রবিবার, ২৪ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

নামাজে অলসতার জন্য শাস্তি পেতে হবে

মুফতি ওলিউল্লাহ পাটোয়ারী

নামাজে অলসতার জন্য শাস্তি পেতে হবে

ইচ্ছাকৃতভাবে নামাজ ছেড়ে দেওয়া কঠিন গুনাহর নামান্তর। কেননা রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আমাদের মাঝে ও তাদের (কাফিরদের) মাঝে অঙ্গীকার হলো নামাজ। সুতরাং যে ব্যক্তি নামাজ ছেড়ে দেবে সে কাফির হয়ে যাবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আল্লাহর বান্দা ও কাফির-মুশরিকের মধ্যে পার্থক্য হলো নামাজ ছেড়ে দেওয়া।’

তবে যে ব্যক্তি নামাজের ব্যাপারে অলসতা করবে চাই সে অলসতা যথাসময়ে আদায় না করার মাধ্যমে হোক বা ঘুমের মাধ্যমে হোক কিংবা শরিয়তসম্মত পদ্ধতিতে নামাজ আদায়ে ত্রুটির মাধ্যমে হোক, সে কাফির না হলেও তার ব্যাপারে কঠিন শাস্তির হুমকি রয়েছে। বুখারিতে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দীর্ঘ হাদিসে এসেছে : ‘আমরা এক শায়িত ব্যক্তির কাছে এলাম। তার মাথার কাছে পাথর হাতে নিয়ে অন্য একজন লোক দাঁড়িয়ে ছিল। দাঁড়ানো ব্যক্তি শায়িত ব্যক্তির মাথায় সেই পাথর নিক্ষেপ করছে। পাথরের আঘাতে তার মাথা চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যাচ্ছে এবং পাথরটি বলের মতো গড়িয়ে অনেক দূরে চলে যাচ্ছে। লোকটি পাথর কুড়িয়ে আনতে আনতে আবার তার মাথা ভালো হয়ে যাচ্ছে। দাঁড়ানো ব্যক্তি প্রথমবারের মতো আবার আঘাত করছে এবং তার মাথা চূর্ণবিচূর্ণ করে দিচ্ছে। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সফরসঙ্গী ফেরেশতাদ্বয়কে জিজ্ঞাসা করলেন, কী অপরাধের কারণে তাকে এভাবে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে? উত্তরে তারা বললেন, এই ব্যক্তি কোরআন শিক্ষা করেছিল। কিন্তু কোরআন অনুযায়ী আমল করেনি এবং সে ফরজ নামাজের সময় ঘুমিয়ে থাকত। কিয়ামত পর্যন্ত তাকে এভাবে শাস্তি দেওয়া হবে।’

আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘ধ্বংস ওইসব নামাজির জন্য যারা নামাজের ব্যাপারে উদাসীন।’ সূরা মাউন, আয়াত ৪-৫।  হাফিজ ইবনে কাসির (রহ.) এ আয়াতদ্বয়ের ব্যাখ্যায় বলেন, ‘তারা হয়তো প্রথম ওয়াক্তে নামাজ আদায় না করে সবসময় বা অধিকাংশ সময় দেরি করে নামাজ আদায় করে থাকে। অথবা নামাজের রুকন ও শর্তাবলি যথাযথভাবে আদায়ের ব্যাপারে গাফিলতি করে অথবা তারা নামাজে মনোযোগ দেয় না এবং নামাজে কোরআন তিলাওয়াতের সময় তারা এর অর্থের মাঝে গবেষণা করে না।’

রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি নামাজের হেফাজত করবে কিয়ামতের দিন নামাজ তার জন্য আলো, তার ইমানের দলিল ও নাজাতের উপায় হয়ে যাবে। আর যে ব্যক্তি নামাজের হেফাজত করবে না কিয়ামতের দিন তার জন্য কোনো আলো থাকবে না, তার ইমানের পক্ষে কোনো প্রমাণ এবং তার নাজাতের কোনো উপায় থাকবে না। কিয়ামতের দিন সে ফিরাউন, কারুন, হামান এবং উবাই বিন খালফের সঙ্গে হাশরের মাঠে উপস্থিত হবে।’

 

লেখক : খতিব, বাইতুন নূর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর