শনিবার, ২৩ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গা বোঝা আর কতকাল

বাংলাদেশকে রেহাই দিন

জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার সুরক্ষাবিষয়ক সহকারী হাইকমিশনার ভলকার টার্ক অবশেষে বলেছেন, রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর নিয়ে জাতিসংঘের আপত্তি নেই। এর আগে সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হচ্ছিল, রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন হতে হবে স্বেচ্ছায়। ভাসানচরে যেতে তাদের যেহেতু আপত্তি রয়েছে সেহেতু তারা সেখানে স্থানান্তরের বিরোধিতা করছিলেন। ভাসানচর বসবাসের জন্য উপযুক্ত নয়, এমন তত্ত্বও খাড়া করেছিল জাতিসংঘের অঙ্গসংস্থাটি। সে অবস্থানে তাদের যে পরিবর্তন ঘটেছে তাকে সুমতি বলে অভিহিত করা যায়। তবে কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে নেওয়া নয়, আমরা চাই তাদের স্বদেশে প্রত্যাবর্তনে এখনই পদক্ষেপ নেওয়া হোক। রোহিঙ্গা সমস্যা বাংলাদেশের জন্য মাথাব্যথা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। তিন দশকের বেশি সময় ধরে লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী অবস্থান করছে বাংলাদেশে। গত বছরের রোহিঙ্গা ঢলে এ সংখ্যা ১১ লাখে পৌঁছেছে। নিজেদের সীমিত সম্পদ নিয়েও বাংলাদেশ শরণার্থীদের জন্য মানবিক দায়িত্ব পালন করছে। এজন্য যে অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ও পরিবেশগত সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে তা বাংলাদেশের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারের সঙ্গে আস্থার সম্পর্ক স্থাপনেও রোহিঙ্গা সমস্যা নানা ক্ষেত্রে অন্তরায় সৃষ্টি করছে। বাংলাদেশ চায় রোহিঙ্গারা তাদের দেশে সসম্মানে ফিরে যাক এবং পুনর্বাসিত হোক। বাংলাদেশে শরণার্থী শিবিরে এবং এর বাইরে সব মিলিয়ে ১১ লাখের বেশি মিয়ানমারের নাগরিক অবস্থান করছে তাদের দেশে ফিরিয়ে নেওয়া সে দেশের সরকারের দায়িত্ব বলে বিবেচিত হওয়া উচিত। মিয়ানমারের জাতীয় ঐক্যের স্বার্থেই রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান হওয়া উচিত এবং বাংলাদেশ সুপ্রতিবেশী হিসেবে এ ব্যাপারে সহযোগিতা দিতেও প্রস্তুত। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় বাংলাদেশ মিয়ানমারের পাশে থাকতে চায়। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও দুই দেশের সহযোগিতার সুযোগ বিদ্যমান। এ কারণেই বাংলাদেশ রোহিঙ্গা সমস্যার দ্রুত সমাধানে আগ্রহী। বাংলাদেশের পক্ষে লাখ লাখ উচ্ছৃঙ্খল বেপরোয়া মানুষের বোঝা দীর্ঘদিন বহন করা সম্ভব নয়। তাদের স্বদেশে যেতে আপত্তি থাকলে বাংলাদেশকে রেহাই দিয়ে তাদের অন্য কোনো দেশে স্থানান্তরের ব্যবস্থা করা হোক।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর