সোমবার, ৬ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

ভারতের নির্বাচন ও বাংলাদেশের প্রত্যাশা

ইনাম আহমদ চৌধুরী

ভারতের নির্বাচন ও বাংলাদেশের প্রত্যাশা

সাত ধাপের ভারতের চলমান সাধারণ নির্বাচনের চতুর্থ ধাপ সদ্য সমাপ্ত হলো। ৯০ কোটি ভোটার এবং ৫৪৩ (+২ অ্যাংলো-ইন্ডিয়ানদের জন্য সংবিধান অনুযায়ী সংরক্ষিত) লোকসভা সদস্য সমন্বিত এ সাধারণ নির্বাচনের ৩৭৫ আসনের ভোট প্রদান শেষ হয়েছে অর্থাৎ অধিকাংশ আসনেরই ভোটপর্ব শেষ।

সম্ভবত এই স্তরে নির্বাচনের একটি সম্যক সমীক্ষা সমীচীন হবে, এটা পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম গণতান্ত্রিক নির্বাচন এবং স্বাধীনতা-উত্তরকালে নির্বাচনের এই ধারাকে নিরবচ্ছিন্নভাবে বজায় রাখতে পেরেছেন বলে ভারতবাসী অবশ্যই অকুণ্ঠ প্রশংসার দাবিদার। কিন্তু এবারের নির্বাচনের কয়েকটি দিক বিশ্বব্যাপী সমালোচনা ও নিন্দাবাদের উদ্রেক করেছে। স্বাভাবিকভাবেই আশা করা হয়েছিল সংবিধান অনুযায়ী ধর্মনিরপেক্ষ ভারতে স্বাধীনতার ৭২ বছর পরে অনেকগুলো সাধারণ নির্বাচনের ঘাট পেরিয়ে ভারতীয় গণতন্ত্র এমন একটি ‘ম্যাচিওর’ স্তরে পৌঁছেছে যেখানে গণতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ভূরাজনৈতিক ইস্যুগুলোই প্রাধান্য পাবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে সেখানে সাম্প্রদায়িকতা এবং যুদ্ধংদেহি জঙ্গি মনোভাবই প্রকট হয়ে উঠেছে এবং ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিজেপির (এবং তার অনুসঙ্গী আরএসএস, শিবসেনা ইত্যাদি সাম্প্রদায়িক দলগুলোর) প্রচার ও কর্মকা-ের কল্যাণে সে বিষয়গুলো বিশেষভাবে বাংলাদেশের জন্য আশঙ্কার কারণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সাধারণভাবে বলতে গেলে এই নির্বাচন শান্তিপূর্ণই হচ্ছে বলা যায়, যদিও বিক্ষিপ্তভাবে কোনো কোনো স্থানে সহিংসতা, গোলাগুলি, আহত-নিহত হওয়া ইত্যাদি সংঘটিত হয়েছে। সেদিক থেকে নির্বাচন যতটা শান্তিপূর্ণ হবে ভাবা হয়েছিল তার চেয়ে বেশি সাংঘর্ষিক। ঐতিহাসিক দিক থেকে নন্দিত ভারতীয় নির্বাচন কমিশন (২০তম পর্বের) নির্বাচনে এবারে বিতর্কিত হয়ে পড়েছে। উগ্র ধর্মীয় জাতীয়তাবাদ এবং সাম্প্রদায়িকতা এতটাই প্রকট এবং প্রভাবশালী হয়ে উঠেছে যে গণতন্ত্র হয়ে উঠেছে সমুচিত। বিলেতের ‘ইকোনমিস্ট’ ২০১৮ সালের ডেমোক্রেসি ইনডেক্স ভারতকে ত্রুটিপূর্ণ গণতন্ত্র হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। ভারতের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা দুর্বল হলে তার কালো ছায়া আশপাশের দেশে পড়বে বৈকি? কোনো কোনো বিশ্লেষক মন্তব্য করেছেন, ভারতের গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো তুলনামূলকভাবে অবনতির দিকে যাচ্ছে। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ৪০৯৬ কিলোমিটার সীমান্ত, যার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে রয়েছে এককভাবে সর্বাধিক ২২১৭ কিলোমিটার। সীমান্তবর্তী পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম এবং এদের পার্শ্ববর্তী অন্যান্য রাজ্যে এ নির্বাচনে জাতীয় নিরাপত্তাসহ জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি), নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল এবং তথাকথিত অনুপ্রবেশকারী সংখ্যালঘু তোষণ নীতি- এ বিষয়গুলোই সর্বাধিক প্রাধান্য পাচ্ছে।

ক্ষমতাসীন দল পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিচ্ছে অনুপ্রবেশকারী বলতে তারা শুধু মুসলমানদেরই বোঝাচ্ছে, হিন্দু বা অন্য কোনো অমুসলিমকে নয়। বাস্তব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে এ অনুপ্রবেশকারী বলতে পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান বা শ্রীলঙ্কা থেকে আগত কাউকে বোঝাবার অবকাশ নেই। নিঃসন্দেহে তারা হচ্ছেন বাঙালি মুসলমান। এতদসঙ্গে ‘গো-রক্ষা’র নামে গো মাংসভুক বলে এদের বিরুদ্ধে প্রচ্ছন্ন ঘৃণা বা বিদ্বেষ ছড়ানোরও চেষ্টা চলছে। বস্তুত পক্ষে কয়েকজনকে তো জনসমক্ষে পিটিয়ে হত্যাও করা হয়েছে। সীমান্তও হয়ে উঠেছে বেশ সহিংস। ভারতীয় বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশি হত্যা, এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে বর্বরোচিত অত্যাচারের (যেমন নখ উপড়ে ফেলে নির্যাতন) নজির দেখা যাচ্ছে। এসব ঘটনা রাষ্ট্রীয় বা সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার সৃষ্টি করতে পারে। ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতাকে ক্ষমতাসীন দল প্রকাশ্যে এবং বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে প্রাধান্য দিয়ে গোটা জাতিকে বিভক্ত করে তুলছে। ঘোষণা করেছে, নির্বাচনে জিতলে তারা অযোধ্যাতে ধ্বংস করে দেওয়া বাবরি মসজিদের স্থানে রামমন্দির নির্মাণ করবে। বিজেপি সংঘ পরিবার (এবং পাল্লা দিয়ে অন্য কেউ কেউও) ঘটা করে রামনবমী উৎসব পালন করেছে। সশস্ত্র যুদ্ধংদেহি শোভাযাত্রা বের করা হয়েছে গদা-লাঠি-তলোয়ার নিয়ে। ঐতিহ্যগতভাবে রামনবমী পালিত হলে কোনো প্রশ্ন উঠত না। তবে নির্বাচনকালীন এ সময়ে জঙ্গি সাজসজ্জা দেখে এবং উচ্চবাচ্য শুনে মনে হয়েছে, এ যেন সংখ্যালঘুদের জন্য এক ভয় দেখানোর মহড়া। মেনকা গান্ধী তো প্রকাশ্যেই শাসিয়ে বলেছেন, মুসলমানেরা তাকে (বা বিজেপিকে) ভোট না দিলে তার যথোপযুক্ত প্রতিফল পাবে। ভারতের নিরাপত্তা ও দেশরক্ষাকেও ‘পাহলোয়ান’ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। মোদি এবং বিজেপি প্রচার করছেন একমাত্র বিজেপিই ভারতকে সুরক্ষা দিতে পারে এবং অবিলম্বে ‘বালাকোট’সদৃশ প্রতিঘাত করে ‘পাকিস্তানকে উচিত শিক্ষা’ দেওয়ার সক্ষমতা রাখে। মোদি আরও বলেছেন, ক্ষমতায় এলে তিনি ভারতকে পরাশক্তি বানাবেন। অথচ অবাক কা-, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান (কখনো বা সেনা সমর্থিত বলে আখ্যায়িত) ভারতীয় যুদ্ধ বিমান থেকে ভূপাতিত যুদ্ধবন্দী বায়ুসেনা বর্তমানকে পরম সহৃদয়তার সঙ্গে শুধু মুক্তিই দেননি; বলেছেন ভারতীয় নির্বাচনে বিজেপির বিজয়কে তিনি স্বাগত জানাবেন। খবরের কাগজে দেখেছি (আমাদের নতুন সময় ১৯ এপ্রিল ২০১৯) মিজোরামের প্রাক্তন রাজ্যপাল খুরেশি বলেছেন, ‘পুলওয়ামার হত্যাকা-ের জন্য মোদিই দায়ী। কয়েকদিন আগেই কংগ্রেস নেতা বি কে হরিদ্র প্রসাদ ও সমাজবাদী দলের নেতা রামগোপাল যাদব অভিযোগ করেছেন, পাকিস্তানের সঙ্গে ‘ম্যাচ-ফিক্সিং’ করে ৪০ জন জওয়ানকে পাহলোয়ানে বলি দেওয়া হয়েছে। কেউ কেউ বালাকোট আক্রমণে দাবিকৃত ক্ষতির ব্যাপারে প্রশ্ন তুলেছেন। আন্তর্জাতিক মহলেও এ প্রশ্ন উঠেছে। কেননা, কারও কারও সরেজমিন দেখা ভাষ্য অনুযায়ী শুধু বোমা নিক্ষেপজনিত কিছু গাছগাছালির নিধন, একজন আহত এবং একটি বাড়ির সামান্য অংশ ধ্বংস ব্যতীত অন্য কোনো নজির নেই। অথচ এ ব্যাপারে কেউ কোনো প্রশ্ন করলেই দেশরক্ষা বাহিনীর প্রতি আস্থাহীন বলে আখ্যায়িত করা হচ্ছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীকে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথ ‘মোদি জি কি সেনা’ বলে উল্লেখ করেছেন। অবশ্য রাজনৈতিক উদ্দেশে সশস্ত্র বাহিনীকে ব্যবহার বন্ধ করতে ভারতীয় মহলেই দাবি উঠেছে। সেনাবাহিনীর ১৫০ জন অবসরপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ভারতের প্রেসিডেন্টের কাছে ব্যক্ত করেছেন- ‘রাজনীতিতে সেনাবাহিনীকে টেনে আনা’ বিপজ্জনক এবং উদ্বেগের বিষয়। এ আশঙ্কা প্রকাশে নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর একাধিক প্রধান ছাড়াও রয়েছেন জেনারেল রদ্রিগ্ম, জেনারেল শঙ্কর রায় চৌধুরী ও জেনারেল দীপক কাপুরের মতো অবসরপ্রাপ্ত খ্যাতনামা সেনাপ্রধান। মোদি বা বিজেপি সংঘ পরিবারের ব্যাপারে সবচেয়ে বড় অভিযোগ হচ্ছে তারা ভারতকে ধর্মীয় ভিত্তিতে বিভক্ত করে তুলছেন।

ভারতের সংবিধানে যে অসাম্প্রদায়িক জাতীয়তাবাদ প্রতিষ্ঠা বা বিকাশের কথা রয়েছে, তাদের বচন বা কর্মকা- তার সম্পূর্ণ বিপরীত। ভারতে একটি হিন্দুত্ববাদী বা সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র গঠন করলে তা যে শুধু ভারতের সংবিধানের মূলনীতির বিরোধী হবে তা নয়, ভারতের প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নায়কদের চিন্তাধারার দিক থেকে তা হবে সম্পূর্ণ পরিপন্থী। তা ছাড়া তা হবে বাংলাদেশের মতো অসাম্প্রদায়িক দেশের বা বাঙালির মতো অসাম্প্রদায়িক জাতির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। উপরন্তু ভারতে বাঙালি মুসলমানেরা যে অনুপ্রবেশকারী তা একটি সম্পূর্ণ মিথ্যাচার। অথচ খবরে প্রকাশ, প্রায় ৪০ লাখ বাঙালি অধিবাসীকে এখনো নাগরিকত্ব তালিকার বাইরে রাখা হয়েছে। তাদের কি নতুন রোহিঙ্গা বানাবার পাঁয়তারা চলছে? অথচ এরা তো চিরকালই ভারতবাসী। নির্বাচনকালীন প্রচার কী প্রকার সাম্প্রদায়িকতায় পৌঁছেছে তা বোঝা যায় আসামে বিজেপির অন্যতম প্রচারক হীমন্ত বিশ্বশর্মার উক্তি থেকে। এই প্রাক্তন মন্ত্রী ও রাজনৈতিক নেতা বলেছেন, আসামে কি শুধু ‘ধুতি’ ও ‘লুঙ্গি’? গা-মুছার কী হবে? বলা বাহুল্য, ধুতি বলতে তিনি বাঙালি হিন্দু, লুঙ্গি বলতে বাংলাভাষী মুসলমান এবং গা-মুছা (গামছা) বলতে প্রকৃত অসমীয়াদের বোঝাচ্ছেন। এর জের টেনেই বিজেপি বিধায়ক শিলাদিত্য দেব বলেছেন, ‘লুঙ্গিকে আটকাতে হবে। আসামকে আরেকটি ‘পূর্ব পাকিস্তান’ বানাতে দেওয়া যায় না।’ বক্তব্যে সাম্প্রদায়িকতারই নগ্ন অভিব্যক্তি। বস্তুত আসামে বাংলাভাষীরা বিশেষ করে মুসলমানেরা চরম আশঙ্কা ও দুর্ভাবনায় দিন কাটাচ্ছেন। নাগরিকত্ব হারাবার ভয় মূর্তিমান হয়ে দেখা দিচ্ছে। আসামের শিলচর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য তপোধীর ভট্টাচার্য বলেন, এবারের ভোটে বাঙালি জাতিকেই দুই টুকরা করার চেষ্টা চলছে। প্রতিবেদক সাংবাদিক দেবদুলাল মুন্নাকে তিনি বলেন, বাংলাদেশি বলে বাঙালি জাতিকেই শেষ করার চেষ্টা চলছে। এখন দরকার বাঙালির একতা। না হলে ভারতের বাঙালিরাই শেষ হয়ে যাবে।

ভারতের এ নির্বাচনে প্রধানত তিনটি জোট প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। বিজেপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট (এনডিএ মোট ২৯টি দল), কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সংযুক্ত প্রগতিশীল জোট (২৮টি দলের ইউপিএ) এবং তৃণমূল সমন্বিত মুখ্যত আঞ্চলিক ২৩ দলের ইউনাইটেড ইন্ডিয়া জোট। বিজেপি জোটে অবশ্য বিজেপিরই সম্পূর্ণ প্রাধান্য। ৫৪৩-এর মধ্যে ৪৩৭টি আসনে তারাই প্রার্থী। আঞ্চলিক দলগুলোর সঙ্গে এদের বিশেষ কোনো সমঝোতা নেই। বিদায়ী ষোড়শ লোকসভায় বিজেপির কোনো মুসলিম সাংসদ ছিলেন না। এবারে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি দুজন মুসলিম প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে- জঙ্গিপুরে মাহফুজা খাতুন (প্রাক্তন সিপিএম) এবং মুর্শিদাবাদে হমায়ূন কবীর (সাবেক কংগ্রেস)। অন্যান্য জোট বা দলেও জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে মনোনীত মুসলিম প্রার্থীর সংখ্যা কম। অবশ্য বিজেপি নির্বাচনী প্রচারের প্রথম দিকে মমতা ব্যানার্জির তৃণমূল কংগ্রেসকে মুসলিম তোষণের অভিযোগ আনে। এখন আবার বলছে তৃণমূল বা কংগ্রেস সরকারের সময়ে মুসলিম বঞ্চনার কথা।

এই মুহূর্তে বলা যায় না কারা ভারতে নির্বাচন উত্তর সরকার গঠন করবেন। তবে আমরা আশা করব, যারাই হোন না কেন, তারা যেন বাঙালি বিদ্বেষী, বাংলাবিরোধী বা সাম্প্রদায়িক না হোন। বন্ধুত্বপূর্ণ সখ্যতায় আলোচনা মারফত যেন আমাদের দ্বিপক্ষীয় সব সমস্যার সমাধান করতে পারি। বিজেপির প্রেসিডেন্ট অমিত শাহ তথাকথিত অনুপ্রবেশকারীদের (অর্থাৎ মুসলমান বাঙালি) ‘উইপোকা’ আখ্যায়িত করে বলেছেন, বিজেপি জিতলে তাদের বেছে বেছে খুঁজে সাগরে নিয়ে ডুবিয়ে মারা হবে। অত্যন্ত নিন্দনীয়, আক্রমণাত্মক ও সাম্প্রদায়িক এই উক্তিগুলো। আশা করি নির্বাচন-উত্তরকালে এ জাতীয় প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের কোনো অপচেষ্টা করবেন না। এই উক্তিগুলোকে যেন আমরা নির্বাচনকালীন স্লোগান হিসেবে ধরে নিতে পারি। তবুও এ ধরনের নারকীয় ইচ্ছা অগ্রহণযোগ্য।

বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের গভীর বন্ধুত্ব রয়েছে। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের আমলে এটা সর্বোচ্চ স্তরে রয়েছে। তাঁর নেতৃত্বে, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক থাকতে এবং জাতীয় ঐক্য অটুট রাখতে দৃঢ়প্রতিঙ্গ। যে দলই ভারতে ক্ষমতাসীন হোক না কেন, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তাকে স্বাগত জানানো হবে এবং সহযোগিতার ভিত্তিতে দ্বিপক্ষীয় সুসম্পর্ক বজায় রাখার অঙ্গীকার থাকবে। অবশ্যই আমাদের দাবি থাকবে ‘অনুপ্রবেশকারী’র মিথ্যা অজুহাতে যাতে ভারত থেকে মুসলমান বিতাড়ন না হয়। অহেতুক ‘বঙাল-খেদা’র নামে তাদের নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত না করা হয়।

ভারতকে আমরা অসাম্প্রদায়িক প্রগতিশীল একটি গণতন্ত্র হিসেবেই দেখতে চাই এবং তা-ই হোক ভারতবাসীরও প্রত্যাশা। আমরা চাইব বাংলাদেশ-ভারত সুসম্পর্ক চিরজীবী হোক। রক্তস্নাত পথ যুগপৎ অতিক্রম করেই এ বন্ধুত্বের ভিত্তি রচিত হয়েছে।

                লেখক : রাজনৈতিক বিশ্লেষক, উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ।

 

সর্বশেষ খবর