রবিবার, ১২ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

হৃদরোগের আগ্রাসন

সুশৃঙ্খল জীবনযাপন মুক্তির পথ

বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে হৃদরোগ জীবনঘাতী রোগে নিয়েছে এবং প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতি চারজনের তিনজনই রয়েছেন ঝুঁকির মধ্যে। শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোতে গত বছরের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বলা হয় দক্ষিণ এশিয়ায় উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত প্রাপ্তবয়সী প্রতি চারজনের মধ্যে তিনজনের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের বাইরে এবং এদের এক তৃতীয়াংশ ডায়াবেটিসে ভুগছেন। ইউরোপীয়দের তুলনায় পাঁচ থেকে সাত বছর আগেই দক্ষিণ এশীয়দের মধ্যে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক ও কিডনি রোগ দেখা দেয়। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ৩৫ বছর কিংবা এর চেয়ে বেশি বয়সীর মধ্যে প্রতি তিনজনের একজন উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত, এর অর্ধেকই এ সম্পর্কে সচেতন নয়। বাংলাদেশে বর্তমানে শতকরা ৫৩ ভাগ মৃত্যু হয় অসংক্রামক রোগের কারণে। এর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে হৃদরোগ। বিশেষজ্ঞদের মতে, হৃদরোগের প্রাথমিক উপসর্গগুলোর মধ্যে রয়েছেÑ বুকের এক পাশে কিংবা চারপাশে ব্যথা অনুভূত হওয়া, বুক ভারী লাগা, শরীরের অন্য অংশ যেমন বাঁ হাতে, পিঠে, চোয়ালেও এ ব্যথা হতে পারে। ব্যথার সঙ্গে ঘাম হওয়া, নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসা, বমি বমি ভাব, বুক ধড়ফড় করা বা বিনা কারণে অস্থির লাগা, মাথা ঝিমঝিম করা ইত্যাদি উপসর্গ থাকতে পারে। এ ধরনের উপসর্গ হলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। হৃদরোগকে এক সময় ভাবা হতো বয়স্কদের রোগ। কিন্তু বাংলাদেশে তরুণরাও আশঙ্কাজনকহারে হৃদরোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এমনকি শিশুরাও এ ঘাতক রোগে ভুগছে। ধূমপান ও মাদক সেবন হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। দুশ্চিন্তা এ আগ্রাসী রোগকে থাবা বিস্তার করতে উৎসাহ জোগায়। এ রোগ থেকে নিষ্ক্রান্ত পেতে হলে প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট হাঁটা চলা ও ব্যায়াম করা, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা, প্রচুর পরিমাণ শাকসবজি খাওয়া এবং চিন্তামুক্ত জীবনযাপন জরুরি। হৃদরোগ থেকে দূরে থাকতে হলে শরীরের ওজন যাতে অতিরিক্ত না বাড়ে সেদিকে সচেতন থাকতে হবে। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। এ বিষয়েও সর্বাত্মক সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার। হৃদরোগ সম্পর্কে সচেতনতার অভাব এ রোগে মৃত্যুর হার ক্রমান্বয়ে বাড়িয়ে চলছে। এ রোগকে হেলাফেলা করার অবকাশ নেই। জীবনযাপনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে হৃদরোগের সমূহবিপদ এড়ানো সম্ভব।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর