শুক্রবার, ১৭ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

মেয়াদোত্তীর্ণ সিলিন্ডার

জননিরাপত্তার জন্য হুমকি

রাজধানীতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে মেয়াদোত্তীর্ণ সিএনজি সিলিন্ডারবাহী প্রায় পৌনে ২ লাখ যানবাহন। এর কোনোটিতে ত্রুটি দেখা দিলে যে কোনো সময় ঘটতে পারে বিস্ফোরণ। বোমার মতোই প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে সে বিস্ফোরণের ঘটনা। শুধু সংশ্লিষ্ট যানবাহনের চালক ও যাত্রীরা নয়, ধারেকাছের যানবাহন ও স্থাপনা আক্রান্ত হতে পারে বিস্ফোরণের প্রভাবে। ১৮৮৪ সালের বিস্ফোরক আইন অনুযায়ী ত্রুটিপূর্ণ গ্যাস সিলিন্ডারকে ‘বোমা’ হিসেবে বিবেচনা করে পরিবেশ অধিদফতর। সে কারণে আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে পাঁচ বছর পর পর সিলিন্ডার পরীক্ষণের নীতিমালা রয়েছে। ৩ হাজার পিএসআই প্রেশার বা গ্যাসের চাপ সহ্য করার ক্ষমতা সিলিন্ডারের আছে কিনা সে বিষয়টি পাঁচ বছর পর পর পরীক্ষা করে দেখার নির্দেশনা রয়েছে আন্তর্জাতিকভাবে অনুসৃত রীতিতে। বাংলাদেশেও ২০০৫ সালে যে সিএনজি বিধিমালা করা হয়, সেখানে পাঁচ বছর পর পর সিএনজিচালিত যানবাহনের সিলিন্ডার পরীক্ষার বিষয়টি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পরীক্ষায় ত্রুটি ধরা পড়লে নতুন সিলিন্ডার বসাতে হবে। তবে গাড়ির মালিক ও চালকদের উদাসীনতায় বছরের পর বছর ধরে মেয়াদোত্তীর্ণ সিলিন্ডার নিয়েই চলছে প্রায় পৌনে ২ লাখ যানবাহন। মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরও অপরীক্ষিত সিলিন্ডার নিয়ে যেসব গাড়ি চলমান রয়েছে  সেগুলো রয়েছে ঝুঁকিতে। ছোট গাড়ির সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হলে চালক ও ভিতরের যাত্রীদের হতাহত হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। বড় গাড়ির সিলিন্ডার বিস্ফোরণে আশপাশের লোকজনের ক্ষতির আশঙ্কা বেড়ে যায়। গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট দেওয়ার সময় সিলিন্ডার পরীক্ষণের কাগজপত্র আছে কিনা তা দেখার নির্দেশনা থাকলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা পালন করা হয় না। কারণ বিআরটিএতে ফিটনেস সার্টিফিকেট-প্রাপ্তির ক্ষেত্রে উৎকোচ প্রধান যোগ্যতা বলে বিবেচিত হয়, যা ওপেন সিক্রেট। গত দেড় দশকে সারা দেশে ৬২টি গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে এবং এতে বেশ কয়েকজনের প্রাণহানি হয়েছে। জননিরাপত্তার স্বার্থে সিএনজিচালিত যানবাহনের গ্যাস সিলিন্ডার নিয়মিত পরীক্ষা করে দেখার বিষয়টি জরুরি। অপরীক্ষিত যানবাহন যাতে কোনোভাবে রাস্তায় চলার সুযোগ না পায় সেদিকেও কড়া নজর রাখতে হবে।

সর্বশেষ খবর