বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

বিচারব্যবস্থার আধুনিকায়ন

বিচারপ্রার্থীদের ভোগান্তি কমাবে

বিলম্বিত বিচার বিচারহীনতার নামান্তর। দেশের আদালতগুলোয় মামলার যে পাহাড় গড়ে উঠেছে তা বিচারপ্রার্থীদের বিচারপ্রাপ্তিকে কার্যত অনিশ্চিত করে তুলছে। এ সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠতে সরকার ও বিচার বিভাগের পক্ষ থেকে নেওয়া হচ্ছে নানামুখী ব্যবস্থা। এর অন্যতম উদ্যোগ হলো বিচারব্যবস্থার সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তির সম্পৃক্ততা ঘটানো। বিচারপ্রার্থীদের দুর্ভোগ লাঘবে বিচারব্যবস্থার আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে দ্রুত বিচারের সক্ষমতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে। এই আধুনিকায়নে ই-জুডিশিয়ারি প্রকল্পের আওতায় সারা দেশে ১ হাজার ৪০০ এজলাসকে ই-আদালত কক্ষে রূপান্তর করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্রীয় ডাটা সেন্টার স্থাপনের পাশাপাশি ৬৩ জেলায় স্থাপন করা হচ্ছে মাইক্রো ডাটা সেন্টার। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে মামলা দায়ের থেকে শুরু করে রায়ের কপি পর্যন্ত সবই মিলবে অনলাইনে। অনলাইনেই জানা যাবে মামলার যাবতীয় তথ্য। ২ হাজার ২১০ কোটি টাকার এ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সম্প্রতি পরিকল্পনা কমিশনের প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি) সুপারিশ করেছে। শিগগিরই এটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের সভায় অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। অনুমোদন পেলে ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। বর্তমানে সারা দেশে সাড়ে ৩৫ লাখ মামলা বিচারাধীন। অথচ মামলা নিষ্পত্তির জন্য উচ্চ আদালতে ১০৩ ও নিম্ন আদালতে ১ হাজার ৭৫০ জনের মতো বিচারক কর্মরত। এ প্রেক্ষাপটে মামলাজট নিরসনে সরকার ও আইন মন্ত্রণালয় দীর্ঘমেয়াদে যেসব উদ্যোগ নিয়েছে তার মধ্যে ‘ই-জুডিশিয়ারি’ ব্যবস্থা চালুর বিষয়টি উল্লেখযোগ্য। স্মর্তব্য, দেশের বিচারব্যবস্থার আধুনিকায়নে ২০১৬ সালে ইউএনডিপির অর্থায়নে সিলেট জেলা আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণে ভয়েস রেকর্ডিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়। সরকার দেশের আদালতগুলোয় ই-জুডিশিয়ারি চালুর যে যুগান্তকারী উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে এর পেছনে সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ নিয়ামক হিসেবে কাজ করবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে বিচারপ্রার্থীরা মামলা সম্পর্কিত সব তথ্য ঘরে বসেই পাবেন। মামলা দায়ের থেকে রায়ের কপি-  সবকিছু পেতে তাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হবে না।

রায়ের নকল কপিও পাওয়া যাবে অনলাইনে নির্দিষ্ট ফি পরিশোধের মাধ্যমে; যা একটি যুগান্তকারী ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হবে।

সর্বশেষ খবর