শনিবার, ১১ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

অভিশাপের নাম কিডনি রোগ

চিকিৎসাবান্ধব আইন সময়ের দাবি

কিডনির রোগে ভুগছে দেশের লাখ লাখ মানুষ। বিশেষজ্ঞদের মতে কমবেশি কিডনি জটিলতায় ভুগছে এমন রোগীর সংখ্যা ২ কোটির মতো। ঘণ্টায় পাঁচজন প্রাণ হারায় কিডনি বিকল হয়ে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, দেশে কিডনি চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও সুযোগ-সুবিধা নেই। কিডনি প্রতিস্থাপনে আইনগত বাধা থাকায় বছরে ৩০০ কোটি টাকা চলে যায় বিদেশে। হয়রানির মুখে পড়ে কিডনি রোগীরা। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশে কিডনি রোগীর সংখ্যা প্রায় ২ কোটি। বছরে এ রোগে মারা যায় প্রায় ৪০ হাজার মানুষ। কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞদের সংগঠন বাংলাদেশ রেনাল অ্যাসোসিয়েশনের তথ্যানুযায়ী ‘১০ বছর আগে সাভারের চাকুলিয়া গ্রামে একটি জরিপে দেখা গিয়েছিল ১৬ শতাংশ মানুষ কোনো না কোনো কিডনি রোগে আক্রান্ত। এ পরিপ্রেক্ষিতে ২ কোটির হিসাবটি সঠিক ধরা হয়। এই বিপুল পরিমাণ রোগীর বিপরীতে দেশে চিকিৎসকসংখ্যা নামমাত্র। আন্তর্জাতিক মানদ- অনুযায়ী ৫০ হাজার জনগোষ্ঠীর জন্য একজন নেফ্রোলজিস্ট থাকা দরকার। দেশে নেফ্রোলজিস্ট আছেন মাত্র ১৭০ জন। দেশের জনসংখ্যা ১৭ কোটি ধরা হলে ১০ লাখ মানুষের জন্য একজন করে নেফ্রোলজিস্ট আছেন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তালিকা অনুযায়ী দেশে সরকারি-বেসরকারি ৪৩টি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ডায়ালাইসিস সেবা দেওয়া হয়। এসব প্রতিষ্ঠানের ডায়ালাইসিস শয্যা ৫৭০টি। দেশে ৩০-৪০ হাজার মানুষের ডায়ালাইসিসের দরকার হলেও সে সুবিধা তারা পাচ্ছে না। সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ডায়ালাইসিসের যে ব্যবস্থা আছে তা খুবই ব্যয়বহুল। প্রতি সেশনে ৩-৪ হাজার টাকা এমনকি সরকারি হাসপাতালেও আড়াই হাজার টাকার মতো লাগে। বাংলাদেশে কিডনি প্রতিস্থাপনের আইনগত বাধা দূর হলে স্বল্প খরচে এ সুযোগ পাবে কিডনি রোগীরা। বেঁচে যাবে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা। তবে কিডনি রোগ থেকে রেহাই পেতে সার্বিক সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। যেসব কারণে কিডনি রোগের বিস্তার ঘটে তাতে লাগাম পরাতে হবে। খাদ্যে ভেজাল রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। স্বাস্থ্য সচেতনতা গড়ে উঠলে কিডনি রোগের প্রকোপ উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবার সক্রিয় উদ্যোগ কাম্য।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর