শুক্রবার, ১২ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

বন্ড সুবিধার অপব্যবহার

দেশি শিল্পের ওপর আঘাত হানছে

বন্ডের ওয়্যার হাউস সুবিধায় আনা পণ্য কালোবাজারে পাচার হয়ে যাওয়ায় সরকার যেমন বিপুল অঙ্কের রাজস্ব হারাচ্ছে তেমন কাগজ, বস্ত্রসহ বিভিন্ন শিল্পের জন্য বিসংবাদ সৃষ্টি করছে। দেশের কাগজ শিল্প বিপর্যস্ত অবস্থার শিকারে পরিণত হচ্ছে রপ্তানিমুখী শিল্পের জন্য বন্ড সুবিধায় আনা কাগজের সিংহভাগ কালোবাজারে পাচার হয়ে যাওয়ায়। দেশের কাগজ কলগুলো যে কাগজ উৎপাদন করছে তা ভ্যাটসহ অন্যান্য রাজস্ব পরিশোধ করেই বাজারজাত করে। অন্যদিকে বিনা শুল্কে আমদানিকৃত কাগজ বন্ড সুবিধায় আমদানি করে তা কালোবাজারে বিক্রি করে দেওয়ায় দেশি কাগজ শিল্প অসম প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হচ্ছে। বস্ত্র শিল্পের জন্যও সর্বনাশ ডেকে আনছে রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাকের উপকরণ হিসেবে আমদানি করা সুতা ও বস্ত্রের সিংহভাগ কালোবাজারে পাচার হওয়ার কারণে। বস্ত্র ও সুতা শিল্প মালিকদের অভিযোগ শুল্কমুক্ত আমদানির মিথ্যা ঘোষণা ও চোরাপথের সুতা এবং কাপড় স্থানীয় বাজারে অবাধে বাজারজাতের কারণে প্রায় ৬০ শতাংশ পাওয়ার লুম বন্ধ হওয়ার পথে। প্রাইমারি টেক্সটাইল খাতসহ এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাই বর্তমানে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তাই অনতিবিলম্বে যদি প্রাইমারি টেক্সটাইল খাতের বিদ্যমান সংকট উত্তরণের লক্ষ্যে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা সম্ভব না হয় তাহলে নিশ্চিতভাবে এ শিল্প বিপর্যয়ের সম্মুখীন হবে। তারা বন্ডেড ওয়্যার হাউসের মাধ্যমে আমদানি হওয়া সুতা ও কাপড়ের মোড়কে সুস্পষ্টভাবে ‘রপ্তানি পণ্য তৈরিতে ব্যবহারের জন্য আমদানি’ বা ‘বিক্রির জন্য নয়’ লেখার নিয়ম চালু করার দাবি করেছেন। বন্ডেড ওয়্যার হাউস ব্যবস্থাকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য আরও কার্যকর তদারকির দাবি করেছেন বস্ত্র ও সুতা মিল মালিকরা। যে সব রুট বা পথ দিয়ে টেক্সটাইল পণ্য সামগ্রী আমদানি হয় সে সব শুল্ক স্টেশনের চেকিং ব্যবস্থা কঠোর ও সার্বিক মনিটরিং নিশ্চিত করারও দাবি করেছেন তারা। বন্ডের ওয়্যার হাউস সুবিধায় আমদানি করা কাগজ, সুতা এবং বস্ত্র কালোবাজারে বিক্রি হওয়ায় এসব শিল্পে কর্মরত লাখ লাখ মানুষের জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে পড়েছে। বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে এ ব্যাপারে সরকারকে সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বন্ড সুবিধার অপব্যবহার রোধে নিতে হবে পদক্ষেপ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর