো বেতন, ছুটিসহ সুযোগ-সুবিধা ভোগ করলেও পাঠদানের ক্ষেত্রে তাদের এক বড় অংশের অমনোযোগিতা ওপেন সিক্রেট। শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্যতার বদলে উৎকোচ সিংহভাগ ক্ষেত্রে নিয়ামক ভূমিকা পালন করায় অযোগ্যরাই কোনো কোনো ক্ষেত্রে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন- এমন অভিযোগও প্রকট। ফলে মানসম্মত শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে দেশের শিশুরা। ফলে আর্থিক সংগতি থাকলে সাধারণ কেউ নিজেদের সন্তানদের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠাতে চান না। দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থে প্রাথমিক শিক্ষা ক্ষেত্রে যে নৈরাজ্য চলছে তার অবসান ঘটাতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর