বৃহস্পতিবার, ৯ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

দুর্নীতি বিষয়ে কিছু সাদাসিধা কথা

আতাউর রহমান

দুর্নীতি বিষয়ে কিছু সাদাসিধা কথা

প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আমলে একবার এই মর্মে সরকারি নির্দেশ জারি করা হয়েছিল যে অফিস-আদালতসমূহে দুর্নীতি শতকরা ৫০ ভাগ কমাতে হবে। তখন এ নিয়ে আড্ডায় ও  পত্রপত্রিকায় প্রচুর হাসাহাসি হয়েছিল- তাহলে কি অর্ধেক দুর্নীতি ‘জায়েজ’ ও অর্ধেক ‘নাজায়েজ’? আর বর্তমান সরকার সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা একলাফে দ্বিগুণ করে দিয়ে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছিলেন যে, দুর্নীতি তথা ঘুষের কারবার কমবে। কিন্তু বাস্তবে তা বেড়েছে। কীভাবে? প্রথমে তাহলে সেটাই সাদাসিধাভাবে উপস্থাপন করা যাকÑ বর্তমানে একটি সরকারি অফিসে পিওনের চাকরি পেতে হলেও ঘুষ দিতে হয় প্রায় ৪-৫ লাখ টাকা এবং কোনো প্রার্থী আপত্তি জানালে তাকে বলা হয়, ‘মিয়া, পিওনের চাকরি হলেও প্রথমেই ২০ হাজার টাকা মাইনা পাবে এবং ভবিষ্যতে সেটা বাড়তেই থাকবে। কাজেই আগের মতো কম টাকায় হবে না, অনেক বেশি দিতে হবে।’ তাছাড়া আগে দিতে হতো কেবল নিয়োগকর্তাকে, এখন দিতে হয় জনপ্রতিনিধিদেরকেও। জানা যায়, একজন কনস্টেবলের চাকরি পেতে হলেও আজকাল ৫-৭ লাখ টাকা ঘুষ দিতে হয় এবং এ পরিমাণ টাকা ঘুষ দিয়ে যে যুবকটি পুলিশ বিভাগে চাকরি পেল তার কাছে তো এটা একটা ‘ইনভেস্টমেন্ট’ তথা বিনিয়োগ; খোঁজ নিলে হয়তো জানা যাবে টাকাটা জোগাড় করতে তাকে ভিটে-মাটি বন্ধক দিতে হয়েছে। অতএব চাকরিতে যোগদান করেই তার প্রথম কাজ হবে যেভাবেই হোক বিনিয়োগের টাকাটা ফেরত পাওয়া; সে সৎ থাকবে এটা আশা করাই বৃথা। সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ বলতে কী বুঝাতে চাইছেন, ঠিক বুঝি না; তবে এটুকু বুঝি যে এই ‘নিয়োগ বাণিজ্য’ বন্ধ না করলে দুর্নীতি কস্মিনকালেও কমানো যাবে না।

ফরাসি দেশে বহু আগে একজন বিচারক ছিলেন, যার কোর্টে কোনো কেইস উঠলেই তিনি নাকি বলতেন, ‘শাখ্শে লা ফার্ম’; অর্থাৎ ‘মেয়েটিকে খোঁজ’। কারণ তার ধারণায়, সংসারে যত অনর্থ ঘটে সেটার মূলে থাকে কোনো না কোনো মেয়েছেলে। তো একদিন তার কোর্টে একটি নির্মাণাধীন বহুতল ভবনের ওপর থেকে একজন শ্রমিক পড়ে গিয়ে পা ভাঙাজনিত ক্ষতিপূরণের কেইস ওঠলে পর তিনি যথারীতি বলে বসলেন, শাখ্শে  লা ফার্ম। সবাই ভাবলেন, বিচারকের মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে।

কিন্তু পরে তদন্তে প্রকাশ পেল, শ্রমিকটি যখন উপরে কাজ করছিলো তখন নিচে রাস্তা দিয়ে গমনরত এক সুন্দরী মহিলার দিকে অতিরিক্ত নজর দিতে গিয়েই সে কা টা ঘটালো। ঠিক তদ্রুপ এদেশে যত দুর্ঘটনা ঘটে, একটু গভীরে গেলে দেখা যাবে যে সেগুলোর পিছনে মূলত দুর্নীতিই জড়িত। এই যে দিনকয়েক আগে রাজধানীর বনানীর একটি বহুতল ভবনের অগ্নিকান্ডে জানমালের বিরাট ক্ষতি হলো, সেটার মূলেও কিন্তু রাজউক-এর দুর্নীতিই সংযুক্ত। অনুমোদিত ১৮ তলার জায়গায় ২৩ তলা হয়েছে; আলদীনের প্রদীপের ভোজবাজির মতো সেটা একদিনে হয়নি। আর কে না জানে, হাতির যেমন দুটি দাঁত আছে (একটি দেখানোর ও একটি খাওয়ার) তেমনিভাবে ঢাকার সবগুলো ভবনেরই দুটো স্কেচপ্ল্যান থাকে- একটি রাজউক কর্তৃক অনুমোদিত ও অপরটি নির্মাণকাজের? রাজউকের সংশ্লিষ্ট শাখার লোকেরা নির্মাণ কাজ চলাকালে যথারীতি সাইট ভিজিট করলেও কেন যে আপত্তি উত্থাপন করেন না, সেটা বুঝতে শার্লক হোম্স হওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। সাম্প্রতিক বনানীর ও তার আগে পুরান ঢাকার অগ্নিকা  প্রসঙ্গে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় অবস্থিত ‘তাকওয়া’ মসজিদের খতিব হাফেজ মুফতি সাইফুল ইসলাম, যিনি টিভিতে ‘আলোকিত জ্ঞানী’ অনুষ্ঠানের সঞ্চালক হিসেবে যথেষ্ট সুনাম কুড়িয়েছেন সেদিন জুমায়, আমার বিবেচনায়, একটি চিন্তাউদ্দীপক কথা বলেছেন। তিনি বললেন, ‘দেশে যে হারে যুবক-যুবতীদের মধ্যে বেলেল্লাপনা ও বড়দের মধ্যে দুর্নীতি বেড়ে চলেছে, আল্লাহতায়ালা এ সব বিপর্যযের মাধ্যমে আমাদের সর্তক করে দিচ্ছেন।’ তার এ কথার সঙ্গে অনেকেরই দ্বিমত থাকতে পারে; কিন্তু অতঃপর তিনি যেটা বলেছেন সেটার ব্যাপারে দ্বিমত থাকার কথা নয়। ‘পর্দার আড়ালে মা-বোনদের উদ্দেশে বলি’, তিনি বললেন, ‘আপনারা অধিক উচ্চাভিলাষী হওয়া থেকে বিরত থাকুন। পরকালের শান্তি ও সন্তানদের মঙ্গল কামনায় জীবনসঙ্গীকে হারাম রোজগার তথা ঘুষ খেতে প্ররোচিত না করে বরং নিবৃত্ত করার চেষ্টা করুন।’ এ প্রসঙ্গে শেখ সাদি (রহ.)-এর একটি জ্ঞানগর্ভ উক্তি আমার মনে পড়ে গেল। তিনি বলেছেন, ‘নিকৃষ্ট বীজ বপন করে উৎকৃষ্ট ফসল আশা করা বৃথা।’ কথাটার মর্মার্থ অত্যন্ত গূঢ় বটে।

আর পত্রিকার কলামিস্টদের একটা বাড়তি সুবিধা এই যে একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপারও পাঠকদের সঙ্গে শেয়ার করা যায়। তাই ‘নিয়োগ বাণিজ্য’ প্রসঙ্গে একটি ব্যক্তিগত দুর্ঘটনা এস্থলে আমি বাংলাদেশ প্রতিদিন-এর পাঠকদের সঙ্গে শেয়ার করতে চাই, যাতে করে দেশবাসী জানুক, আমাদের নৈতিক অবক্ষয়টা কোথায় গিয়ে ঠেকেছে। তবে কারও কারও কাছে এটা আত্ম-প্রচারণা তথা নিজের ঢাক নিজে পেটানো বলে মনে হতে পারে। অবশ্য আমার সতীর্থ বন্ধু সরকারের সাবেক সচিব ও উপদেষ্টা আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী বলে, ‘আমার ঢাক আমি নিজেই পেটাব, কারণ অন্যে পেটালে ফাটিয়ে ফেলতে পারে।’ যা হোক ঘটনাটি হচ্ছে : আমি তখন ঢাকা সার্কেলের পি-এম-জি, পত্রিকার যথারীতি বিজ্ঞাপন দিয়ে সহকারী পদে কিছু লোক নিয়োগ করব। একদিন এক লোক অফিসে এসে আমার পিএ-র কাছে জানতে চাইল, আমাকে কত টাকা দিলে তার চাকরি হবে। পিএ তাকে জানালেন, ‘আমি হারাম পয়সা তথা ঘুষ খাই না, উপরন্তু ওটাকে পায়খানা বলে অভিহিত করি।’ সে প্রথমে বিশ্বাসই করতে চাইল না, পরে অনেকক্ষণ গাইগুই করে চলে গেল। সেদিন অপরাহ্ণে অফিসে বসে কাজ করছি, আমার কাছে একটা বেনামা টেলিফোন এলো, ‘আমাদের কাছে সুন্দরী মেয়ে আছে, বন্ধুত্ব করবেন?’ আমার চোখে পানি এসে গিয়েছিল। আমি তাকে জবাব দিলাম, ‘আপনারা আমার সম্পর্কে ভালো করে খোঁজখবর নিন। দয়া করে এরকম টেলিফোন আর করবেন না, আপনাদের ওপর আল্লাহর গজব পড়বে।’ এরকম টেলিফোন আর পাইওনি। পরে আমার এক বন্ধু ঘটনাটা শুনে বলেছিল, ‘ব্যবসায়ী মহলে একটি কথা প্রচলিত আছে যে প্রতিটা মানুষের অন্তত একটা দুর্বলতা থাকেই। তোমাকে ওরা একটু বাজিয়ে নিল, এই আর কি!’ তা ঘটনাটা কুড়ি বছর আগে ঘটেছে, অথচ আজও যখন মনে পড়ে আমার এক ধরনের বিবমিষা হয়।

সে যাকগে। সড়ক-যোগাযোগের ব্যাপারে বর্তমানে যে নৈরাজ্য চলছেÑ অহরহ সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষ হতাহত হচ্ছে আর রাস্তায় রাস্তায় যানজট তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে যে কারণে সম্প্রতি স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের রাস্তায় নেমে ট্রাফিক-নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা গেছে, এক্ষেত্রেও মূল কারণ কিন্তু একটাইÑ দুর্নীতি। বিষয়টি একটুখানি বিস্তারিত বর্ণনার দরকারÑ মধ্যিখানে এক সময় রাজধানীর রাস্তার মোড়ে মোড়ে পুলিশের পোশাক পরা একদল লোককে কিছু মোটরগাড়ির তালিকাসহ দাঁড়িয়ে থেকে ধাবমান কারসমূহের নম্বর-প্লেটের দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকতে দেখা যেত এবং কোনো গাড়ির নম্বর মিলে গেলেই গাড়ি থামিয়ে বলা হতো, ‘আপনার গাড়ি আইন অমান্য করেছে এবং কোর্ট কর্তৃক ২ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করতে বলা হয়েছে। আপনি নগদ ১ হাজার টাকা দিলে কেইস শেষ হয়ে যাবে। নতুবা আমার ওপর অর্ডার, গাড়ি থানায় নিয়ে যেতে হবে।’ আপনি তাড়াহুড়োর মধ্যে আছেন। গাড়ি অপরাধ করল আর আপনি জানেন না এবং কোর্ট ২ হাজার জরিমানা করল আর আপনি ১ হাজার দিলে পার পেয়ে যাবেনÑ এসব চিন্তা তখন অবান্তর। আপনি তড়িঘড়ি নগদ ১ হাজার টাকা দিয়ে বিপদ থেকে বাঁচলেন। শেষমেশ পত্রিকায় কার বাণিজ্য শিরোনামে বেশ লেখালেখির পর এই দুর্নীতির অবসান হলো বটে তবে ততদিনে কয়েক কোটি টাকা হাতবদল হয়ে গিয়েছে। অধুনা ওটার স্থলবর্তী হয়েছে, যেটাকে বলা যেতে পারে, ‘পার্কিং বাণিজ্য’Ñ ট্রাফিক সার্জেন্টদের অস্থানে পার্কিংজনিত জরিমানা আদায়ের একটি মাসিক টার্গেট দিয়ে প্রণোদনাস্বরূপ যত টাকা আদায় হয় সেটার একটা পারসেন্টিজ নাকি তাদের ‘কমিশন’ হিসেবে দেওয়া হচ্ছে। অতএব, তারা তাদের যে মূল কাজÑপ্রধান সড়কসমূহে শৃঙ্খলা আনয়ন, গাড়ির ও ড্রাইভারের লাইসেন্স পরীক্ষাকরণ এসব ছেড়েছুড়ে দিয়ে নগরীর আবাসিক এলাকার রাস্তাসমূহে, বিশেষত যে সমস্ত রাস্তায় স্কুল ও হাসপাতাল অবস্থিত, সেগুলোতে তারা দলবল ও রেকারসুদ্ধ নিয়মিত হানা দিয়ে রং পার্কিং-এর অজুহাতে প্রচুর জরিমানা আদায় করছে এবং নিজেদের পকেটও ভারী করছে। আমি তাদের তেমন দোষ দিই না। কারণ মানুষের টাকা-পয়সার লোভ স্বভাবজাত, আমি দোষ দিই ওদের যারা নেপথ্যে থেকে অপকর্মটি করাচ্ছেন। তারা কি একবারও ভেবে দেখলেন না এটার ‘ফল-আউট’ কী হতে পারে এবং ডিউটি-আওয়ার্সে কাজ করার জন্য বেতন-ভাতার অতিরিক্ত ‘কমিশন’ দেওয়া কতটা ন্যায়সঙ্গত?

সরকারি চাকরির সুবাদে আমি সাড়ে চার বছর বিলেতে ছিলাম। ওখানে দেখেছিÑমেইন রাস্তাগুলোর দু’পাশে দন্ডায়মান থাকে পার্কিং মিটার এবং ওগুলোতে পয়সা না ঢেলে কেউ পার্কিং করলে ‘ট্রাফিক ওয়ার্ডেন’ এসে জরিমানার কাগজ উইন্ডস্কিনে সেঁটে দিয়ে চলে যায়। আর আবাসিক এলাকায় বাসিন্দাদের গাড়ি দিনরাত রাস্তার দু’পাশে পার্কিং অবস্থায় থাকে। এটা অন্যায়, কিন্তু সবাই যখন আইন অমান্য করে তখন আর সেটা অন্যায় থাকে না।

আমাদের এখানকার মতো ওখানে গাড়ির ব্লু-বুক নিয়ে টানাটানি, ড্রাইভারের অনুনয়-বিনয়, মালিকের আত্মপরিচয় প্রদান, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কাউকে দিয়ে টেলিফোন করান, হৈ-চৈ হট্টগোল ইত্যাদি নেই। কেননা ওরা যে সত্যিকার সুসভ্য জাতি। কার বাণিজ্যের ন্যায় বর্তমানের পার্কিং বাণিজ্যেরও একদিন হয়তো অবসান ঘটবে। কিন্তু ততদিনে অনেক দেরি হয়ে যেতে পারে। আমি পুলিশের ভাবমূর্তি বাড়ানো ও দুর্নীতি কমানোর ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ করি এজন্য যে, সরকার যতই আইন বানাক দিনের শেষে ওটা কার্যকর করার সবচেয়ে বড় সহায়ক হচ্ছে পুলিশ। তাই বিলেতে নাকি কাউকে পুলিশ বাহিনীতে নিয়োগদানের আগে তার চৌদ্দপুরুষ পর্যন্ত খতিয়ে দেখা হয় কোনো ক্রিমিন্যাল রেকর্ড আছে কী না। আর আমাদের দেশে কী হয় বা হচ্ছে, সেটা তো আমরা স্বচক্ষেই দেখছি, স্বকর্ণে শুনছি।

পরিশেষে আমি একটি কথা বলতে চাই। রাজধানীতে যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার মেট্রোরেল ও পাতালরেলের প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছে। কিন্তু এ ক্ষেত্রেও সম্ভাব্য ‘নিয়োগ বাণিজ্য’ বন্ধ করতে না পারলে উদ্যোগটা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হতে বাধ্য। কারণ যারা ঘুষ দিয়ে চাকরি নেবেন, যেটা আমি দিব্যদৃষ্টিতে দেখতে পাচ্ছি তারা ঘুষবাবদ প্রদত্ত টাকা ফেরত পাওয়ার লক্ষ্যে যাত্রীদের টিকিট কাটার পরিবর্তে তাদের পকেট ভারী ও যাত্রীদের পয়সা বাচানোয় উদ্বুদ্ধ করে রেলের বারোটা বাজিয়ে ছাড়বে। অতএব সময় থাকতে সাধু সাবধান!

নিবন্ধটির ইতি টানছি প্রাসঙ্গিক মজার উপখ্যানের মাধ্যমে : ব্রিটিশ আমলের শেষের দিকে সন্দ্বীপের বাঙালি আবাসিক ম্যাজিস্ট্রেটের বিরুদ্ধে ঘুষ খাওয়ার অভিযোগ পেয়ে চট্টগ্রাম জেলার ইংরেজ ডিসি সেখানে গেছেন সরজমিনে তদন্ত করতে। রাতে ম্যাজিস্ট্রেটের বাসায় নিমন্ত্রিত হয়ে ডিনার খেতে বসে তিনি সুস্বাদু কালিয়ার মাংসটা কীসের জিজ্ঞেস করতেই ম্যাজিস্ট্রেট জবাব দিলেন, ঘুজ (goose), স্যার, অর্থাৎ ওটা রাজহংসীর মাংস। ওদিকে ‘ঘুষ’ শব্দটি ইংরেজদের উচ্চারণে শোনায় ‘ঘুজ’। তাই ইংরেজ সাহেব ধরে নিলেন, ম্যাজিস্ট্রেট ওটা খাওয়ার জন্যই অভিযোগের সূত্রপাত : অথচ ওটা খাওয়া তো কোনো দোষের নয়। তাই তিনি পরদিন কোর্ট-প্রাঙ্গণে সমবেত জনতাকে উদ্দেশ করে বললেন, ‘ঘুজ খাওয়া খুবই ভালো। আমিও গতরাতে খেয়েছি। আমি আমার ম্যাজিস্ট্রেটকে বলে যাচ্ছি, সে যেন আরও বেশি বেশি করে ঘুজ খায়।’ হা-হা-হা!

লেখক : রম্য সাহিত্যিক। বাংলাদেশ ডাকবিভাগের সাবেক মহাপরিচালক।

সর্বশেষ খবর