শনিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

পরিবহনে চাঁদাবাজি

রমজানে বাড়তি নজর রাখুন

পরিবহন চাঁদাবাজির কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন যানবাহন চালক, মালিকসহ সংশ্লিষ্ট সবাই। সন্ত্রাসীরা রাখঢাক না রেখে সরাসরি ‘চাঁদা’ তুললেও পরিবহন শ্রমিকরা চাঁদা নেন শ্রমিককল্যাণের নামে। রাস্তা ক্লিয়ার ফি, ঘাট ও টার্মিনাল সিরিয়াল, পার্কিং ফির নামে চলে বেপরোয়া চাঁদাবাজি। পরিবহন মালিকরাও কম যান না চাঁদাবাজিতে। পাড়ামহল্লার মস্তান কিংবা পেশাদার সন্ত্রাসী হিসেবে যাদের উত্থান একপর্যায়ে তারা জড়িয়ে পড়েছেন পরিবহন ব্যবসায়ও। সেখানে গিয়েও তারা ছাড়তে পারেননি পুরনো অভ্যাস। পেশিশক্তির জোরে এদের কেউ কেউ পরিবহন মালিক সমিতির নেতাও বনে গেছেন। তাদের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ পরিবহন মালিকরা। শ্রমিকনেতা নামধারীদের চাঁদাবাজি তো প্রথাগত বিষয় হিসেবে পরিচিত। চাঁদাবাজিতে কম যান না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। রাজনৈতিক নেতা, সন্ত্রাসী সবারই টার্গেট থাকে পরিবহন খাত। এসব চাঁদাবাজির ধকল মেটাতে গিয়ে পরিবহন সেক্টর বেহাল অবস্থায় পতিত হয়েছে। সেখানে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হলে পরিবহন শ্রমিক সংগঠন, মালিক সমিতি, প্রশাসনসহ সরকারের দায়িত্বশীল মহলের সমন্বিত উদ্যোগ জরুরি হয়ে উঠেছে। তবে সংগতভাবেই প্রশ্ন ওঠে- বিড়ালের গলায় ঘণ্টি পরাবে কে? কর্তৃপক্ষীয় নজরদারির অভাবে লাগামহীন চাঁদাবাজি পরিবহন খাতের নিয়তির লিখন হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজধানীর বাস টার্মিনালগুলোয় যে চাঁদাবাজি হয় তা এককথায় অবিশ্বাস্য। টার্মিনালে ঢোকার সময় যেমন চাঁদা দিতে হয় তেমন বের হওয়ার সময় গুনতে হয় টাকা। পণ্যবাহী ট্রাকগুলোও বেপরোয়া চাঁদাবাজির শিকার। এ ব্যাপারে এগিয়ে পুলিশবাহিনীর কোনো কোনো অসৎ সদস্য। চাঁদাবাজির কারণেই নিত্যপণ্যের দামে তার অশুভ প্রতিক্রিয়া পড়ছে। বিশেষত আসন্ন মাহে রমজানে নিত্যপণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখতে হলে পরিবহন চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। পরিবহন চাঁদাবাজির মাধ্যমে রাজনৈতিক টাউট, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অসৎ সদস্য, অসৎ পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতারা লাভবান হওয়ার বিপরীতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সাধারণ মানুষ। বাড়তি ভাড়া ও পণ্যের বাড়তি দাম পরিশোধ করতে বাধ্য হয় তারা। পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে চাঁদাবাজি বন্ধের উদ্যোগ নিতে হবে এখনই।

 

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর