বৃহস্পতিবার, ১৬ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

ডলারের দাম বাড়ছে

গভীর ঝুঁকির মধ্যে অর্থনীতি

ডলার ঘাটতি দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য অস্বস্তি ডেকে আনছে। গভীর ঝুঁকিতে পড়েছে অর্থনীতি। খোলা বাজারে প্রতি ডলারের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৬ টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকই বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে ৮৪ টাকায় ডলার বিক্রি করছে। রপ্তানির তুলনায় আমদানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বাণিজ্য ঘাটতির সম্মুখীন হচ্ছে বাংলাদেশ। ফলে বৈদেশিক মুদ্রার জোগান মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। গত অর্থবছর শেষে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি ছিল প্রায় হাজার কোটি ডলার। চলতি বছরও ঘাটতির প্রবণতা রয়ে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত এপ্রিলে মোট রপ্তানি হয়েছে ৩৩৪ কোটি ডলার, বিপরীতে আমদানি হয়েছে ৯৪১ কোটি ডলার। এ সময় রপ্তানির চেয়ে আমদানি বেশি হয়েছে ৬০৭ কোটি ডলার। রপ্তানির চেয়ে আমদানি ব্যয় বেশি হওয়ায় ঘাটতি মেটাতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক খোলা বাজারে ডলার সরবরাহ করছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৪৪৬ কোটি ডলার। রেমিট্যান্সের অর্থ দিয়েও নগদ ডলারের ঘাটতি মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। ব্যাংকগুলো ডলার ঘাটতির কারণে অনেক ক্ষেত্রে এলসি খুলতে পারছে না। বৃহৎ উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে ডলার ব্যবহারের কারণে ব্যবসায়ীরা ডলার পাচ্ছেন না। সংকটের কারণে প্রতিদিন খোলা বাজারে নগদ ডলার সরবরাহ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তার পরও ঘাটতি মেটানো যাচ্ছে না। ডলার সংকটের অন্যতম কারণ অনুৎপাদনশীল খাতে ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়া। দেশে ভোগবিলাসের পণ্য আমদানি ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। রপ্তানি আয় বৃদ্ধির হার সন্তোষজনক হলেও আমদানি ব্যয় স্পুটনিক গতিতে বৃদ্ধি পাওয়ায় ভারসাম্যহীন অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। ডলারের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বিনিয়োগকারীদের শিল্প স্থাপনের মেশিনপত্র বা শিল্পের কাঁচামাল আমদানিতে বেশি দাম দিতে হচ্ছে। আমদানিনির্ভর ভোগ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ভোক্তাদের বাড়তি অর্থ গুনতে হচ্ছে। ডলারসহ বিদেশি মুদ্রার বিপরীতে টাকার দাম কমে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। জাতীয় অর্থনীতির বৃহত্তর স্বার্থে ডলারের দাম বৃদ্ধি রোধে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। বিলাসসামগ্রী আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা ভাবতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর