শনিবার, ২৩ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

ফিটনেসবিহীন গাড়ি

দায়বোধের অভাব এ অবস্থার জন্য দায়ী

রাজধানীর রাজপথগুলো যেন ফিটনেসবিহীন যানবাহনের ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন রুটে যেসব বাস চলাচল করে তার সিংহভাগই লক্কড়-ঝক্কড় ধরনের। ফিটনেসবিহীন গাড়ির চলাচল আইনগত দিক থেকে অবৈধ হওয়া সত্ত্বেও তা দেখার কেউ নেই। বাসচালকদের পাল্লাপাল্লির র‌্যাট রেসে প্রায়ই দুর্ঘটনায় কেড়ে নিচ্ছে মানুষের প্রাণ। পাল্লাপাল্লির কারণে রাজধানীতে চলাচলকারী ১ শতাংশ বাসও পাওয়া যাবে না যেগুলো দেহজুড়ে ঘষাঘষির চিহ্ন নেই। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার রাস্তায় বের হলেই চোখে পড়ে লক্কড়-ঝক্কড় মার্কা যানবাহন। বাস-মিনিবাসের বাম্পারসহ নানা অংশ খুলে ঝুলতে থাকে বিপজ্জনকভাবে। কোনোটার সামনের অংশ ভাঙা, স্থানে স্থানে ছোট-বড় ফোকলা। দরজা-জানালার অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়াও মুশকিল। বাসগুলোর কোনোটির রংচটা, কোনোটির ছাল ওঠা। জোড়াতালি দিতে দিতে সিট-কভারের ওপর পড়ে গেছে দুর্ভিক্ষের ছাপ। এসব গণপরিবহনের সঙ্গে যোগ হয়েছে ফিটনেসবিহীন ট্রাক, লরি, সিএনজি, টেম্পো, মাইক্রো ও প্রাইভেট কার। সেসব গাড়ির ইঞ্জিন ভয়ানক শব্দ তুলে, নিকষ কালো ধোঁয়া উড়িয়ে দাপিয়ে বেড়ায় রাজপথ-জনপথ। সড়ক ও পরিবহন খাতের নৈরাজ্য দিন দিন অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে। চালকদের একাংশের বেপরোয়া মনোভাবের কারণেই দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। রাজপথ দাপিয়ে বেড়ানো বেশির ভাগ বাস-মিনিবাস ফিটনেসবিহীন হলেও গাড়ির মালিক, রুট কমিটি, ট্রাফিক বিভাগ- কারও যেন সেদিকে দেখার ফুরসত নেই। রাজধানীর বিভিন্ন রুটে যেসব গাড়ি চলাচল করছে তার বেশির ভাগ চালকের কোনো লাইসেন্স নেই। এ ক্ষেত্রে গাড়ির মালিকের রাজনৈতিক প্রভাব কিংবা পরিবহন-সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোই অবৈধ গাড়ির রক্ষাকবচ হয়ে দাঁড়ায়। রাজধানীতে ফিটনেসবিহীন যানবাহনের আধিক্য ট্রাফিক ব্যবস্থার হতশ্রী চিত্রই তুলে ধরছে। এগুলো দেখার জন্য রাষ্ট্রীয় কোষাগারের অর্থে যাদের পোষা হয় তার সিংহভাগ যানবাহন মালিক ও চালকদের দেওয়া অর্থের প্রতি বেশি দায় বোধ করায় রাজধানী ক্রমান্বয়ে লক্কড়-ঝক্কড় মার্কা গাড়ির ভাগাড়ে পরিণত হচ্ছে- এমন অভিযোগ ওপেন সিক্রেট। এ নৈরাজ্য থেকে বেরিয়ে আসতে হলে সংশ্লিষ্টদের দায়বোধের ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনা জরুরি।

 

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর