রবিবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

ধর্ষকদের দাপট বাড়ছে

মানুষ-শকুনদের ঠেকাতে হবে

ধর্ষক নামের মানুষ-শকুনদের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি পেয়েছে আশঙ্কাজনকভাবে। এর একটি অতি ক্ষুদ্র অংশ মামলা ও অন্যান্য কারণে প্রকাশ্যে আসছে। সে হিসেবে ধর্ষণসংক্রান্ত মামলা বৃদ্ধির নিরিখে ধর্ষণের ঘটনা বেড়েছে এমন কথা হলফ করে বলা কঠিন। তবে এসব বিতর্কে না গিয়েও বলা যায়, দুনিয়ায় যেসব দেশ নারীদের জন্য অনিরাপদ বাংলাদেশ তার একটি। আফ্রিকার কিছু দেশ বাদে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন-জাতীয় অপরাধ উপমহাদেশের দেশগুলোতেই ঘটে বেশি। বাংলাদেশ প্রতিদিনের শীর্ষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একের পর এক ধর্ষণ ও যৌন সহিংসতার ঘটনা ঘটলেও এর লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না। বিকৃত রুচির একশ্রেণির মানুষের বিকৃতি থেকে রেহাই পাচ্ছে না কোমলমতি শিশুরাও। ঘরে-বাইরে সর্বত্রই নারী ও শিশুরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে সামাজিক জীবনে। চলতি বছরের গত সাড়ে তিন মাসে ৩৯৬ জন নারী-শিশু হত্যা, ধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। পুলিশ সদর দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী সারা দেশে নারী ও শিশু নির্যাতন দমনের মামলা হয়েছে ১ হাজার ১৩৯টি এবং হত্যা মামলা হয়েছে ৩৫১টি। বেসরকারি সংগঠন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী চলতি মাসের প্রথম ১৫ দিনে সারা দেশে ৪৭ শিশু ধর্ষণ, ধর্ষণচেষ্টা ও যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে। ৪৭ শিশুর মধ্যে ধর্ষণের শিকার ৩৯ জন। শিশু ধর্ষণের ঘটনায় শিশুর শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক জীবনে যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে তা সহজে অনুমেয়। যৌন হয়রানির কারণেই বাংলাদেশের বাবা-মায়েরা তাদের কন্যাসন্তানকে বাল্যবিয়ে দিতে বাধ্য হন। কন্যাশিশুদের পড়াশোনা বন্ধের পেছনেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে বখাটে নামে মানুষ-শকুনদের ভয়। নারী শিক্ষার হার বাড়াতে এবং বাল্যবিয়ে বন্ধ করতে হলে ধর্ষক ও বখাটে নামের মানুষ-শকুনদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে হবে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, নারীর সম্ভ্রমহানি ও নারী নির্যাতনের ঘটনা বাংলাদেশ সম্পর্কে বহির্বিশ্বে ভুল ধারণা সৃষ্টি করছে। আমাদের দেশটি আদৌ সভ্য কিনা সে সংশয় সৃষ্টি করছে। নারীর ক্ষমতায়ন এবং জাতীয় অর্থনীতিতে নারীর অংশীদারিত্ব উন্নয়নশীল দেশগুলোর নিরিখে ঈর্ষণীয় অবস্থানে থাকা সত্ত্বেও কিছু মানুষবেশী শকুনের কারণে তা ব্যাহত হবে- এটি কাম্য হওয়া উচিত নয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর