শনিবার, ৪ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

পুরান ঢাকায় কেমিক্যাল গোডাউন

জননিরাপত্তার স্বার্থে সরিয়ে নিন

পুরান ঢাকার নিমতলী ও চকবাজারে দুটি ভয়াবহ অগ্নিকা-ের পর বিপুল মানুষের প্রাণহানি সত্ত্বেও বন্ধ হয়নি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলোয় কেমিক্যাল ব্যবসা। কেমিক্যাল গোডাউন অপসারণে অভিযান শুরু হয় চকবাজারের চুড়িহাট্টার ভয়াবহ অগ্নিকা-ের পর। মাসখানেক ধরে অভিযান চললেও বাড়িওয়ালা ও ব্যবসায়ী নামধারী কিছু অতিলোভী মানুষের কারণে অভিযানে শিথিলতা আসার সঙ্গে সঙ্গে পুরান ঢাকায় ফিরে এসেছে পুরনো চিত্র। চুড়িহাট্টার ভয়াবহ অগ্নিকা-ে দুজন চিকিৎসকসহ শতাধিক মানুষের মৃত্যু ঘটে। অগ্নিদগ্ধ হয়ে পঙ্গুত্বের শিকার হয়েছেন কয়েক ডজন মানুষ। তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য এযাবৎ কোনো কর্তৃপক্ষই এগিয়ে আসেনি। বরং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য মর্মবেদনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে কেমিক্যাল ব্যবসায়ীদের অসহনীয় দাপট। কেমিক্যাল গোডাউন রাখার অভিযোগে টাস্কফোর্সের অভিযানে ১০২টির মতো বাড়ির পরিসেবা সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও সতর্ক করে দেওয়া হয় ৯৭টির। টাস্কফোর্সের পাঁচটি টিম পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় এসব অভিযান পরিচালনা করে। কেমিক্যাল গোডাউন অপসারণ অভিযানের পর টাস্কফোর্সের কোনো কর্তৃপক্ষের ওই এলাকায় নজরদারি নেই। অগ্নিকা-ের দুই মাস পরও চকবাজারের চুড়িহাট্টার ঝুঁকিপূর্ণ ওয়াহেদ ম্যানশন ভবনটি এখনো ভাঙা হয়নি। ভবনটি সংস্কারের কোনো উদ্যোগও নেওয়া হয়নি। ভবনের চারপাশে পলেস্তারা খসে পড়ছে। যে কোনো সময় নতুন দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। ভবনে লাগানো ‘ঝুঁকিপূর্ণ ভবন’ লেখা সাইনবোর্ডটি কে বা কারা সরিয়ে ফেলেছে। ভবনটির চারপাশের দেয়াল ও ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ার উপক্রম হয়েছে। নিমতলী, চকবাজার ও বনানীর অগ্নিকা- বাংলাদেশের জনজীবনের নিরাপত্তা সম্পর্কে বিশ্বসমাজের কাছে নেতিবাচক বার্তা পৌঁছে দিয়েছে। জননিরাপত্তা সম্পর্কে আস্থার পরিবেশ সৃষ্টিতে পুরান ঢাকা থেকে কেমিক্যাল গোডাউন সরাতে সরকার ও সিটি করপোরেশনকে দৃঢ়প্রত্যয়ী ভূমিকা নিতে হবে। কেমিক্যাল ব্যবসায়ী ও কিছু লোভী বাড়িওয়ালার জন্য জননিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ থাকবে- তা কোনোভাবেই কাম্য হওয়া উচিত নয়।

 

 

সর্বশেষ খবর