রবিবার, ৩১ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

কুষ্টিয়ায় কিশোরীর আত্মহত্যা

বখাটেদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত হোক

কুষ্টিয়ায় বখাটেদের অত্যাচারের শিকার এক স্কুলছাত্রী বাড়িতে এসে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। আত্মহত্যার আগে লেখা চিরকুটে সে তার মৃত্যুর জন্য বখাটেদের দায়ী করেছে। চিরকুটে লেখা ছিল জয়নাল আমাকে জোর করে নিয়ে গেছে। আর তোমার মানসম্মান ডোবাল রাজপাড়ার মিঠুন, আঙুর। ... আমি যদি মরে থাকি, তাহলে তুমি মনে করবা রাজপাড়ার ছেলেদের জন্য আমি মারা গিয়েছি। কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার কেবিএইচ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ওই কিশোরী (১৫) তার চাচাতো বোনের বিয়ে উপলক্ষে গত বৃহস্পতিবার বিকালে আমলা বাজারে ফুল কিনতে যায়। পথিমধ্যে এলাকার পাঁচ বখাটে জয়নাল, মিঠুন, আঙুর, রাজু ও পারভেজ জোর করে তাকে পাশের আমলা আলুবীজ খামারে নিয়ে যায়। তার চিৎকারে লোকজন এগিয়ে এলে বখাটেরা পালিয়ে যায়। স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ কিশোরীকে উদ্ধার করে স্থানীয় মহিলা মেম্বার রেজেলা খাতুনের সঙ্গে বাড়ি পাঠায়। পথিমধ্যে বখাটেরা মেম্বারকে হুমকি দিয়ে অটোরিকশা থামিয়ে কিশোরীকে পাশের ছাদিমনের বাড়িতে নিয়ে যায়। এ সময় তার ওপর শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়। বাড়ি ফিরেই চাচার বাসায় গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করে কিশোরী। তার পড়ার টেবিলে একটি চিরকুট পাওয়া যায়। সেখানে বখাটেদের অত্যাচারের বিষয় তুলে ধরেছে সে। কিশোরীর স্বজনদের অভিযোগ, যৌন হয়রানির শিকার হওয়ায় লজ্জা ও অপমানের হাত থেকে রেহাই পেতে সে আত্মহত্যা করেছে। ন্যক্কারজনক এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত বখাটেদের কঠোর শাস্তির দাবি করেছেন পরিবারের সদস্যসহ এলাকাবাসী। কুষ্টিয়ার মিরপুরে যৌন হয়রানির প্রতিবাদে এক স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। আমাদের দেশের গ্রামাঞ্চলে এমনকি শহরাঞ্চলেও বখাটে নামের মানুষ শকুনদের উৎপাত কীভাবে বেড়ে চলেছে এক কিশোরীর আত্মহত্যা তারই প্রমাণ। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, পুলিশ বখাটেদের বিরুদ্ধে তৎক্ষণাৎ কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি। তাদের সামাজিক প্রভাবের কারণে হয়তো পুলিশ এ অসহায়ত্বের পরিচয় রেখেছে। আমরা আশা করব, এ কাপুরুষোচিত অবস্থা থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বের হয়ে এসে অপরাধীদের ধরার চেষ্টা করবেন। বিচারের মাধ্যমে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে প্রশাসন সম্ভাব্য সবকিছু করবে- আমরা এমনটিই দেখতে চাই।

সর্বশেষ খবর