রবিবার, ৩১ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

দরুদের বিস্ময়কর ক্ষমতা

মাওলানা আবদুর রশিদ

দরুদের বিস্ময়কর ক্ষমতা বার বার প্রমাণিত হয়েছে। দরুদের বরকতে মহান আল্লাহ যে বান্দার ইচ্ছা পূরণে সায় দেন তার প্রমাণ হজরত আলী (রা.)-এর জীবনের একটি বাস্তব ঘটনা। একদা কুরাইশ নেতা আবু জাহেল কতিপয় সহযোগীকে নিয়ে এক স্থানে বসে গল্প করছিলেন। এ সময় একজন ভিক্ষুক এসে তার কাছে কিছু ভিক্ষার আবেদন করল। তারা তখন লোকটিকে ঠাট্টা করে বলল : ওই যে দেখছ না, কাবাঘরে আলী বসে আছে, তুমি তার কাছে গিয়ে ভিক্ষা চাও সে বড় দানশীল। তোমাকে সে বহু মাল দান করবে। কাফিরদের কথা ও পরামর্শ অনুযায়ী ভিক্ষুক অন্দরে প্রবেশ করে আল্লাহর নামে হজরত আলী (রা.)-এর কাছে ভিক্ষা প্রার্থনা করল। অথচ তখন তার কাছে এমন কোনো জিনিস ছিল না যা দিয়ে ভিক্ষুককে বিদায় দেবেন।

হজরত আলী (রা.) ভিক্ষুককে খালি হাতে ফিরিয়ে দিতে পারেন না। তাই তিনি ভিক্ষুকের উভয় হাতকে মুষ্টিবদ্ধ করিয়ে কিছু পড়ে ফুঁ দিয়ে বললেন, তুমি কাফিরদের সামনে গিয়ে তোমার হাত খুলবে এর আগে খুলবে না। যখন সে কাফিরদের কাছে এসে হাতের মুষ্টি খুলল, তখন তারা সবাই তার হাতে অতি মূল্যবান একটি মুক্তা দেখতে পেয়ে আশ্চর্য হয়ে গেল। কেননা, ওই মুক্তাটির মূল্য তখন ছিল এক হাজার দিনার। তারা কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে ভিক্ষুককে জিজ্ঞাসা করল, কী ব্যাপার! আলী কোথা থেকে তোমাকে এত মূল্যবান মুক্তা দিল? ভিক্ষুক উত্তর দিল, তিনি তো আমার হাতে কেবল একটি ফুঁ দিলেন, আর তাতেই এ মুক্তাটির জš§ হয়ে গেল। কিন্তু কাফিরদের মনে খটকাই রয়ে গেল। তাদের সন্দেহ দূর হলো না। কারণ হজরত আলী তো ধনী ছিলেন না। তাই তারা আলী (রা.)-এর কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, পরিশ্রম ও কষ্ট ছাড়া তোমার কাছে এত মূল্যবান মুক্তা কোথা থেকে এলো? তখন তিনি উত্তর দিলেন, যখন ভিক্ষুক আমার কাছে ভিক্ষা প্রার্থনা করল, তখন আমার কাছে কিছুই ছিল না, বরং আমার লজ্জা হতে লাগল যে, কেমন করে আমি ভিক্ষুককে রিক্ত হস্তে ফেরাব? সুতরাং আমি ভিক্ষুকের হস্তে দরুদ শরিফ পাঠ করে ফুঁ দিয়ে দিলাম, এর বরকতেই আল্লাহতায়ালা মুক্তা সৃষ্টি করে দিয়েছেন। এ কথা শুনে কাফিররা অত্যন্ত বিস্মিত হলো, এমনকি এ সময় তিন কাফির ইসলাম গ্রহণ করল। [সূত্র : এ কাহিনিটি মুহাদ্দিস মাওলানা শায়খ আবু বকর (রা.) তাঁ কিতাবে লিখেছেন।]

            লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর