শিরোনাম
শুক্রবার, ১০ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

সড়ক নৈরাজ্য

সংকট উত্তরণে যত্নবান হতে হবে

সড়ক নৈরাজ্য যেন দেশের ১৭ কোটি মানুষের ললাটের লিখন হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোনো কিছুতেই এ বিপদ থেকে রেহাই পাওয়া যাচ্ছে না। এ নৈরাজ্যের কারণেই সড়ক-মহাসড়কে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। সমস্যার সমাধানে সমন্বয়হীন উদ্যোগে কোনো সুফল অর্জিত হচ্ছে না। বিশেষজ্ঞদের অভিমত বিশৃঙ্খলার গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি কারণ হচ্ছে- যানবাহন চালকদের স্বেচ্ছাচারী মনোভাব, নির্ধারিত বেতন-ভাতা ছাড়াই চুক্তিতে গাড়ি চালানো, যাত্রী ও পথচারীদের ট্রাফিক আইনের প্রতি উদাসীনতা, একই সড়কে ধীর ও দ্রুতগতির যানবাহন চলা, সড়কের বেশির ভাগ অংশ অবৈধ দখল ও পার্কিংয়ে অবরুদ্ধ রাখা ইত্যাদি। রাজধানীর সড়কসংলগ্ন বেশির ভাগ বিপণিবিতান, শপিং মল ও বাণিজ্যিক ভবনের গাড়ি মূল সড়ক অপদখল করে পার্কিং করা থাকে। অথচ প্রতিটি ভবনেই নিজেদের গাড়ি রাখার জন্য পর্যাপ্ত পার্কিংসুবিধা থাকার কথা। সড়ক নৈরাজ্য রোধে কোনো একক উদ্যোগ ফলপ্রসূ হবে না। এ ব্যাপারে সিটি করপোরেশন, রাজউক, ট্রাফিক বিভাগসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। সড়ক নৈরাজ্যের জন্য সাধারণত ‘যত দোষ নন্দ ঘোষ’ তত্ত্বের অবতারণা ঘটানো হয় অধিকাংশ ক্ষেত্রে। সব অভিযোগের লক্ষ্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয় গাড়ি চালকদের। অথচ এ নৈরাজ্যের জন্য বাস-ট্রাক চালকদের দায় কোনোভাবেই একক নয়। বিদ্যমান পরিবহন ব্যবস্থাপনা সড়ক নৈরাজ্যের জন্য দায়ী। মালিকরা বাস চালকদের নির্দিষ্ট বেতনের বদলে কন্ট্রাকের ভিত্তিতে গাড়ি চালাতে দেন। এর ফলে নির্দিষ্ট অঙ্কের আয় না হলে বাস চালক ও কন্ডাক্টরদের আম ছালা দুটিই হারানোর আশঙ্কা থাকে। যে কারণে যাত্রী ওঠানোর জন্য একই রুটের অন্য গাড়ির সঙ্গে চলে পাল্লাপাল্লি। ঘটে একের পর এক প্রাণহানির ঘটনা। সড়ক নৈরাজ্য রোধে চালকদের বেতনের আওতায় আনা জরুরি। বেহাল সড়ক ব্যবস্থাপনায়ও লাগাম টানতে হবে। সড়ক ব্যবস্থাপনা সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোতে সততার যে সংকট রয়েছে তার অবসান ঘটাতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিদিনই প্রায় একডজন মানুষের জীবন কেড়ে নিচ্ছে। স্বাভাবিক মৃত্যুর ক্ষেত্রে সড়ক নৈরাজ্য প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। সভ্য সমাজে এমন নৈরাজ্য চিরস্থায়ী হওয়ার সুযোগ নেই। নিজেদের সভ্য ভাবলে এ সংকট উত্তরণে যতœবান হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর