সোমবার, ২০ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

বিমান আর লুটপাট

রাহুমুক্তির পথ খুঁজতে হবে

বিমান আর লুটপাট দুটি সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে কিছু দুর্নীতিবাজ কর্তাব্যক্তির কারণে। দুর্নীতি ও অসততার কুশীলবদের কারণেই সামনে এগোনোর বদলে কল্পকথার ভূতের পেছনে হাঁটা এ রাষ্ট্রীয় সংস্থার নিয়তির লিখনে পরিণত হয়েছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের জন্য বিড়ম্বনা ডেকে আনছে উড়োজাহাজ ভাড়া করে ফ্লাইট চালানোর আত্মঘাতী ঘটনা। এ জন্য বারবার তিক্ত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসকে। লিজে আনা বিমানে দিনের পর দিন লোকসান গুনতে হলেও বিমানের কর্তাব্যক্তিদের কসরত বন্ধ হয়নি। প্রতিনিয়তই এ জন্য খেসারত দিতে হচ্ছে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান সংস্থাকে। বিমানকে খাদের কিনারে নিয়ে গেছে উড়োজাহাজ ক্রয় ও রক্ষণাবেক্ষণে দুর্নীতি, টিকিট বিক্রির ক্ষেত্রে কারসাজি, কার্গো শাখায় লুটপাট, শিডিউল বিপর্যয়, অপ্রয়োজনীয় জনবল, লাভজনক রুটে ফ্লাইট কম চালানোসহ নানা অব্যবস্থাপনা। এসব কারণে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী সংস্থাটি এখন মূলধন সংকটে পড়েছে। তবু অজ্ঞাত কারণে আবারও লিজের পথে হাঁটছে বিমান। ২০১৪ সালে পাঁচ বছরের জন্য মিসরের ইজিপ্ট এয়ার থেকে দুটি উড়োজাহাজ ভাড়ায় আনার খেসারত এখনো গুনতে হচ্ছে বিমানকে। চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় বহরে না থাকলেও উড়োজাহাজ ফেরত দিতে না পারায় প্রতি মাসে ভাড়াবাবদ গুনতে হচ্ছে প্রায় ১০ কোটি টাকা। চুক্তি অনুযায়ী ওই দুটি বিমান লিজদাতা প্রতিষ্ঠানকে ফেরত দিতে হবে চালু অবস্থায়। বিমান দুটি মেরামতের জন্য ভিয়েতনামে পাঠানো হলেও সেখানেও পড়ে আছে বছরখানিক ধরে। ইতিমধ্যে শত কোটি টাকারও বেশি শোধ করতে হয়েছে ভাড়া বাবদ। নতুন বিমান ক্রয়ের চেয়ে ভাড়া করে এনে ফ্লাইট চালাতে কর্তাব্যক্তিদের উৎসাহের শেষ নেই। কারণ এর ফলে বিশাল অঙ্কের কমিশন আসে কর্তাব্যক্তিদের পকেটে এমন একটি অভিযোগ ওপেন সিক্রেট। সম্প্রতি বিমান কুয়েত থেকে একটা বিমান ভাড়া এনেছে যার জন্য প্রতি মাসে গুনতে হবে দুই লাখ ৬৭ হাজার ডলার অর্থাৎ প্রায় আড়াই কোটি টাকা। বহরে থাকা উড়োজাহাজের পরিপূর্ণ সদ্ব্যবহার না করে লিজ নিয়ে অর্থের অপচয় করা কর্তাব্যক্তিদের অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। অব্যবস্থাপনার কারণে ধুকছে রাষ্ট্রীয় এই সংস্থা। যা থেকে মুক্তির প্রকৃষ্ট পথ থিপ অব বাগদাদ-এর সমগোত্রীদের কাছ থেকে বিমানকে মুক্ত করা। এ সংস্থার বেসরকারিকরণ রাহু মুক্তির পথ দেখাতে পারে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর