বৃহস্পতিবার, ১১ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

পিতা-মাতার ভরণপোষণ

তদারকির উদ্যোগ প্রশংসনীয়

পিতা-মাতার ভরণপোষণের দায়িত্ব সন্তানের জন্য আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক করে সরকার কয়েক বছর আগে আইন পাস করলে তা সব মহলে প্রশংসিত হয়। পিতা-মাতার ভরণপোষণের ক্ষেত্রে সন্তানরা তাদের আইনগত দায়িত্ব পালন করছে কিনা তা তদারকির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ ব্যাপারে সমাজকল্যাণ মন্ত্রীকে সভাপতি করে বিষয়টির তদারকিতে জাতীয় কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জাতীয় কমিটির পাশাপাশি জেলা, উপজেলা ও শহর পর্যায়েও এ-সংক্রান্ত কমিটি গঠন করা হবে। উল্লেখ্য, পিতা-মাতার ভরণপোষণ আইন, ২০১৩ অনুযায়ী পিতা-মাতা, দাদা-দাদি ও নানা-নানীর ভরণপোষণ করা সন্তানের নৈতিক ও আইনি দায়িত্ব। এতে ব্যত্যয় ঘটলে আইনে তাদের শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। যদি কোনো প্রবীণ তার সন্তানদের বিরুদ্ধে ভরণপোষণ না করার অভিযোগ আনেন, অভিযোগ প্রমাণিত হলে সন্তানদের ১ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে তিন মাসের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। এ আইনের ৩ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো সন্তান তার বাবা বা মাকে অথবা উভয়কে তার বা ক্ষেত্রমতো তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনো বৃদ্ধনিবাস কিংবা অন্য কোথাও একত্রে কিংবা আলাদাভাবে বসবাসে বাধ্য করতে পারবে না। তা ছাড়া সন্তান তার মা-বাবার স্বাস্থ্য সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজখবর রাখবে, প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা ও পরিচর্যা করবে। কোনো সন্তানের স্ত্রী, ছেলেমেয়ে বা নিকটাত্মীয় যদি বৃদ্ধ মা-বাবার প্রতি সন্তানকে দায়িত্ব পালনে বাধা দেয় তাহলে তারাও একই অপরাধে অপরাধী হবে। ফলে তারাও একই শাস্তির মুখোমুখি হবে। এ আইনে বাবার অবর্তমানে দাদা-দাদি এবং মায়ের অবর্তমানে নানা-নানীর ভরণপোষণ নিশ্চিত করার বাধ্যবাধকতাও রাখা হয়েছে। জাতীয় কমিটি বা স্থানীয় পর্যায়ে গঠিত কমিটি গঠনের ফলে বাবা-মায়ের ভরণপোষণ করা হচ্ছে না এমন কোনো অভিযোগ পেলে তার প্রতিকারে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া সহজতর হবে। স্থানীয় পর্যায় থেকে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত সব প্রশাসন বাবা-মায়ের ভরণপোষণের আইনি সুরক্ষার ব্যাপারে সচেতন হবে। আইনটির পক্ষে প্রবল জনমত থাকায় কারোর পক্ষে তা লঙ্ঘন করাও কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। আমরা আইন তদারকে কমিটি গঠনের উদ্যোগকে স্বাগত জানাই এবং আশা করতে চাই কমিটিগুলো প্রবীণদের জন্য আশার আলো হিসেবে বিবেচিত হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর