বৃহস্পতিবার, ১১ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

মায়ের মর্যাদা

মাওলানা মুহম্মদ সাহেব আলী

ইসলাম মায়ের মর্যাদাকে মহিমান্বিত করেছে। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘মায়ের পায়ের তলে সন্তানের বেহেশত।’ ইবনে মাজা, নাসায়ি। এ হাদিসের মাধ্যমে স্পষ্টত বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে সন্তান জান্নাতে ঠাঁই পাবে কিনা তা মায়ের সন্তুষ্টির ওপর নির্ভরশীল। প্রতিটি মমিনকে যেমন আল্লাহর সন্তুষ্টিবিধানে সচেষ্ট থাকতে হবে তেমনি জননীর প্রতি তাদের শ্রদ্ধাবোধের প্রকাশ ঘটাতে হবে। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিহাদে যাওয়ার চেয়েও মায়ের সেবা করাকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। বুখারি, মুসলিমের হাদিসে বর্ণিত আছে, এক লোক রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে এসে বললেন, হে আল্লাহর রসুল! কোন ব্যক্তি আমার সদাচরণ ও আনুগত্য পাওয়ার সবচেয়ে বেশি অধিকারী? তিনি এরশাদ করলেন, তোমার মা। তিনি আরজ করল, তারপর কে? তিনি বললেন, তোমার মা। আবার তিনি আরজ করলেন, তারপর কে? তিনি বললেন, তোমার মা। পুনরায় তিনি নিবেদন করলেন, তারপর কে? তিনি জবাব দিলেন, তোমার পিতা। সন্তানের জন্য তুলনামূলকভাবে মা-ই বেশি ত্যাগ স্বীকার করেন। গর্ভধারণ, দুধপান, রাত জেগে সন্তানের তত্ত্বাবধানসহ নানাবিধ কষ্ট একমাত্র মা-ই সহ্য করেন। তা ছাড়া সন্তানের প্রতি মা-ই সবচেয়ে বেশি যতœবান এবং বেশি আদর-সোহাগ করেন।

একবার হজরত ইবনে ওমর (রা.) দেখতে পেলেন, এক লোক তার মাকে পিঠে নিয়ে আল্লাহর ঘর তাওয়াফ করছেন। লোকটি জিজ্ঞাসা করলেন, হে ইবনে ওমর, আপনি কি মনে করেন আমি মাকে নিয়ে এভাবে তাওয়াফ করায় তার কিছু ঋণ পরিশোধ করতে পারলাম? ইবনে ওমর (রা.) বললেন, তোমাকে গর্ভে ধারণ করার সময়ের নানাবিধ যাতনার একটির ঋণও শোধ করতে পারনি। তবে তুমি ভালো কাজ করছ, তোমার এ অল্প কাজেই আল্লাহ তোমাকে বহু পুণ্য দেবেন। হজরত আবু হোরায়রা (রা.) কর্তৃক বর্ণিত। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘চার শ্রেণির লোককে আল্লাহ কখনই বেহেশতে প্রবেশ করতে দেবেন না, আর জান্নাতের নিয়ামতরাজির স্বাদ নেওয়ারও সুযোগ দেবেন না। ১. মাদকাসক্ত ২. সুদখোর ৩. এতিমের মাল অন্যায়ভাবে আত্মসাৎকারী ৪ পিতা-মাতার অবাধ্যচারী। তবে তারা তওবা করলে ভিন্ন কথা।’ হাকেম।

            লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর