রবিবার, ৭ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

ঢাকায় ঝুঁকিমুক্ত বসবাস

বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নিতে হবে

অপরিকল্পিত নগরায়ণ ঢাকাকে বসবাসের অযোগ্য করে তুলছে। এক মাসের ব্যবধানে দুটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় শতাধিক মানুষের প্রাণহানি রাজধানীবাসীর নিরাপত্তা সম্পর্কে সংশয় করেছে। আগুন লাগার জন্য ঢালাওভাবে ভবন নির্মাণে বিল্ডিং কোড না মেনে চলাকে দায়ী করা হয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, সব নিয়ম অনুসরণ করে ভবন তৈরির পরও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। কারণ একেবারে ঝুঁকিমুক্ত বলে কিছু নেই। তবে অনিয়ম হলে ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়। ঝুঁকি থাকবে, তবে তা যতটা সম্ভব কমিয়ে আনতে হবে। বাস্তবতার নিরিখে ভবন না ভেঙেও তা ঝুঁকি কমিয়ে আনা সম্ভব। এজন্য প্রয়োজন সর্বাত্মক চেষ্টা আর সদিচ্ছা। রাজধানীর বহুতল ভবনগুলো পরিদর্শন করে ঝুঁকি ও অনিয়মের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের যে প্রক্রিয়া চলছে তাতে অনেক ত্রুটি-বিচ্যুতি উঠে এসেছে। কোথাও জরুরি বহির্গমন পথ নেই, কোথাও নেই পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণব্যবস্থা, কেউ আবাসিকের অনুমোদন নিয়ে বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করছেন। এসব তথ্য সামনে রেখে সমস্যা সমাধানের পথ বেছে নিতে হবে। ঝুঁকি মোকাবিলায় বড় বড় কাঠামো না ভেঙে মডিফিকেশনের মাধ্যমে ঝুঁকি সর্বনিম্ন পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে। গার্মেন্ট কারখানাগুলোয় এ বিষয়টি অনুসরণ করা হয়েছে। যাদের জরুরি বহির্গমন পথ ছিল না তারা ভবনের বাইরে তা তৈরি করেছে। অগ্নিকাণ্ডের মতো দুর্ঘটনা মোকাবিলায় সার্বক্ষণিক পানির ব্যবস্থা করেছে। বৈদ্যুতিক ঝুঁকি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে। রাজধানীতে ৬ হাজারের ওপর বহুতল ভবন আছে। কিছু ভবন নিয়ম মেনে তৈরি হলেও অধিকাংশেরই অনিয়ম-ত্রুটি ধরা পড়ছে। হাজারো ঝুঁকিপূর্ণ বহুতল ভবনকে ঝুঁকিমুক্ত করা দুরূহ কাজ হলেও দায়িত্বপ্রাপ্তরা সততার সঙ্গে ভবনগুলো পরীক্ষা করে প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নিলে আগুন ও ভূমিকম্পের ঝুঁকি থেকে রাজধানী অনেকটাই নিরাপদ হয়ে উঠবে। এ দুই ধরনের ঝুঁকির ক্ষেত্রে প্রথমেই নজর দিতে হবে রাজধানীর ঘিঞ্জি বাজার বা মার্কেটগুলোর দিকে। এগুলোর অবস্থান এতটাই ঝুঁকিপূর্ণ যে কোনো কারণে আগুন লাগলে বিপর্যয় অনিবার্য হয়ে ওঠে। পাশাপাশি রাজধানীতে কোথাও যাতে অপরিকল্পিতভাবে কোনো ভবন গড়ে না ওঠে সেদিকে নজর দিতে হবে। এ ব্যাপারে দুই সিটি করপোরেশন ও রাজউককে সততার সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। রাজধানীতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রাণহানি অহরহ ঘটছে। বড় মাপের ভূমিকম্প হলে পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে, তা সহজেই অনুমেয়। সে কথা ভেবেই বাস্তবমুখী প্রতিকারমূলক পদক্ষেপ নিতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর