শনিবার, ১৮ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

ধান চাষিদের বাঁচান

ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করুন

চালের ন্যায্যমূল্য না পেয়ে কাঁদছে কৃষক। দেশের ১৭ কোটি মানুষের জন্য খাদ্য জোগান দেয় যারা তাদের কান্নায় সংবেদনশীল হয়ে উঠেছে আকাশ-বাতাস। চলতি বছর ‘ফণী’ নামের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের মাতম সত্ত্বেও দেশে রেকর্ড পরিমাণ বোরো ধান উৎপাদিত হয়েছে। বাম্পার উৎপাদনের ফলে দেশে ২৫-৩০ লাখ টন চাল উদ্বৃত্ত থাকবে বলে অনুমিত হিসাবে বলা হয়েছে। চলতি বছর প্রতি কেজি চাল উৎপাদনে খরচ পড়েছে ৩৬ টাকা। সরকারি সংগ্রহমূল্যও ৩৬ টাকা ধরা হয়েছে। কিন্তু কৃষকের পক্ষে সরাসরি সরকারের কাছে চাল বিক্রি করা প্রায়ই সম্ভব হয় না। সরকারের পক্ষ থেকে যে ধান-চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তাও পর্যাপ্ত নয়। পাইকারি বাজারে চালের দাম ২৬-২৭ টাকা কেজিতে নেমে যাওয়ায় অস্তিত্বের সংকটে ভুগছে কৃষক। যেসব কৃষকের ধান এখনো কাটা হয়নি তারা ধান কাটার উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছেন। বাজারে এখন সবকিছুই দামি, কেবল ধানের দাম পানির চেয়েও কম। টাঙ্গাইলে ধানের দাম কম হওয়ায় দিশাহারা হয়ে কালিহাতীর এক কৃষক সম্প্রতি তার নিজের পাকা ধান খেতে আগুন দিয়ে প্রতিবাদ করেছেন। পাশের উপজেলা বাসাইলেও দাম না পেয়ে গত সোমবার নিজের ধানের খেতে আগুন লাগিয়ে দিয়ে কাঁদতে থাকেন হতাশ কৃষক। তাদের অভিযোগ, সরকার ধানের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে ২৩ টাকা। তার অর্ধেক দামও পাচ্ছে না কৃষক। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, খাদ্যমন্ত্রী কৃষকের মর্মবেদনা উপলব্ধি না করে ধান খেতে আগুন লাগানোর মধ্যে নাটক দেখেছেন। তার কা-জ্ঞানহীন বক্তব্য সরকারি দলেও ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। মন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদ এসেছে দায়িত্বশীল পদে অধিষ্ঠিতদের পক্ষ থেকেও। ধান উৎপাদনে লাভ না থাকায় কৃষক ধান চাষে দিন দিন নিরুৎসাহিত হয়ে পড়ছেন। ধান চাষিদের উৎসাহ ধরে রাখার ক্ষেত্রে সরকার এযাবৎ জুতসই কৌশল বের করতে পারেনি। দেশে ২৫-৩০ লাখ টন চাল উদ্বৃত্ত থাকা সত্ত্বেও বিদেশ থেকে চাল আমদানি অপ্রত্যাশিত। মনে হচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগীদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে সরকার। আমরা আশা করব, কৃষকের হতাশা নিরসনে সরকার এখনই এগিয়ে আসবে। চাল আমদানি বন্ধে নেওয়া হবে কার্যকর উদ্যোগ। কৃষক যাতে উৎপাদিত ধানের ন্যায্যমূল্য পায় এমন টেকসই ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে- আমরা এমনটিও দেখতে চাই।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর