বৃহস্পতিবার, ৯ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গা হুমকি

ওদের ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নিন

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ১১ লাখ রোহিঙ্গা ইতিমধ্যে ১২ লাখ অতিক্রম করেছে রেকর্ডসংখ্যক সন্তানদানের সক্ষমতার কারণে। মিয়ানমারের সংখ্যালঘু এ জাতিগোষ্ঠীর সদস্যরা ২০ মাস আগে যখন বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় তাদের মধ্যে ৫০ হাজার নারীই ছিল সন্তানসম্ভবা। বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের পর আরও লক্ষাধিক নারী সন্তান জন্ম দিয়েছেন। রোহিঙ্গারা এমনই একটি জাতিগোষ্ঠী- সন্ত্রাস, মাদক চোরাচালান ও বছর বছর সন্তান জন্ম দেওয়াকে তারা কর্তব্য বলে ভাবে। মিয়ানমারের রাখাইনের সংখ্যাগুরু জনগোষ্ঠীর আশঙ্কা, রোহিঙ্গাদের উচ্চ জন্মহার অব্যাহত থাকলে একসময় নিজ দেশেই তারা পরবাসী হয়ে পড়বে। যে কারণে মিয়ানমারের বর্মি সেনা ও বর্মি শাসকদের রাখাইন জনগোষ্ঠীর মানুষ বিদেশি দখলদার বলে ভাবলেও রোহিঙ্গাদের সম্পর্কে তাদের ধারণা আরও নাজুক। গত ২০ মাসেই টেকনাফের মানুষ এই অপ্রত্যাশিত অতিথিদের সম্পর্কে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোয় প্রতিদিন গড়ে জন্ম নিচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ শিশু। বিপুল এই জনস্রোতের পরিসেবা জোগাতে হিমশিম খাচ্ছে প্রশাসন। ক্রমাগত অপরাধকান্ডে জড়িয়ে পড়া রোহিঙ্গাদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে। রোহিঙ্গাদের অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ জন্মহার গোদের ওপর বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেখানে বাংলাদেশের জন্মনিয়ন্ত্রণ নীতিতে চলমান রয়েছে ‘ছেলে হোক মেয়ে হোক দুটি সন্তানই যথেষ্ট’ ধারণা, সেখানে একেকটি রোহিঙ্গা পরিবারের সন্তানসংখ্যা ৫ থেকে ১০। জন্মনিয়ন্ত্রণকে রোহিঙ্গা নারী-পুরুষের অধিকাংশই মনে করেন ‘পাপকাজ’। তারা কোনো ধরনের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করেন না। পাশাপাশি রয়েছে বাল্যবিয়ের প্রচলন। কক্সবাজারবাসীর বক্তব্য, রোহিঙ্গাদের অবাঞ্ছিত উপস্থিতিতে তারা আতঙ্কে রয়েছেন। রাতে ঘুম হয় না ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে। পাহাড়-পর্বত ফসলি জমি সব রোহিঙ্গার দখলে চলে গেছে। দিনের পর দিন তাদের সংখ্যা যেমন বাড়ছে, তেমন তাদের অপরাধের মাত্রাও বাড়ছে। রোহিঙ্গাদের কারণে বাংলাদেশের পর্যটনস্বর্গ কক্সবাজারের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়ছে। এ জেলার পাহাড় ও বনভূমি অস্তিত্ব হারাচ্ছে। রোহিঙ্গাদের মাদক-সংশ্লিষ্টতায় বিপর্যস্ত হচ্ছে দেশ। এ হুমকির মোকাবিলায় বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারী মিয়ানমারের নাগরিকদের সে দেশে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। এ ক্ষেত্রে হেলাফেলার অবকাশ থাকা উচিত নয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর